বার্তা সংস্থা ইকনা'র রিপোর্ট: বিভিন্ন ঐতিহাসিক বর্ণনায় এসেছে, একবার একজন দরিদ্র ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করে সেখানকার মানুষের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করে। কেউ তাকে কিছু দেয়নি। সে সময় নামাজের রুকু অবস্থায় থাকা সত্ত্বেও আমিরুল মুমিনিন হযরত আলী (আ.) ওই দরিদ্র ব্যক্তিকে নিজের হাতের আংটি খুলে দেন। তাঁর এই দানের প্রশংসা করার জন্যই এ আয়াত নাজেল হয়।
বিশিষ্ট সাহাবি হযরত আম্মার ইয়াসির (রা.) বলেছেন: এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে এ আয়াত নাজেল হওয়ার পর বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.) বলেছেন, "মান কুনতু মাওলাহু ফাআলী মাওলাহু" অর্থাৎ "আমি যাদের অভিভাবক (মাওলা) বা নেতা আলীও তাদের নেতা"। এটা স্পষ্ট এ আয়াতে ওয়ালি বলতে বেলায়াত বা নেতৃত্বকে বোঝানো হয়েছে। কারণ, শুধু বন্ধুত্ব বা ভালবাসা বোঝানো হলে তা তো সব মুসলমানদের জন্যই প্রযোজ্য হওয়া উচিত, কেবল তাদের জন্যই কেন প্রযোজ্য হবে যারা নামাজ কায়েম করে ও রুকু অবস্থায় দান করে? অনেকে বলেন, এখানে আল্লাজিনা আমানু বলতে একদল মানুষকে বোঝানো হয়েছে। কিন্তু আসলে সম্মানার্থে আরবী ভাষায় বহু বচন ব্যবহারের রীতি রয়েছে। কুরআনের অন্যত্রও দেখা যায় কোনো শব্দের বাহ্যিক রূপ বহু বচনে আসা সত্ত্বেও বাস্তবে কেবল এক ব্যক্তিকে বোঝানোর জন্য ওই শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে।
সূরা নিসার ৫৯ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে:
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا أَطِيعُوا اللَّهَ وَأَطِيعُوا الرَّسُولَ وَأُولِي الْأَمْرِ مِنْكُمْ فَإِنْ تَنَازَعْتُمْ فِي شَيْءٍ فَرُدُّوهُ إِلَى اللَّهِ وَالرَّسُولِ إِنْ كُنْتُمْ تُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآَخِرِ ذَلِكَ خَيْرٌ وَأَحْسَنُ تَأْوِيلًا (59)"
হে বিশ্বাসীগণ,যদি তোমরা আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস কর তবে,তোমরা আল্লাহর আনুগত্য কর এবং রাসূলের অনুগত হও, আর তোমাদের মধ্য থেকে ঐসব নেতৃবৃন্দের যারা আদেশ দেয় কোন বিষয়ে তোমাদের মধ্যে মতভেদ ঘটলে সে ব্যাপারে আল্লাহর কোরআন ও রাসূলের শরণাপন্ন হও৷ এটাই কল্যাণকর ও শ্রেষ্ঠ পরিণতি৷
ঐতিহাসিক বর্ণনা অনুযায়ী মহানবী (সা.) তাবুক যুদ্ধে রওনা হবার সময় আলী ইবনে আবু তালেব (আ.) কে মদিনায় নিজের স্থলাভিষিক্ত করে যান৷ মহানবী (সা.) তাঁকে বলেন, "হে আলী তোমার সঙ্গে আমার সম্পর্ক মুসার সাথে হারুনের সম্পর্কের মত, যদিও আমার পরে কোন নবী আসবে না।
এ সময় ওই আয়াত নাজিল হয় এবং হযরত আলী (আ.)'র অনুসরণ করতে মুসলমানদের নির্দেশ দেয়া হয়৷ উলিল আমর বা নির্দেশদাতা নেতাকে চিহ্নিত করা এবং তাঁর বৈশিষ্ট্য নিয়ে যাতে মতভেদ দেখা না দেয়, সেজন্যে আয়াতের পরবর্তী অংশে আল্লাহ বলেছেন আল্লাহর গ্রন্থ কুরআনে এবং রাসূলের হাদীসে যা এসেছে তার শরণাপন্ন হও৷ শাবিস্তান