IQNA

ইহুদিবাদীদের অগ্নি সংযোগে আজও জ্বলছে প্রথম কিবলা + ছবি

15:58 - August 22, 2016
সংবাদ: 2601432
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মুসলমানদের প্রথম কেবলা ও তৃতীয় পবিত্র স্থান আল আকসা মসজিদে ১৯৬৯ সালের ২১ আগস্ট অগ্নি সংযোগ করা হয়। অস্ট্রেলিয়ান বংশোদ্ভুদ মাইক রোহান নামে এক কট্টর ইহুদিবাদী আল আকসা মসজিদে আগুন দিয়েছিল।

বার্তা সংস্থা ইকনা: এই ঘটনার মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের অধিকার হরণ এবং ইসলাম ও মুসলমানদের পবিত্র স্থাপনা অবমাননার ক্ষেত্রে ইহুদিবাদীদের অন্যায় আচরণের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। অগ্নি সংযোগের ৪৭ বছর পরও ইহুদিবাদীদের অপরাধযজ্ঞ অব্যাহত রয়েছে।

আল আকসা মসজিদে অগ্নি সংযোগের আগে ইহুদিবাদী ইসরাইল ১৯৬৭ সালে মাত্র ছয় দিনের যুদ্ধে বায়তুল মোকাদ্দাস শহর দখল করেছিল। তখন থেকে আজ পর্যন্ত দখলদার ইসরাইল বিভিন্ন সময়ে ফিলিস্তিনি জনগণের ইন্তিফাদা গণআন্দোলনের সম্মুখীন হয়েছে। আল আকসা মসজিদে আগুন দেয়ার পর ফিলিস্তিনিদেরকে ওই মসজিদে প্রবেশে বাধা দেয়া, মসজিদে প্রবেশের জন্য সময় ভাগ করে দেয়া, বায়তুল মোকাদ্দাস শহরে মুসলমানদের স্থাপনা ধ্বংস করা, মুসলিম জনসংখ্যার কাঠামোয় পরিবর্তন আনার জন্য অবৈধ ইহুদি বসতি নির্মাণ প্রভৃতি অপরাধযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল।

দখলদার ইসরাইল নতুন করে আল আকসা মসজিদে মুসলমানদের স্মৃতি ধ্বংস করার পদক্ষেপ নেয়ার পর তৃতীয় ইন্তিফাদা গণআন্দোলন গড়ে উঠেছে। আল আকসা মসজিদের বিরুদ্ধে ইসরাইলি ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদ জানিয়ে গত বছরের ১ অক্টোবর থেকে বায়তুল মোকাদ্দাস, জর্দান নদীর পশ্চিম তীরসহ বিভিন্ন এলাকায় ফিলিস্তিনিরা প্রতিবাদে ফেটে পড়েছে। আল আকসা মসজিদের বিরুদ্ধে ইসরাইলি ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় আন্দোলনই ফিলিস্তিনিদের কার্যকর অস্ত্র।

মসজিদসহ ইসলাম ও মুসলমানদের বিভিন্ন ঐতিহ্য ধ্বংস করা ইহুদিবাদীদের জন্মগত স্বভাব। মুসলমানদের আঞ্চলিক বিভিন্ন সংস্থা এবং ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা বা ওআইসির মতো জোট থাকার পরও মুসলমানদের বিরুদ্ধে ইসরাইলের ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে। ইসলামী সহযোগিতা সংস্থাকে আগে ইসলামী সম্মেলন সংস্থা বলা হত। ইহুদীবাদীরা আল আকসা মসজিদে অগ্নি সংযোগের পর ১৯৬৯ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর ওআইসি গঠন করা হয়। কিন্তু তারপরও এ জোট ইসরাইলের আগ্রাসন মোকাবেলায় আজ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়েছে। ওআইসি এবং রাজতন্ত্র শাসিত আরব দেশগুলোর নিষ্ক্রিয় ভূমিকার কারণে দখলদার ইসরাইল একের পর এ অঞ্চলে মুসলমানদের ঐতিহ্য ধ্বংস করে চলেছে। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ইসরাইল ১৯৬৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৪৮টির বেশি মসজিদ ধ্বংস করেছে কিংবা অগ্নি সংযোগ করেছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বর্ণবাদী ইসরাইলের মুসলিম বিরোধী কর্মকাণ্ড শুধু ফিলিস্তিন ভূখণ্ডের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য এলাকায়ও তারা মসজিদ ধ্বংস এবং মুসলমানদের ইতিহাস ঐতিহ্য মুছে ফেলার চেষ্টা করছে। এ ছাড়া, বর্তমানে সিরিয়া ও ইয়েমেনসহ অন্যান্য মুসলিম দেশের বিরুদ্ধে যে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড চলছে তার সঙ্গে ইসরাইলের আচরণের মিল পাওয়া যায়। একদিকে দায়েশ সন্ত্রাসীদের হামলায় ইরাক ও সিরিয়ায় মসজিদ ও অন্যান্য ধর্মীয় স্থাপনা ধ্বংস হচ্ছে। অন্যদিকে সৌদি আরব ইয়েমেনে বিমান হামলা চালিয়ে দেশটির সব কিছু মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিচ্ছে। দায়েশ ও সৌদিআরবের নীতির সঙ্গে ইসরাইলের আগ্রাসী নীতির মিল খুঁজে পাওয়া যায়। ওআইসির নীরবতার কারণে আজ একের পর এক ইসরাইল ও তাদের অনুগত রাজতান্ত্রিক সরকার ও দায়েশের মতো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো পর্যায়ক্রমে মুসলিম দেশগুলো ধ্বংস করে চলেছে।

iqna


captcha