IQNA

ইতিহাসের অপবিত্র অধ্যায় ইসরাইলের অবসান ঘটবে : ইরানের সর্বোচ্চ নেতা

17:44 - February 21, 2017
সংবাদ: 2602579
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী বলেছেন, ধৈর্যশীল ও সংগ্রামী ফিলিস্তিনিরা মানবজাতির ইতিহাসের সবচেয়ে মজলুম জাতিতে পরিণত হয়েছে এবং তাদের অশেষ দুঃখ-দুর্দশা প্রত্যেক মুক্তিকামী, সত্যান্বেষী ও ন্যায়বিচারকামী মানুষকে যন্ত্রণা দিচ্ছে।
ইতিহাসের অপবিত্র অধ্যায় ইসরাইলের অবসান ঘটবে : ইরানের সর্বোচ্চ নেতা
বার্তা সংস্থা ইকনা: তিনি আজ সকালে (মঙ্গলবার) তেহরানে 'ফিলিস্তিনের ইন্তিফাদা বা গণ-সংগ্রামের প্রতি সমর্থন' শীর্ষক ষষ্ঠ আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এই মন্তব্য করেছেন।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেছেন, ফিলিস্তিনে সারা বিশ্ব থেকে কিছু লোককে এনে সেখানে জবরদখলের মাধ্যমে একটি অবৈধ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ও সেখানকার স্থানীয় জাতিকে পুরোপুরি বিতাড়িত করার আন্তর্জাতিক চক্রান্তটি ইতিহাসের অন্যতম অপবিত্র অধ্যায় যার অবসান ঘটবে মহান আল্লাহর ইচ্ছায় ও তাঁর সহায়তায়। কারণ, অতীতেও  মহান আল্লাহর ইচ্ছায় ও সহায়তায় অবসান ঘটেছে এ জাতীয় অপবিত্র অধ্যায়ের।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেছেন, ‘ফিলিস্তিনিদের ওপর নৃশংস দমন-অভিযান, ব্যাপক হারে তাদের বন্দি করা, হত্যাযজ্ঞ, লুণ্ঠন ও এই জাতির ভূখণ্ডগুলো জবর-দখল করে সেখানে অবৈধ উপশহর নির্মাণ, পবিত্র শহর কুদস ও মসজিদুল আকসাসহ ইসলামের এবং খ্রিস্ট ধর্মের নানা পবিত্র স্থানের পরিচিতি বদলে দেয়ার চেষ্টাসহ সেখানে নানা অপরাধ চালিয়ে যাচ্ছে ইহুদিবাদী শাসকগোষ্ঠী। আর এইসব অপরাধ ঘটছে মার্কিন ও কয়েকটি পশ্চিমা সরকারের সর্বাত্মক মদদে এবং দুঃখজনকভাবে বিশ্ব এসব অপরাধের ব্যাপারে উপযুক্ত প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে না।’

আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী আরও বলেছেন, ‘তেহরানের এই সম্মেলন সবচেয়ে কঠিন আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, কারণ আন্তর্জাতিক চক্রান্তের মোকাবেলায় লড়াইরত ফিলিস্তিনি জাতির সব সময়ের সাহায্যদাতা আমাদের এই অঞ্চল এখন নানা সংকট ও অশান্তির শিকার হয়েছে’।  

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা এ প্রসঙ্গে আরও বলেছেন, কয়েকটি মুসলিম দেশের চলমান সংকটের কারণে ফিলিস্তিন ও পবিত্র কুদসকে মুক্ত করার সংগ্রামের প্রতি সমর্থন ম্লান হয়ে পড়েছে। আর এইসব সংকটের ফলে লাভবান হচ্ছে সেইসব শক্তি যারা এ অঞ্চলে ইসরাইলকে জন্ম দিয়েছে এবং এইসব সংকটকে দীর্ঘকাল ধরে জিইয়ে রেখে তারা এ অঞ্চলের শান্তি ও অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আরও বলেন, মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে শত্রুদের মদদে এবং উদাসীনতার কারণে সৃষ্ট কৃত্রিম ও স্বাভাবিক কিছু মতবিরোধ থাকা সত্ত্বেও ফিলিস্তিন প্রসঙ্গটি মুসলিম বিশ্বের ঐক্যের কেন্দ্রবিন্দু হওয়া উচিত। মুসলিম বিশ্ব ছাড়াও ন্যায়বিচারকামী ও সত্যান্বেষী সব মহলের পক্ষ থেকেই ফিলিস্তিন ইস্যুকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া উচিত বলে তিনি মন্তব্য করেছেন।

আজ সকালে তেহরানে  ফিলিস্তিনি ইন্তিফাদাকে সমর্থন দেয়া বিষয়ক ষষ্ঠ আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু হয়। দুই দিনের এই সম্মেলনে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন ইরানের জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. আলী লারিজানি। ইসলামী ইরানের সংবিধানে বিশ্বের মজলুম ও বঞ্চিত জাতিগুলোকে সহায়তা দেয়ার কথা বলা হয়েছে বলে তিনি স্মরণ করিয়ে দেন।  

এবারের সম্মেলনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে অন্তত ৮০টি প্রতিনিধিদল অংশ নিয়েছে। সব মিলিয়ে ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন জানানোর জন্য তেহরান সম্মেলনে ৭০০ বিদেশি অতিথি উপস্থিত হন। সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন ফিলিস্তিনপন্থি বহু সংগঠনের প্রতিনিধি।
iqna

captcha