IQNA

ব্রিটিশ ও বিশ্ব-জনমতকে উপেক্ষা করে ইসরাইলকে সর্বাত্মক মদদ দিচ্ছে লন্ডন সরকার

ইসরাইলের নজিরবিহীন দাসত্বপনায় ব্রিটেন: হামাসকে সন্ত্রাসী বলে ঘোষণা!

0:02 - November 21, 2021
সংবাদ: 3471008
তেহরান (ইকনা): ফিলিস্তিনে অবৈধ রাষ্ট্র ইহুদিবাদী ইসরাইল প্রতিষ্ঠার সবচেয়ে বড় হোতা ও মদদদাতা সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটেন আবারও ফিলিস্তিনের বিরুদ্ধে তার অমানবিক নীতির ধারা তীব্রতর করেছে।
আর এরই অংশ হিসেবে লন্ডন ফিলিস্তিনি ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসকে সন্ত্রাসী দল বলে ঘোষণা করে ব্রিটেনে এই দলের যে কোনো ধরনের তৎপরতাকে নিষিদ্ধ করেছে।
 
ব্রিটেনের ভারতীয় বংশোদ্ভূত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পৃতি প্যাটেল গতকাল (শুক্রবার) বলেছেন, হামাস ব্যাপক অস্ত্রসহ উল্লেখযোগ্য মাত্রায় সন্ত্রাস-ক্ষমতার অধিকারী! তিনি হামাসকে সন্ত্রাসীদের প্রশিক্ষণ দেয়ারও নানা ব্যবস্থার অধিকারী হিসেবে দাবি করে বলেন, এ কারণেই আজ হামাসকে ব্রিটেনে পুরোপুরি নিষিদ্ধ করার পদক্ষেপ নিয়েছি। দখলদার ইসরাইল ব্রিটেনের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে।
 
সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ধূর্ততার জন্য বুড়ো শয়তান হিসেবে কুখ্যাত ব্রিটেনের এই পদক্ষেপে মোটেই বিস্মিত নয় পর্যবেক্ষক ও বিশ্লেষক-মহল। বিশেষ করে ব্রিটেনের  ক্ষমতাসীন রক্ষণশীল পার্টি খুব বেশি ইসরাইলপন্থী হিসেবে কুখ্যাত। এই দলটির নেতৃত্বাধীন ব্রিটিশ সরকার ফিলিস্তিনে ইসরাইলি অপরাধযজ্ঞ   অব্যাহত থাকা সত্ত্বেও তেলআবিবকে সর্বাত্মক মদদ দেয়ার নীতি বজায় রেখেছে।
 
গাজার সর্বশেষ যুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলি গণহত্যার ব্যাপারেও তেমন কোনো প্রতিবাদ জানায়নি বরিস জনসনের নেতৃত্বাধীন ব্রিটিশ সরকার। ইসরাইলের কাছে অস্ত্র বিক্রিও অব্যাহত রেখেছে এই সরকার। গাজায় ইসরাইলের পৈশাচিক হত্যাযজ্ঞ সত্ত্বেও ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী গত সেপ্টেম্বর মাসে বলেছিলেন, তার সরকার ইসরাইলের নিরাপত্তার প্রতি সমর্থন জানাতে দৃঢ়-সংকল্প!
 
ব্রিটেন হামাসকে সন্ত্রাসী বলে ঘোষণা দিয়েছে যদিও এই সংগ্রামী দল কখনও ব্রিটেনের বা ইউরোপের কোনো দেশের বিরুদ্ধে কখনও কোনো সহিংস পদক্ষেপ নেয়নি ও এমনকি এসব দেশের জন্য কখনও সামরিক হুমকি হয়েও দেখা দেয়নি!।  
 
হামাসের সন্ত্রাস চালানোর ক্ষমতা ও সন্ত্রাসীদের প্রশিক্ষণ দেয়ার সক্ষমতা রয়েছে বলে ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যে অপযুক্তি দেখানোর চেষ্টা করেছেন প্রতারণামূলক পুরনো অজুহাত মাত্র। কথায় বলে শঠের ছলের অভাব হয় না।
 
হামাস তার সামরিক শক্তিকে কেবল ইসরাইলের অমানবিক পদক্ষেপ,  আগ্রাসন ও অবৈধ দখলদারিত্বের বিরুদ্ধেই ব্যবহার করছে। গত মে মাসেও ইসরাইল নির্বিচার বোমা হামলা চালিয়ে বহু শিশু ও নারীসহ শত শত ফিলিস্তিনিকে শহীদ এবং আরও বেশি সংখ্যককে আহত করেছে। এ ছাড়াও ইসরাইল ফিলিস্তিনিদের জমি দখল ও বাড়ি ধ্বংস করাও অব্যাহত রেখেছে। এইসব সন্ত্রাসী তৎপরতার দায় ব্রিটেন যেন ফিলিস্তিনিদের ঘাড়েই চাপাতে চাইছে!
 
ব্রিটেন মাঝে মধ্যে ১৯৬৭ সালে অধিকৃত ফিলিস্তিনে ইহুদি বসতি নির্মাণের মৌখিক বিরোধিতা করে আসলেও গত মে মাসের ১২ দিনের যুদ্ধসহ গাজার বিরুদ্ধে প্রতিটি ইসরাইলি আগ্রাসনেই ইসরাইলি শাসকগোষ্ঠীকে সমর্থন জানিয়েছে। ব্রিটিশ ও বিশ্ব-জনমতকে উপেক্ষা করে ইসরাইলকে অর্থনৈতিক ও সামরিক সহায়তা দেয়াও অব্যাহত রেখেছে লন্ডন। চলতি বছরের ১২ দিনের যুদ্ধের জন্যও লন্ডন হামাসসহ ফিলিস্তিনের সংগ্রামী দলগুলোকেও দোষী বলে অপবাদ দিয়েছে। ব্রিটেনের বিক্রি করা অস্ত্র ও সাজ-সরঞ্জাম দিয়ে ইসরাইল ফিলিস্তিনিদের ওপর নৃশংস হত্যাযজ্ঞ অব্যাহত রাখায় এটা স্পষ্ট যে মোনাফেক ব্রিটিশ সরকারের হাতও ফিলিস্তিনিদের রক্তে রঞ্জিত।
 
গত দশকের শুরুর দিকে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্যালফোর ইহুদিদের জন্য ফিলিস্তিনে আবাসভূমি গড়ার ঘোষণা দিয়ে ইসরাইল প্রতিষ্ঠার পথ করে দেয়ার পর একই সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ব্রিটেনের বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জনপ্রিয় ফিলিস্তিনি সংগ্রামী দল হামাসকে সন্ত্রাসী বলে ঘোষণা দিয়েছে।  পার্সটুডে
captcha