IQNA

ফিলিস্তিনি সাহিত্য সংরক্ষণে ব্রাজিলিয়ান নারীর উদ্যোগ

0:03 - September 12, 2022
সংবাদ: 3472444
তেহরান (ইকনা): পাঠ আপনাকে অন্য জগতে নিয়ে যেতে পারে এবং অন্য ভাষার বইগুলো ভিন্নভাবেও আপনাকে রোমাঞ্চিত করতে পারে। মাতৃভাষা ছাড়া অন্য কোনো ভাষায় কিছু পাঠ করলে অভিজ্ঞতাটাও ভিন্ন হয়। আর পাঠককে এই ভিন্ন অভিজ্ঞতা দিতে কাজ করছে ব্রাজিলিয়ান প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ‘তাবলা’। প্রতিষ্ঠানটি মধ্যপ্রাচ্যের সংস্কৃতি বিষয়ক বই, বিশেষত ফিলিস্তিনি সংস্কৃতি ও বিশ্বে তাদের প্রতিধ্বনি নিয়ে লেখা বইগুলো নিয়ে কাজ করে।
তাবলার পরিচালক লরা ডি পেয়ত্র বলেন, ‘আমরা চাই এই সংস্কৃতিকে যথাযথভাবে উপস্থাপন বা পুনঃ উপস্থাপন করতে। মানুষে মানুষে যোগাযোগ, যাতায়াত এবং তাদের ভেতর সাংস্কৃতিক সেতুবন্ধ তৈরি করাই আমাদের উদ্দেশ্য। ’
তিনি আরো বলেন, ব্রাজিলে ফিলিস্তিনি সাহিত্যের প্রতি বিপুল আগ্রহ আছে। ফলে আমি তা পর্তুগিজ ভাষায় অনুবাদের প্রয়োজন অনুভব করেছি। যেমন দক্ষিণ আমেরিকান দেশগুলোতে গাসসান কানাফানির বইয়ের বহু পাঠক আছে। পর্তুগিজ ভাষায় যদিও প্রচুর আরবি শব্দ আছে, তবু ভাষাটি ব্রাজিলের আরব বংশোদ্ভূতদের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ। কেননা পর্তুগিজ ভাষা শেখা বা চর্চা করার পর অনেকের জন্য মাতৃভাষায় কথা বলা কঠিন হয়ে যায়। ফলে আরব ব্রাজিলিয়ানদের জন্য এসব সাহিত্যকর্মের অনুবাদ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা তা তাদের ‘ঘরে ফেরার’ অনুভূতি দেয়। তাবলার সর্বশেষ প্রকাশনাগুলোর একটি ‘গাজা, ল্যান্ড অব পোয়েট্রি’। এই গাজায় জন্মগ্রহণকারী সাত তরুণ কবির কবিতার সংকলন। সংকলনে স্থান পাওয়া ৪২টি কবিতায় অবরুদ্ধ গাজার অন্তরমুখ প্রকাশ দিয়েছে। দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে অবরোধের ফলে সৃষ্ট যে কঠিন ও কষ্টকর বাস্তবতা দেখে আসছি। ব্রাজিলের আরবি ভাষা ও সাহিত্যের বেশ কয়েকজন অধ্যাপক বইটি অনুবাদে সাহায্য করেছেন। যেমন সাউ পাউলো বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি ভাষা ও সাহিত্যের অধ্যাপক মিশেল স্লেইমান।
 
ডি পেয়ত্র বলেন, এটা শুধু বইয়ের চেয়েও বেশি কিছু। এটি গাজার সমৃদ্ধ সংস্কৃতি ও সাহিত্যিক ঐতিহ্য তুলে ধরার একটি যৌথ উদ্যোগ। এটি একটি বিরল বই। যা উপমা-উৎপক্ষায় পরিপূর্ণ। বইটি যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় জীবনের সজীবতার সাক্ষ্য দেয়। বইয়ের লেখকরা নিজেদের মাতৃভূমিতেই যেন নির্বাসিত এবং এমন ভূমিতে অবরুদ্ধ, যার একদিকে সমুদ্র, অন্যদিকে বৈরী দুই সামীন্ত। তার পরও কবিরা জীবনের ব্যাপারে আশাবাদী। এই বইয়ের লেখক সম্মানী ‘তামির ইনস্টিটিউট ফর কমিউনিটি এডুকেশন’-এর মাধ্যমে গাজায় যাবে।
 
কানাফানি তাঁর ‘দ্য লিটল জেলিফিশ’ এভাবে শুরু করেছেন, আপনার প্রতি আমার প্রতিশ্রুতি রক্ষার জন্য আমি আপনাকে একটি ছোট জেলিফিশের গল্প লিখব। যেটি আপনার মতো করেই তা বেড়ে উঠেছে। তাবলা ৮ জুলাই লেখকের শাহাদাতের ৫০তম বার্ষিক উপলক্ষে বইটির পর্তুগিজ অনুবাদ প্রকাশ করেছে। ডি পেয়ত্র বলেন, কানাফানির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতেই বইটি প্রকাশ করা হয়েছে। তিনি এমন মহান সাহিত্যিক, যিনি এখনো ফিলিস্তিন ও ফিলিস্তিনি জনগণের পক্ষে জোরাল কণ্ঠস্বর হয়ে আছেন। তাঁর লেখা সরল, সহজবোধ্য ও সংক্ষিপ্ত। তাঁর সাহিত্য অনুপ্রেরণাদায়ক। তিনি ছিলেন একজন মহান লেখক ও কণ্ঠস্বর, যা কখনো স্তব্ধ হবে না। আমরা ফিলিস্তিনের সব মহান সাহিত্যকর্ম সংরক্ষণে কাজ করছি।
 
সূত্র : মিডলইস্ট মনিটর
captcha