সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, ইরান তার ইউরেনিয়াম সাপ্লাই চেইনকে বিদেশী নির্ভরতা থেকে স্বয়ংসম্পূর্ণতায় স্থানান্তরিত করার চেষ্টা করেছে। এই উন্নয়ন কেবল পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়ায় করা হয় নি বরং পারমাণবিক জ্বালানি চক্রকে স্থিতিশীল করার জন্য দেশের দীর্ঘমেয়াদী কৌশলেরও অংশ এটি। পার্সটুডে-র এই নিবন্ধে ইরান কীভাবে ইউরেনিয়াম সংগ্রহ করে সেই প্রশ্নের উত্তর মিলবে।
বিপ্লব বিজয়ের আগে
ইসলামী বিপ্লব বিজয়ের আগে ইরান ফরাসি কোম্পানি ইউরোডিফে (Eurodif) অংশগ্রহণ এবং যৌথ উদ্যোগ সোফিডিফে(Sofidif ) বিনিয়োগের মাধ্যমে চেষ্টা করেছিল তাদের ইউরেনিয়াম চাহিদার একটি অংশ আমদানি করার মাধ্যমে নিশ্চিত করতে। উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ সত্ত্বেও, বিপ্লবের পরে ফ্রান্স ইরানে ইউরেনিয়াম সরবরাহ করতে অস্বীকৃতি জানায়। ফ্রান্সের ওই পদক্ষেপের ফলে ইরান শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের জন্য ইউরেনিয়াম সম্পদের অভ্যন্তরীণ উন্নয়নের ওপর মনোযোগ বৃদ্ধি করে।
অভ্যন্তরীণ সক্ষমতা
ইরানের পারমাণবিক শক্তি সংস্থার তথ্য এবং ভূতাত্ত্বিক গবেষণা অনুসারে ইয়াজদ, হরমুজগান, কেরমান, খোরাসান রাজাভি এবং দক্ষিণ খোরাসান, পূর্ব ও পশ্চিম আজারবাইজান, ফারস এবং লোরেস্তানের মতো প্রদেশে ইরানের প্রাকৃতিক ইউরেনিয়ামের উল্লেখযোগ্য মজুদ রয়েছে। ইয়াজদের সাগান্দ ও খাশুমি এবং বন্দর আব্বাসের গাচিনের মতো সক্রিয় খনিগুলোকে ইরানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইউরেনিয়াম খনির কেন্দ্র হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
অবকাঠামো উন্নয়ন
ইরানের পারমাণবিক শক্তি সংস্থার মুখপাত্র বেহরুজ কামালভান্দির আনুষ্ঠানিক বিবৃতি অনুসারে, ইরানে ইয়েলো-কেক উৎপাদন ক্ষমতা প্রতি বছর প্রায় ৪০ টন। এই পরিমাণ ইয়েলো-কেক বুশেহর বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং গবেষণা চুল্লির জ্বালানি সরবরাহের জন্য যথেষ্ট। তবে, ইরান ২০২২ সাল থেকে ১২টি নতুন খনিতে খননকাজ শুরু করেছে এবং বার্ষিক উৎপাদন ৭১ টন করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।
স্বয়ংসম্পূর্ণতা
ইউরেনিয়াম নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে স্বয়ংসম্পূর্ণতার দিকে ইরানের পদক্ষেপ কেবল আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়া নয় বরং পারমাণবিক জ্বালানি চক্রকে স্থিতিশীল করার জন্য দীর্ঘমেয়াদী কৌশলেরও অংশ। এই প্রক্রিয়া ইরানকে বিদেশী সরবরাহকারীদের ওপর নির্ভরতা ছাড়াই তার পারমাণবিক কর্মসূচি এগিয়ে নেওয়ার অবস্থানে নিয়ে যাবে। ইরান সর্বদা পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের ওপর জোর দিয়েছে।#
পার্সটুডে