IQNA

ইসরায়েলি সামরিক নীতির উপর জায়নিস্ট রাব্বিদের ফতোয়ার প্রভাব

11:13 - September 14, 2025
সংবাদ: 3478063
ইকনা- অধিকৃত ফিলিস্তিনে চরমপন্থী ইহুদি রাব্বিদের ভুয়া ফতোয়া ও ব্যাখ্যা সরাসরি ইসরাইলের সামরিক নীতিকে প্রভাবিত করছে এবং আগ্রাসী যুদ্ধ, পূর্বসতর্ক হামলা ও নৃশংসতাকে ধর্মীয় রঙ দিয়ে বৈধতা দেওয়ার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

আলি মারুফি আরানি, ইহুদিবাদ ও জায়নিবাদ গবেষক, তার এক প্রতিবেদনে (যখন রাব্বিদের দোয়া ও ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র একসাথে আঘাত হানে) উল্লেখ করেছেন যে যুদ্ধবিষয়ক ফতোয়া ইসরাইলি সামরিক সিদ্ধান্তে সরাসরি প্রভাব ফেলছে এবং নৃশংসতা ও পূর্বসতর্ক হামলাকে বৈধতা দেওয়ার হাতিয়ার হয়ে উঠেছে।

১. ধর্মীয় ছাপে যুদ্ধের বৈধতা
তালমুদীয় ব্যাখ্যায় বলা হয়, পূর্বসতর্ক যুদ্ধ, হত্যাযজ্ঞ ও নৃশংসতা ইহুদিদের প্রাণরক্ষার জন্য ধর্মীয় কর্তব্য। রাব্বি শ্লোমো গোরেন ও শমুয়েল এলিয়াহু এমনকি সৈন্যদের টিকে থাকার স্বার্থে নিষিদ্ধ খাদ্য (যেমন শূকরের মাংস) খাওয়াকেও অনুমোদন করেছেন।

২. শনিবারেও যুদ্ধ বৈধ
যেখানে শাবাত (শনিবার) দিনে বহু কাজ নিষিদ্ধ, সেখানে রাব্বিদের মতে, ইহুদিদের নিরাপত্তা বিপন্ন হলে ওই দিনেও যুদ্ধ বৈধ।

৩. নারীদের ভূমিকা
তোরাহ যুদ্ধকে জাতীয় কর্তব্য বললেও নারীদের অংশগ্রহণ সাধারণত পেছনের কাজে সীমাবদ্ধ। কিছু ব্যাখ্যায় অস্ত্র বহন নারীদের জন্য ধর্মীয় পোশাকবিধি লঙ্ঘন বলে ধরা হয়।

৪. যুদ্ধ থেকে বিমুখতা = ধর্মত্যাগ
তালমুদে যুদ্ধ থেকে বিমুখতা জাতীয় বিশ্বাসঘাতকতা ও ধর্মত্যাগ হিসেবে গণ্য। এই দৃষ্টিভঙ্গি আজও ধর্মীয়-জাতীয়তাবাদী রাব্বিদের বক্তব্যে প্রতিফলিত।

৫. ব্নি ব্রাকের অলৌকিকভ্রান্তি ভেঙে পড়া
রাব্বিরা দাবি করেছিলেন যে বহু রাব্বির উপস্থিতির কারণে পবিত্র ব্নি ব্রাক শহর কখনও শত্রুর আক্রমণের শিকার হবে না। কিন্তু ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র এই ধারণা ভেঙে দেয়। এরপরও রাব্বিরা দাবি করেন যে তাদের দোয়া নাকি ক্ষেপণাস্ত্রকে বিস্ফোরণ থেকে রক্ষা করেছে! প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এভাবে তারা প্রায় পাঁচ হাজার ইহুদিকে শহরে টেনে এনে ভাড়া, খাদ্য, চিকিৎসা ও নানান নৈবেদ্যের নামে বিপুল অর্থ সংগ্রহ করেছিল। ইসরাইলি দৈনিক হাআরেত্‌জও স্বীকার করেছে যে ইরানি হামলা এই ভ্রান্ত ধারণা ভেঙে দেয়।

৬. অতিপ্রাকৃত শক্তি ও迷信
কিছু রাব্বি দাবি করেন, যুদ্ধকালে জিনদের সহায়তা নেওয়া হয়। অথচ কোরআনের সূরা বাকারা (আয়াত ১০২) ইঙ্গিত দেয়, অতীতে ইসরাইলিদের একাংশ শয়তানি শক্তির অনুসরণ করেছিল। ধর্মীয় গবেষকদের মতে, এ ধরনের ব্যাখ্যা কেবল ভয় ও বিভ্রান্তি ছড়ায়।

উপসংহার

প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করে

  • যুদ্ধ, আগ্রাসন ও নৃশংসতা ধর্মীয় দায়িত্ব হিসেবে বৈধতা পাচ্ছে।
  • শাবাতেও যুদ্ধ বৈধ ঘোষণা করা হচ্ছে।
  • নারীরা মূলত সহায়ক কাজে সীমাবদ্ধ।
  • যুদ্ধ থেকে বিমুখতা ধর্মত্যাগ হিসেবে গণ্য।
  • ব্নি ব্রাক শহরের অলৌকিক সুরক্ষাভেঙে গেছে ইরানি হামলায়।
  • রাব্বিদের দোয়া ও অলৌকিক প্রতিরক্ষা কেবল অনুসারী টানা ও অর্থ সংগ্রহের ফাঁদে পরিণত হয়েছে।

সূত্র:
১- হাআরেত্‌জ, তেলআবিব, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
২- সফর আফারিনেশইহুদিবাদ সম্পর্কিত গ্রন্থ
৩- হুজ্জাতুল ইসলাম বাহাউদ্দিন কাহেরমানিনেজাদ, সাক্ষাৎকার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪

4303547

captcha