
ট্রাম্প প্রশাসনের এই আচরণে প্রশ্ন উঠেছে অস্তিত্বশীল নিরাপত্তা মোকাবিলার চেয়ে কি এখানে বড় লক্ষ্য কাজ করছে: ইরানের প্রভাব মোকাবিলা করা?
বৈঠকের পর ওয়াশিংটন থেকে যে বার্তাটি গিয়ে পৌঁছল, তাতে স্পষ্ট, যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়া-যুক্ত সম্পর্ককে নতুনভাবে সাজাতে যাচ্ছে। বিভিন্ন প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ট্রাম্প প্রশাসন সিরিয়ার ওপর থেকে কিছু নিষেধাজ্ঞা শিথিল করেছে এবং জোলানির ওপর থেকে সন্ত্রাসী তকমা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হয়েছে, যা দু’দেশের আবারো কূটনৈতিক সংযোগ তৈরির পথ প্রশস্ত করেছে। এই পরিবর্তনকে অনেকে বাস্তব পক্ষের কূটনীতিক হিসেবেই দেখছেন।
তবে ন্যূনতম কূটনৈতিক হিসাব ছাড়াও এক বড় জ্যামিতিক কৌশল দেখা যায়। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলছেন সিরিয়াকে যুক্তরাষ্ট্রের কব্জায় এনে সেখানে পশ্চিমা সুবিধা প্রতিষ্ঠা করলেই ইরানের প্রভাব সীমিত করা সম্ভব হবে।
সিরিয়ার ভূরাজনীতিক অবস্থান ইরানের জন্য মাইলস্টোন; তাই জোলানির সঙ্গে হাত মিলিয়ে তেহরানকে কৌশলগতভাবে বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এসব মন্তব্য আসছে পলিটিক্যাল-অ্যানালাইসিস কেন্দ্র এবং আন্তর্জাতিক নীতি বিশ্লেষকদের কাছ থেকেই।
যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক এবং কূটনৈতিক উপস্থিতি বাড়ানোর রিপোর্টও প্রকাশ হয়েছে; এমনকি দামাস্কের কিছু বিমানঘাঁটিতে মার্কিন উপস্থিতি স্থাপনের সম্ভাবনার খবরও সামনে এসেছে, যা ইসরাইল-সিরিয়া নিরাপত্তা বন্দোবস্ত চালাতে সহায়ক হতে পারে। এই ধরনের পদক্ষেপ ইরানের অঞ্চলে প্রভাব কমানোর লক্ষ্যকে বাস্তবে রূপ দিতে বাধ্য করবে।
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট জোলানির সমর্থকদের দলে এটিকে জাতীয় পুনর্গঠনের সুযোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে, অর্থনৈতিক সঙ্কট থেকে বেরিয়ে আসার হাতছানি এবং আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি তাদের কাছে গুরুত্ব বহন করছে।
কিন্তু প্রতিপক্ষরা মনে করছে, স্বীকৃতির লোভে সিরিয়ার সার্বভৌমত্ব ও নীতি-স্বাধীনতা থেকেই ক্ষতি হতে পারে। বিশেষত যারা ইরানের সঙ্গে ঐতিহ্যগত রাজনৈতিক ও সামরিক যোগাযোগ রেখেছিল, তাদের কাছে এই ঘনিষ্ঠতা নতুন অনিশ্চয়তার কারণ।# পার্সটুডে