IQNA

চীনা মুসলিম অধিকারের লঙ্ঘনে বিন সালমানের নিরবচ্ছিন্ন সমর্থন

20:36 - February 24, 2019
সংবাদ: 2608003
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ জিনজিয়াংয়ে মুসলিম সম্প্রদায় উইগুরকে টার্গেট করে বেইজিংয়ের কঠোর দমন-পীড়ন তুরস্ক-যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্বে সমালোচিত হয়ে এলেও যেন এই নিপীড়নের পক্ষেই সাফাই গাইছে সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স বা যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান।

বার্তা সংস্থা ইকনা: সৌদি আরবের বাদশাহীর এই প্রথম উত্তরাধিকারী কথিত ‘সন্ত্রাস দমন’ ও ‘উগ্রবাদ ঠেকাতে’ চীনের কঠোর দমননীতির সাফাই গেয়ে বলেছে, জাতীয় নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের স্বার্থে ‘সন্ত্রাসবিরোধী’ ও ‘উগ্রবাদ প্রতিহত করতে’ পদক্ষেপ বাস্তবায়নের অধিকার বেইজিংয়ের রয়েছে।

চীন সফররত বিন সালমান স্বাগতিক দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে গত শুক্রবার (২২ ফেব্রুয়ারি) এক বৈঠকে তাদের দমননীতির প্রতি সমর্থন জানিয়ে এমন কথা বলেছে। সালামান আরও বলেছে, নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চীনের অধিকারকে সৌদি আরব সবসময় সম্মান জানিয়েছে এবং সমর্থন করেছে।

চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বিন সালমানের এমন ‘অবস্থান’ জানার পর সমালোচনার ঝড় উঠেছে।

সাংবাদিক জামাল খাসোগির বর্বর হত্যাকাণ্ডের পর পশ্চিমাদের কঠোর সমালোচনার মুখে অবস্থান করছে সৌদি যুবরাজ। এখন তাই নতুন মিত্র গড়ার কাজে নেমেছে সালামান। এরই অংশ হিসেবে তিনি প্রথমে পাকিস্তান ও পরে ভারত সফর করে। এরপর চীনে গিয়েছে।

সফরে গিয়ে নিপীড়িত গোষ্ঠী উইগুরের অধিকারের পক্ষে কোনো কথা না বলে বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর ‘ভ্যানগার্ড’ দাবিদার সৌদি আরবের প্রভাবশালী এ যুবরাজ ‘চীনা দমননীতি’র তোষণ করায় বেজায় ক্ষুব্ধ অধিকার সংগঠনগুলো। বিশেষ করে মুসলিম অধিকারের বিভিন্ন সংগঠন বিন সালমানের এই মন্তব্য ‘জঘন্য ও ন্যাক্কারজনক’ বলেও উল্লেখ করেছে।

চীনে শাসকগোষ্ঠীর বদল হলেও উইগুরদের ওপর দশকের পর দশক ধরে  চলে আসছে দমন-পীড়ন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর চীন সরকার সাঁড়াশি অভিযান চালালে অর্ধলক্ষাধিক উইগুর মুসলিম মাতৃভূমি ছেড়ে দেশান্তরী হতে বাধ্য হয়।

জিনজিয়াংয়ে মুসলিমদের ওপর চীনের এই দমন-নীতির ব্যাপারে রিয়াদ সবসময়ই মুখে কুলুপ এঁটে থেকেছে। এমনকি সৌদি আরবের শাসক আল সৌদ রাজপরিবার দু’টি পবিত্র মসজিদের রক্ষক ও বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর অভিভাবক পরিচয় দিয়ে এলেও তারা ইসলামী সহযোগিতা সংস্থার (আইসিসি) কোনো পরিসরেও বিষয়টি নিয়ে টুঁ শব্দ করেনি।

মুখে কুলুপ এঁটে থাকার অবস্থান থেকে মুখ খুলে উল্টো এবার চীনের পক্ষ নিয়ে দমন-পীড়নে সমর্থন দেওয়ায় সৌদি যুবরাজের কঠোর সমালোচনা করেছেন ব্রিটেনের মুসলিম কাউন্সিলের মুখপাত্র মিকদাদ ভার্সি। বিষয়টিকে ‘উইগুর মুসলিমদের বিরুদ্ধে নির্যাতন কেন্দ্র গড়ে তোলার পক্ষে সাফাই’ এবং ‘অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক’ বলেও মন্তব্য করেছেন মিকদাদ।

অবশ্য কেবল এই উইগুর ইস্যুতেই নয়। ইয়েমেনে অনুগত শাসকগোষ্ঠীর গদি-রক্ষায় সেখানে সামরিক পদক্ষেপ নিয়েও সমালোচিত হয়েছে বিন সালমান। বিশেষত হুথিদের দমনের নামে বিমান হামলা চালিয়ে শিশুসহ নিরীহ বেসামরিক নাগরিকদের হত্যার কারণে তার নেতৃত্ব প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে সৌদি আরব নিজেই। iqna

 

captcha