IQNA

যুদ্ধে লাভ যুক্তরাষ্ট্রের

18:02 - March 09, 2022
সংবাদ: 3471540
তেহরান (ইকনা): বিগত কয়েক মাস ধরেই যুক্তরাষ্ট্র ক্রমাগত বলে যাচ্ছে যে, রাশিয়া যেকোনো মুহূর্তে ইউক্রেনে হামলা চালাতে পারে। আর রাশিয়া বলে যাচ্ছে, ইউক্রেন হামলার কোনো অভিপ্রায় তাদের নেই। তারপরও যুক্তরাষ্ট্র কেন প্রতিদিনই ইউক্রেন ইস্যুতে নতুন নতুন গোয়েন্দা তথ্য ও ভয়ের সঞ্চার করছে, এমন প্রশ্ন অনেক বিশ্লেষকের। 

গত বৃহস্পতিবারও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গোয়েন্দা তথ্যের উদ্ধৃতি দিয়ে ইউক্রেনে অবস্থানরত যুক্তরাষ্ট্রের সব নাগরিককে দেশে ফিরে আসতে বলেছেন। পাশাপাশি তিনি এও বলেছেন, ইউক্রেন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের ফিরিয়ে আনতে কোনো বিমান বা সামরিক বাহিনী পাঠাতে পারবে না ওয়াশিংটন।
 
যুক্তরাষ্ট্র কর্র্তৃপক্ষ মস্কোকে একের পর এক হুমকি দিয়ে আসছে বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞার। এমনকি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত পর্যায়ে অবরোধ জারি করা হতে পারে এমন কথাও বলেছে যুক্তরাষ্ট্র। সংকট ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের বক্তব্য শুনে মনে হয়, তারাই যেন রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে। 
 
পুতিন কয়েক দিন আগেই প্রথমবার ইউক্রেন ইস্যুতে মুখ খোলেন, সেখানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধের উসকানি দেওয়ার অভিযোগ তোলেন। ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়ার যুদ্ধ শুরু হলে তাতে ইউরোপও জড়িয়ে পড়বে। যুক্তরাষ্ট্র তো হুমকি দিয়েই রেখেছে, ইউক্রেনে হামলা হলে তারা গ্যাস পাইপলাইন (নর্ড স্ট্রিম-২) বন্ধ করে দেবে। রাশিয়ার প্রতি ইউরোপের নির্ভরতার জায়গা এই জ্বালানি। সেই নির্ভরতার সূত্রকেই কাটতে চাইছেন জো বাইডেন। 
 
বিশ্লেষকরা মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমল থেকেই ওয়াশিংটনের সঙ্গে ব্রাসেলসের সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না। জো বাইডেন প্রশাসন চাইছে ইউরোপকে ফের নিজেদের করায়ত্ব করতে। আর এমনটা করতে হলে ইউক্রেন যুদ্ধ ওয়াশিংটনের কাছে বড় সুযোগ।
 
ইতিমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপের বাজারে বিকল্প জ্বালানি উৎসের জন্য দেনদরবার শুরু করে দিয়েছে। ওয়াশিংটনের মিত্র টোকিও বলেছে, তারা ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ করবে। বিকল্প এই উৎসসমূহ ইউরোপের সামনে উপস্থাপন করে, ব্রাসেলসের ওপর রাশিয়ার প্রভাব শেষ করতে চাইছে ওয়াশিংটন। যুক্তরাষ্ট্রের এই পরিকল্পনা কতটা বাস্তবসম্মত তা সমর কূটনীতিকরা বিশ্লেষণ করলেও জ্বালানি বিশ্লেষকদের মতে, বাইডেনের এমন মুনাফাভোগী পরিকল্পনা ইউরোপকে বিপদে ফেলবে। ইউরোপের নেতারা যদি বাইডেনের টোপে পা দেয়, তাহলে আগামী শীত হতে যাচ্ছে ইউরোপের সবচেয়ে ভয়াবহ সময়।
 
ইউরোপের অন্যতম সদস্য জার্মানি রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত হতে চায় না। আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যা সমাধানের রাস্তা খুঁজছেন দেশটির নেতারা। একই রাস্তা নিয়েছে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাঁক্রো। সম্প্রতি ইউক্রেন যুদ্ধ ঠেকাতে ইউরোপের একাধিক দেশ মিলিত হয়েছিল বার্লিনে। কিন্তু আন্তর্জাতিক মিডিয়া বলছে, বৈঠকটি ব্যর্থ হয়েছে। এমন ব্যর্থতার কারণ হিসেবে ইউরোপীয় নেতাদের মধ্যকার দ্বন্দ্বকেই সামনে আনছে মিডিয়াগুলো। বার্লিনে আলোচনার পর বৃহস্পতিবার গভীর রাতে রাশিয়ার দূত দিমিত্রি কোজাক তার ব্রিফিংয়ে বলেছেন, ডনবাসে যুদ্ধ থামানোর লক্ষ্যে ২০১৫ সালে হওয়া চুক্তির বিষয়ে রাশিয়া ও ইউক্রেনের ভিন্ন ভিন্ন ব্যাখ্যার কারণে দুই পক্ষ একমত হতে পারেনি।
captcha