দ্য অনলাইন সিটিজেন–এর বরাতে ইকনা জানিয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওই শিক্ষার্থীর পোস্টের কিছু ছবি প্রকাশিত হওয়ার পর এই বিতর্ক শুরু হয়। পোস্টগুলোতে দাবি করা হয়, “চীন ও সিঙ্গাপুরের মতো দেশে কেউ ইসলাম চায় না” এবং ইসলামকে ভুল ও বিভ্রান্তিকর ধর্ম হিসেবে বর্ণনা করা হয়।
প্রায় দুই সপ্তাহ আগে গোল্ডেন নাগেটস পডকাস্টের সহ-প্রতিষ্ঠাতা হানাফি মুহাম্মদ সাম এই বিষয়টি সামনে আনেন।
প্রথমে ইনস্টাগ্রামের মূল পোস্টটি মুছে ফেলা হলেও ২২ সেপ্টেম্বর আবার আপলোড করা হয়। হানাফি বলেন, এসব মন্তব্য স্বাস্থ্যসেবায় প্রয়োজনীয় সহানুভূতি ও সহাবস্থানের মূল্যবোধের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
এই মন্তব্যের সঙ্গে জড়িত ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট the_real_silu পরবর্তীতে মুছে ফেলা হয়েছে। হানাফি জানান, তিনি ঘটনাটি ন্যাংগি আন পলিটেকনিক বিশ্ববিদ্যালয়ে রিপোর্ট করেছেন এবং উল্লেখ করেন যে, প্রকাশিত কনটেন্ট একটি বৃহত্তর সমস্যার অংশ।
তার দাবি, তার কাছে একটি ভিডিও আছে যেখানে ধারাবাহিকভাবে বর্ণবাদী ও ইসলামবিদ্বেষী বক্তব্য দেওয়া হয়েছে, যা মুছে ফেলা পোস্টের চেয়েও বেশি চরমপন্থী।
হানাফির মতে, এ ধরনের আচরণ সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় রোগীর আস্থা ও নিরাপত্তা দুর্বল করতে পারে। তিনি বলেন, এটি শুধু একটি অপমানজনক মন্তব্য নয়, বরং এমন এক দৃষ্টিভঙ্গি যা চিকিৎসা সেবার মানকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে পারে।
তিনি সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল এবং কর্তৃপক্ষকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। তার ভাষায়: “আমরা সমাজ হিসেবে এ বিষয়ে নীরব থাকতে বা এটিকে উপেক্ষা করতে পারি না। বর্ণবাদ ও ইসলামবিদ্বেষের হাসপাতাল, স্কুল বা সমাজে কোনো স্থান নেই।”
বিষয়টি দ্রুত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। বহু ব্যবহারকারী এ আচরণকে নিন্দা করেন এবং সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ওং ইয়ে কুংকে ট্যাগ করে বিষয়টি সিঙ্গাপুর নার্সিং বোর্ডে পাঠানোর প্রস্তাব দেন।
কেউ কেউ ওই শিক্ষার্থীর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির উপর স্থগিতাদেশ বা নিষেধাজ্ঞা দাবি করেন। অন্যরা যুক্তি দেন, জবাবদিহি নিশ্চিত করা জরুরি এবং স্বাধীন মত প্রকাশ মানুষকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয় না।
এই বিতর্কের মধ্যে spam_silu নামে একটি অ্যাকাউন্ট — যা ধারণা করা হচ্ছে ওই শিক্ষার্থীরই — মন্তব্যে ক্ষমা চায়। শিক্ষার্থী স্বীকার করেন, তিনি তার অনলাইন মন্তব্যের পরিণতি ভেবে দেখেননি এবং প্রতিশ্রুতি দেন যে, সিঙ্গাপুরের সব ধর্মকে সম্মান করবেন। তিনি বিশেষভাবে মুসলিম সম্প্রদায়ের কাছে ক্ষমা চান এবং তার আগের বক্তব্যকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের নেতিবাচক প্রভাবের ফল বলে উল্লেখ করেন। 4306708#