
সোমবার ০৭ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে ইরানের প্রেসিডেন্ট ড. মাসউদ পেজেশকিয়ান ও বিশ্ব ফোরাম ফর প্রোক্সিমিটি অফ ইসলামিক স্কুলস অব থটসের মহাসচিব হুজ্জাতুল ইসলাম হামিদ শহরিয়ারি বক্তব্য দেন।
আজিজ হাসনোভিচ বলেন, নবী (সা.) ছিলেন মানবতার জন্য রহমতের পূর্ণাঙ্গ উদাহরণ। উম্মাহর উচিত এই রহমতের প্রতিফলন ঘটানো এবং তা জীবনযাপনের সব ক্ষেত্রে বিস্তার করা। কিন্তু আজ গাজায় চলমান জায়নিস্টদের নৃশংসতা আমাদের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে এসেছে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, “আমরা কি সত্যিই ইসলামের রহমতের প্রতিফলন ঘটাতে পারছি?”
তিনি আহ্বান জানান, মুসলিম উম্মাহকে অবশ্যই নবী (সা.)-এর সীরাতকে অনুসরণ করে বাস্তবে প্রয়োগ করতে হবে এবং আলেমদের শুধু কথায় নয়, কাজে-কার্যে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে দাঁড়াতে হবে।
আাম্মার হাকিম: ঐক্য শুধু স্লোগান নয়, একে অন্তরে ধারণ করতে হবে
ইরাকের হিকমা ন্যাশনাল মুভমেন্টের নেতা আম্মার হাকিম বলেন, ঐক্যের মানে বিশ্বাস ত্যাগ করা নয়, বরং বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের মুখে মুসলিম উম্মাহর সম্মিলিতভাবে দাঁড়ানো। তিনি ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধের উদাহরণ টেনে বলেন, ইরানে জনগণ ও নেতৃত্বের ঐক্যই ছিল ইসরায়েলের আগ্রাসন ঠেকানোর প্রধান কারণ।
তিনি সতর্ক করেন, ইসরায়েলের তথাকথিত “গ্রেটার ইসরায়েল” পরিকল্পনা সমগ্র মুসলিম বিশ্বের জন্য বড় হুমকি। যদি মুসলমানরা ঐক্যহীন থাকে তবে একে একে পরাজয়ের মুখোমুখি হবে।
পাকিস্তানের নেতা: মুসলিম নেতাদের নিষ্ক্রিয়তায় গাজায় শিশু মরছে
পাকিস্তানের ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর ইসলামিক সলিডারিটির সভাপতি সাহেবজাদা আবুল খাইর বলেন, আল্লাহ নবী (সা.)-কে বিশ্বজগতের জন্য রহমত হিসেবে প্রেরণ করেছেন, কিন্তু ইসরায়েল ও তার মিত্ররা রহমতের ছোঁয়া পায়নি। আজ গাজায় শিশুরা ক্ষুধা-তৃষ্ণায় মারা যাচ্ছে, অথচ মুসলিম নেতারা নিষ্ক্রিয়।
তিনি জানান, পাকিস্তানে সব মাযহাবের মুসলমান আজ ঐক্যবদ্ধ। পাশাপাশি তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, ইরান সবসময় গাজার পক্ষে দাঁড়িয়েছে, আর এ কারণেই ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র ইরানের বিরুদ্ধে আক্রমণ চালায়।
ইরাকি আলেম: মুসলমানরা ঘুমিয়ে, শত্রু সুযোগ নিচ্ছে
ইরাকের সুন্নি মুফতি শেখ মাহদি আল-সুমাইদাই বলেন, মুসলিম উম্মাহ গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন, আর এই সুযোগে ইসরায়েলি শত্রুরা তাদের অপরাধ চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি সতর্ক করেন, মুসলিমদের অবশ্যই একসাথে দাঁড়াতে হবে, নচেত শত্রুরা এমনকি মুসলিম দেশগুলোর নেতাদের হুমকি দিতে দ্বিধা করছে না।
এছাড়া লেবাননের সংসদ স্পিকার নাবিহ বেরি-র প্রতিনিধি সালাহ ওখস, তুরস্কের ডিয়ানেতের উপপ্রধান কাদির দিনচ, লেবাননের শিয়া হাই কাউন্সিলের ভাইস প্রেসিডেন্ট শেখ আলী আল-খাতিব প্রমুখ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন।
৩৯তম আন্তর্জাতিক ইসলামী ঐক্য সম্মেলন ৬ থেকে ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত তেহরানে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ৮০ জনেরও বেশি শীর্ষ আলেম, মন্ত্রী, গ্র্যান্ড মুফতি, রাষ্ট্রপতির উপদেষ্টা, প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ও মন্ত্রীসহ মোট ২১০ জন প্রতিনিধি অংশ নিচ্ছেন। 4303983#