ইকনার প্রতিবেদন অনুযায়ী, হিজবুল্লাহর প্রয়াত মহাসচিব সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ (রহ.), যিনি প্রতিরোধ অক্ষের প্রতীক ছিলেন, তাঁর শাহাদাতের প্রথম বর্ষপূর্তিতে আল-মায়াদিন নেটওয়ার্ক রাজনৈতিক বিশ্লেষক কাজেম আল-হাজের লেখা একটি বিশেষ নিবন্ধ প্রকাশ করেছে। এর অনুবাদে বলা হয়:
নিবন্ধে উল্লেখ করা হয়েছে, ইতিহাস শুধু বইয়ের পাতায় লেখা কথায় গড়ে ওঠে না, বরং বাস্তবতার ময়দানে মানুষের কর্ম এবং শহীদদের রক্তে জাতির অন্তরে অর্পিত আমানতের মাধ্যমেই গড়ে ওঠে।
লেখক বলেন, সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহর শাহাদাত একটি সাময়িক সংবাদ নয়, বরং এটি এক ধারাবাহিক পথচলার অংশ, যা ১৯১৭ সালের বালফুর ঘোষণা থেকে শুরু হয়ে, ১৯৭৯ সালের ইসলামী বিপ্লব, দক্ষিণ লেবানন, গাজা, বাগদাদ ও সানার লড়াই হয়ে আজ অবধি চলমান।
নিবন্ধে বলা হয়, ১৯৭৯ সালের ইসলামী বিপ্লব ফিলিস্তিনকে মুসলিম উম্মাহর কেন্দ্রবিন্দুতে ফিরিয়ে এনেছিল। সেই বিপ্লবের আদর্শই লেবাননে প্রতিরোধের বীজ বপন করে, যা সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহর নেতৃত্বে এক শক্তিশালী প্রতিরোধে রূপ নেয়। তিনি প্রতিরোধকে কেবল একটি সামরিক গোষ্ঠী থেকে উর্ধ্বে তুলে এনে এক আদর্শিক পরিচয়ে রূপান্তরিত করেন, যা সাম্প্রদায়িকতার ঊর্ধ্বে এবং গোটা অঞ্চলের মুক্তিকামী জনগণের অনুপ্রেরণায় পরিণত হয়।
২০০০ সালে দক্ষিণ লেবানন থেকে ইসরায়েলি সেনাদের পরাজিত হয়ে পিছু হটতে বাধ্য করা এবং ২০০৬ সালের জুলাই যুদ্ধ ছিল তাঁর দূরদর্শী নেতৃত্বের বড় অর্জন। এতে প্রতিরোধ প্রমাণ করে দেয় যে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে পরাজিত করা সম্ভব।
নিবন্ধে আরও বলা হয়, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের “তুফানুল আকসা” অপারেশন ইসরায়েলের নিরাপত্তা হিসাব-নিকাশ ভেঙে দেয় এবং একইসঙ্গে দক্ষিণ লেবাননের প্রতিরোধও সুসংগঠিতভাবে গতি সঞ্চার করে।
২০২৪ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর বৈরুতের দাহিয়া এলাকায় মার্কিন তৈরি বিস্ফোরক দিয়ে নাসরুল্লাহকে টার্গেট করা হয়। কিন্তু তাঁর শাহাদাত প্রতিরোধকে দুর্বল না করে বরং আরও ঐক্যবদ্ধ করে তোলে। তাঁর নাম ও স্মৃতি প্রতিরোধ অক্ষের প্রতিটি শহরে নতুন করে প্রতিজ্ঞার প্রতীক হয়ে ওঠে।
নিবন্ধের উপসংহারে বলা হয়, সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহর শাহাদাত কোনো সমাপ্তি নয়। বরং তাঁর রেখে যাওয়া আদর্শ ও দৃঢ়তা প্রতিরোধকে আরও শক্তিশালী করেছে। তাঁর প্রতিষ্ঠিত প্রকল্প এত গভীর যে তা ভেঙে পড়ার নয়, আর তাঁর সততা আজ প্রতিরোধ অক্ষের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য মানদণ্ড হয়ে দাঁড়িয়েছে। 4307431#