অন্যদিকে, ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, এ অভিযানে গুরুতর আহত হওয়া এক ইসরায়েলি সেনা পরে মারা গেছে।
ইসরায়েলি সেনা রেডিও জানায়, একটি ফিলিস্তিনি গাড়ি দ্রুতগতিতে ইসরায়েলি সেনাদের দিকে ধেয়ে আসে এবং তাদের চাপা দেওয়ার চেষ্টা করে। এরপর সেনারা গাড়িচালককে লক্ষ্য করে গুলি চালায়, যাতে তার মৃত্যু হয়। এ সময় সেনাদের গুলিতে তাদেরই এক সদস্য গুরুতরভাবে আহত হয় এবং পরে তার মৃত্যু ঘটে।
হামাসের প্রতিক্রিয়া
ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস এক বিবৃতিতে জানায়:
“জিত মোড়ে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধযোদ্ধার বীরোচিত গাড়ি হামলা ছিল গাজায় চলমান গণহত্যা ও পশ্চিম তীরে দখলদারদের হত্যাযজ্ঞ, গ্রেপ্তার, দখল নীতি এবং বসতি স্থাপনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ।”
হামাস আরও জানায়, এই অভিযান প্রমাণ করে যে ফিলিস্তিনি জাতি দখল ও ইহুদিকরণের ষড়যন্ত্র প্রত্যাখ্যান করছে। প্রতিরোধ অব্যাহত থাকবে যতদিন দখল চলবে, এবং কোনো দমননীতি ফিলিস্তিনি জনগণের সংগ্রামকে ভাঙতে পারবে না।
বিবৃতিতে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধের ক্ষেত্র জ্বালিয়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়।
গাজায় দুই ইসরায়েলি বন্দির অনিশ্চিত অবস্থা
হামাসের সামরিক শাখা ইজ্জুদ্দিন কাসসাম ব্রিগেড জানায়, ইসরায়েলি বাহিনীর গত ৪৮ ঘণ্টার ভয়াবহ হামলায় গাজার সাবরা ও তেল আল-হাওয়া এলাকায় দুই ইসরায়েলি বন্দি – ওমরি মিরান ও মেতান ইংরিস্ট–এর সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে।
কাসসাম হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে: বন্দিদের জীবন হুমকির মুখে। ইসরায়েলি বাহিনীকে অবশ্যই রাস্তা নম্বর ৮ এর দক্ষিণে সরে যেতে হবে এবং আজ সন্ধ্যা ৬টা থেকে ২৪ ঘণ্টা যাবৎ সব ধরনের বিমান হামলা বন্ধ করতে হবে, যাতে বন্দিদের উদ্ধারের প্রচেষ্টা চালানো যায়।
তুরস্ককে ইসরায়েলি বিশেষজ্ঞের হুঁশিয়ারি
ইসরায়েলি আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ শাই গাল লিখেছেন: বর্তমানে হামাসের কার্যক্রমের অন্যতম ঘাঁটি তুরস্ক। আঙ্কারা হামাস নেতাদের আশ্রয়, পাসপোর্ট, আর্থিক সহায়তা দিয়েছে। এটি আর চোখ বন্ধ করে থাকা নয়, বরং স্পষ্ট সহমত।
তিনি বলেন, কাতারে হামাস নেতাদের টার্গেট করে ইসরায়েলের হামলা একটি সতর্কবার্তা— দায় শুধু যোদ্ধাদের নয়, যারা তাদের সহায়তা করছে তারাও দায়ী।
গাজা যুদ্ধ সমাপ্তি নিয়ে ট্রাম্প–নেতানিয়াহু দ্বন্দ্ব
ইসরায়েলি রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম জানিয়েছে, গাজা যুদ্ধের অবসান ও বন্দিদের মুক্তি নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন এবং ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর মন্ত্রিসভার মধ্যে বড় ধরনের মতপার্থক্য রয়েছে।
ইসরায়েলি চ্যানেল ১৩ জানায়, নেতানিয়াহু নিউইয়র্কে ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকাফ–এর সঙ্গে বৈঠক করবেন।
ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু দাবি করেন: “আমরা ট্রাম্পের টিমের সঙ্গে গাজা পরিকল্পনায় কাজ করছি। আমরা হামাস নেতাদের গাজা থেকে নিরাপদে বের হওয়ার পথ দিতে প্রস্তুত, তবে তারা অবশ্যই ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্তি দেবে। এখনও বিস্তারিত বিষয়ে চুক্তি হয়নি।”
উইটকাফ বলেন, ট্রাম্প এই সপ্তাহে কয়েকটি মুসলিম দেশের নেতাদের কাছে ২১ দফা শান্তি পরিকল্পনা উপস্থাপন করেছেন।
এদিকে, রয়টার্স আগেই জানিয়েছিল, হামাস এখনো ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব হাতে পায়নি। 4307657#