হাদীসটি নিম্নরূপ:
«عَنْ أَبِي عَبْدِ اللَّهِ أَنَّهُ قَال إِنَّا أَنْزَلْناهُ فِي لَيْلَةِ الْقَدْرِ، اللَّيْلَةُ فَاطِمَةُ وَ الْقَدْرُاللَّهُ فَمَنْ عَرَفَ فَاطِمَةَ حَقَّ مَعْرِفَتِهَا فَقَدْ أَدْرَكَ لَيْلَةَ الْقَدْرِ.»
'নিশ্চয়ই কোরআনকে লাইলাতুল কদর তথা শবে কদরে নাযিল করা হয়েছে। আর ফাতেমা যাহরা হল লাইলাতুল কদর। যদি কেউ ফাতেমা যাহরার ব্যক্তিত্ব ও গুরুত্ব বুঝতে পারে তাহলে সে লাইলাতুল কদরও অনুধাবন করতে পারবে।' ( তাফসীরে ফুরাত কুফী, পৃ. ৫৮১)
এ ধরনের রেওয়ায়েত অন্যান্য ক্ষেত্রেও বর্ণিত হয়েছে, যেমন বলা হয়েছে যে, শবে বরাতের রাত্র শবে কদরের রাতের সমতুল্য। বস্তুত: এ ধরনের হাদীসের মাধ্যমে শবে কদরের গুরুত্ব ও তাৎপর্যের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। আর শবে কদরের সাথে ফাতেমা যাহরার (আ.) সম্পৃক্ততার মধ্য দিয়ে এ মহীয়সী নারীর অপরিসীম ফজিলত ও শ্রেষ্ঠত্বকে বুঝান হয়েছে। শবে কদর পবিত্র রমজান মাসের একটি পবিত্রতম রাত। শুধু তাই নয় বরং বছরের সব রাতে চেয়ে ফজিলতপূর্ণ রাত হল শবে কদর। এ রাতে ইবাদত বন্দেগীর মাধ্যমে মানুষ আল্লাহর নৈকট্য ও সান্নিধ্য লাভ করতে পারে। তেমনি নবী নন্দিনী হযরত ফাতেমা যাহরার (আ.) মহিমান্বিত জীবনাদর্শ অনুসরণ ও তাঁর প্রতি ভক্তি-ভালবাসা নিবেদনের মাধ্যমে মানুষ আল্লাহর নৈকট্য হাসিল করতে পারে।
কেন পবিত্র কোরআনে হযরত মারিয়ামের (আ.) নাম বর্ণিত হয়েছে কিন্তু হরযত ফাতেমা যাহরার (আ.) নাম উল্লেখিত হয় নি?
প্রথমত: পবিত্র কোরআনে কারও নাম উল্লেখ থাকার অর্থ তার ব্যক্তিত্ব ও শ্রেষ্ঠত্ব নয়। কেননা কোরআনে অনেক নিকৃষ্ট ও পাপিষ্ট ব্যক্তির ( যেমন: শয়তান, ফেরাউন, আবু লাহাব প্রমুখের) নাম বর্ণিত হয়েছে। তাছাড়া সব নবী ও রাসূলের (সা.) নামও কোরআনে উল্লেখ করা হয় নি; কেবলমাত্র তাদের মধ্যে মুষ্টিমেয় কয়েক জনের নাম এসেছে।
দ্বিতীয়ত: সাহিত্য ও ভাষ্যশৈলির দিক থেকে সরাসরি কারও নামোল্লেখ না করে ইশার ও ইঙ্গিতের মাধ্যমে তুলে ধরাতে তুলনামুলক বেশি গুরুত্ব পায়। যেমনভাবে কোরআন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আল্লাহ সরাসরি উল্লেখ না করে ইঙ্গিতের মাধ্যমে বুঝিয়েছেন। কোরআনের অনেক আয়াতে আমিরুল মু'মিনিন আলীর (আ.) নামোল্লেখ না করেই, তার ব্যক্তিত্ব ও ফজিলতের প্রতি ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে (যেমন: কোরআনের সূরা বাকারার ২০৭, সূরা আলে ইমরানের ৬১, সূরা মায়েদার ৫৫, সূরা হুদের ১৭ নং আয়াত ছাড়াও আরও কিছু আয়াত রয়েছে)।