IQNA

ইমাম মাহদী(আ.) সারা বিশ্বে ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠা করবেন

23:34 - July 11, 2016
সংবাদ: 2601174
যুগ যুগ ধরে মানুষের উপর যে বড় ধরনের অপরাধটি সংঘটিত হচ্ছে তা হল জুলুম ও অত্যাচার৷ মানুষ সর্বদা তার অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে এবং মানুষের পার্থিব ও আত্মিক অধিকার কখনোই ন্যায়ের ভিত্তিতে বন্টিত হয় নি৷ সর্বদা ভরাপেটদের পাশাপাশি ক্ষুধার্তদেরকে দেখা গেছে এবং বড় বড় প্রাসাদ ও অট্টালিকার পাশাপfশি শত-সহস্র মানুষকে পথে-ঘাটে শুয়ে থাকতে দেখা গেছে৷ শক্তিশালী ও বিত্তশালীরা দুর্বলদেরকে দাস হিসাবে ব্যবহার করেছে৷ কৃষ্ণাঙ্গরা শ্বেতাঙ্গদের কাছে অত্যাচারিত হয়েছে৷
মোটকথা সর্বদা ও সর্বত্র দুর্বলদের অধিকারকে খর্ব করা হয়েছে এবং জালেমরা তাদের অসাধু চাহিদাকে চরিতার্থ করেছে৷ মানুষ সর্বদা ন্যায়পরায়ণতা ও সাম্যের জন্য প্রহর গুনেছে এবং ন্যায়বিচার সম্পন্ন হুকুমতের জন্য অধির আগ্রহে প্রতীক্ষা করেছে৷
এই প্রতীক্ষার শেষ হচ্ছে ইমাম মাহদীর (আ.) ন্যায়পরায়ণ শাসনব্যাবস্থা৷ তিনি মহান ন্যায়পরায়ণ নেতা হিসাবে সারা বিশ্বে ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠা করার জন্য দায়িত্ব প্রাপ্ত হয়েছেন৷ বিভিন্ন রেওয়ায়তও সে সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে৷

ইমাম হুসাইন (আ.) বলেছেন: যদি মহাপ্রলয়ের মাত্র একটি দিনও অবশিষ্ট থাকে আল্লাহ তায়ালা সে দিনকে এত বেশী দীর্ঘায়িত করবেন যে, আমার বংশ থেকে একজন আবির্ভূত হবে এবং পৃথিবী যেমন অন্যায়-অত্যাচারে ভরে গিয়েছিল তেমনিভাবে ন্যায়নীতিতে ভরে তুলবেন৷ রাসূল (সা.)-এর কাছে আমি এমনটি শুনেছি (কামালুদ্দিন, খণ্ড-১, বাব ৩০, হাঃ ৪ এবং ৫৮৪)৷

এ ধরনের আরও বহু রেওয়ায়ত রয়েছে যেখানে ইমাম মাহদী  (আ.)-এর হুকুমতের ছায়াতলে বিশ্বজনীন ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও অত্যাচারকে নির্মূল করার সংবাদ দেওয়া হয়েছে৷

এটা জানা প্রয়োজন যে, ইমাম মাহদী (আ.)-এর ন্যায়পরায়ণতার বৈশিষ্ট্যটি এত বেশী স্পষ্ট যে, কিছু কিছু দোয়াতেও তাঁকে ওই উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছে: اللهم و صلی علی ولی امرک القائم المومل والعدل المنتظر

হে আল্লাহ আপনার ওয়ালী আমরের উপর দরুদ পাঠ করুন যিনি আদর্শ সংগ্রাম করবেন এবং সবার প্রতীক্ষিত ন্যায়বিচার (মাফাতীহ্ আল জিনান দোয়ায়ে ইফতিতাহ্)৷

হ্যাঁ, তিনি ন্যায়বিচারকে তাঁর বিপ্লবের মূলমন্ত্র করেছেন৷ কেননা, ন্যায়বিচার হচ্ছে মানুষের ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনের প্রাণ এবং ন্যায়পরায়ণতা ব্যতীত পৃথিবী ও তার অধিবাসীরা প্রাণহীন মানুষ যাদেরকে কেবল জীবিত মনে করা হয়ে থাকে৷

ইমাম কাযিম (আ.) নিম্নলিখিত আয়াতের তাফসীর সম্পর্কে বলেছেন: ﴿اعْلَموا أَنّ اللّهَ يُحْيِ الْأَرْضَ بَعْدَ مَوْتِها قَدْ بَيّنَا لَكُمُ الْأَيَتِ لَعَلّكُمْ تَعْقِلونَ﴾

এ আয়াতের অর্থ এই নয় যে, আল্লাহ জমিনকে পানি দিয়ে জীবিত করেন বরং তিনি এমন ধরনের মহাপুরুষদেরকে (এখানে মহাপুরুষ বলতে ইমাম মাহদী (আ.) ও তাঁর সাথীদেরকে বোঝানো হয়েছে৷ তাফসীরে বোরহান খণ্ড- ৭, পৃ.-৪৪৬) প্রেরণ করেন যারা ন্যায়পরায়ণতাকে জীবিত করেন৷ অতঃপর (সমাজে) ন্যায়বিচার জীবিত হওয়ার মাধ্যমে জমিন জীবিত হয়৷

জমিন জীবিত হওয়া বলতে বোঝানো হয়েছে যে, ইমাম মাহদী (আ.)-এর ন্যায়বিচার হচ্ছে সর্বজনীন ন্যায়বিচার যা কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা স্থানের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়৷
ট্যাগ্সসমূহ: ইমাম ، মাহদী ، হুসাইন ، আল্লাহ
captcha