IQNA

কুরআনে ইসতিগফার (৩):

হযরত আলী (আ.)-এর কাছে ইসতিগফারের প্রকৃত সংজ্ঞা

12:51 - December 11, 2025
সংবাদ: 3478590
ইকনা- ইমাম আলী (আ.)-এর একটি বিখ্যাত হাদিসে ইসতিগফারের প্রকৃত অর্থ ও তার ছয়টি স্তম্ভ বর্ণিত হয়েছে। এই হাদিস কুমাইল বিন যিয়াদ (রা.) থেকে বর্ণিত।

ইকনা নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, কুমাইল (রা.) জিজ্ঞাসা করেন: “হে আমীরুল মু’মিনীন! মানুষ গুনাহ করে, তারপর মুখে ‘আসতাগফিরুল্লাহ’ বলে। ইসতিগফারের প্রকৃত অর্থ কী?”
ইমাম (আ.) প্রথমে বলেন: “ইসতিগফার মানে তওবা।” কুমাইল আবার জিজ্ঞাসা করেন: “তওবা কীভাবে করতে হয়?”
ইমাম (আ.) উত্তর দেন: “যখন কেউ গুনাহ করে, তখন ঠোঁট ও জিহ্বা নাড়িয়ে ‘আসতাগফিরুল্লাহ’ বলবে এবং মনে মনে দৃঢ় সংকল্প করবে যে, আর কখনো সেই গুনাহে ফিরে যাবে না।”
কুমাইল জিজ্ঞাসা করেন: “তাহলে কি আমি মুসতাগফির (সত্যিকারের ক্ষমা প্রার্থনাকারী) হয়ে গেলাম?”
ইমাম (আ.) বলেন: “না। তুমি এখনো তার মূলে পৌঁছাওনি।”
কুমাইল জিজ্ঞাসা করেন: “তাহলে ইসতিগফারের মূল কী?”
ইমাম আলী (আ.) তখন ইসতিগফারের ছয়টি স্তম্ভ বর্ণনা করেন:
১. অতীতের গুনাহের জন্য আন্তরিক অনুতাপ।
২. আর কখনো সেই গুনাহে ফিরে না যাওয়ার দৃঢ় সংকল্প।
৩. মানুষের প্রাপ্য হক আদায় করে দেওয়া।
৪. যে সব ফরজ আল্লাহ তায়ালা আদায় করতে বলেছেন, তা পূর্ণ করা।
৫. হারাম খেয়ে যে মাংস শরীরে গজিয়েছে, তা কষ্ট ও রায়াজতের মাধ্যমে গলিয়ে ফেলা — এমনকি চামড়া হাড়ের সঙ্গে লেগে যাক, তারপর নতুন হালাল মাংস গজাক।
৬. যেমন গুনাহের স্বাদ শরীরকে দিয়েছ, তেমনি ইবাদতের কষ্টও শরীরকে চাখাতে হবে।
ইমাম (আ.) আরও বলেন: “অনুতাপই হলো ইসতিগফারের রূহ। যে শুধু জিহ্বায় বলে কিন্তু অন্তরে পস্তায় না, সে নিজেকেই ঠাট্টা করে।”
ইমাম রেজা (আ.) থেকে বর্ণিত: “যে মুখে ইসতিগফার করে কিন্তু অন্তরে অনুতপ্ত হয় না, সে নিজেকে উপহাস করে।”
বিশেষজ্ঞদের মতে, ইমাম আলী (আ.)-এর এই ব্যাখ্যা অতিশয়োক্তি নয়; বরং প্রকৃত অনুতাপ থাকলে এই ছয়টি ধাপ স্বয়ংক্রিয়ভাবে পূর্ণ হয়। অন্যের জন্য ইসতিগফার করার অর্থ শুধু তাদের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা। 3495227#
 
captcha