IQNA

রোহিঙ্গাদের গণগ্রেফতারে পর নির্যাতন, নিখোঁজের অভিযোগ

19:05 - December 08, 2016
সংবাদ: 2602112
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নিরাপত্তা বাহিনী রোহিঙ্গা মুসলিমদের গণগ্রেফতারের পর ব্যাপক নির্যাতন করছে বলে অভিযোগ করেছেন মানবাধিকার কর্মীরা।
যুগান্তরের উদ্ধৃতি দিয়ে বার্তা সংস্থা ইকনা: রোহিঙ্গাদের গণগ্রেফতারে পর নির্যাতন, নিখোঁজের অভিযোগরাখাইনের মংডুর ও শাই চিয়া গ্রামের এই রোহিঙ্গা বাসিন্দাদের অনেকেই এখন গ্রেফতার ও নিখোঁজ
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নিরাপত্তা বাহিনী রোহিঙ্গা মুসলিমদের গণগ্রেফতারের  পর ব্যাপক নির্যাতন করছে বলে অভিযোগ করেছেন মানবাধিকার কর্মীরা।
অনেক রোহিঙ্গা গ্রেফতারে পর থেকে নিখোঁজ রয়েছেন। একে রোহিঙ্গাদের উপর জাতিগত নিধনের অংশ মনে করছেন রাখাইনের মংডুভিত্তিক মানবাধিকার কর্মীরা।
বৃহস্পতিবার মালয়েশিয়াভিত্তিক রোহিঙ্গা ভিশন টেলিভিশনে এক প্রতিবেদনে এ কথা জানানো হয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে প্রতিবেদনটিতে  মানবাধিকার কর্মীদের নাম প্রকাশ করা হয়নি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ৯ অক্টোবর থেকে উত্তর মংডুতে 'ক্লিয়ারেন্স অপারেশন' পরিচালনা করছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি)।
এই অভিযানে এ পর্যন্ত এক হাজার রোহিঙ্গা মুসলিমকে গণগ্রেফতার করা হয়েছে। এরমধ্যে প্রায় পাঁচশ' জনকে নির্যাতনের পর গুম করা হয়েছে। এদের বেশিরভাগই নিহত হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এছাড়াও দুই শতাধিক রোহিঙ্গা নারীকে ধর্ষণ, প্রায় চার হাজার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ এবং ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে খাদ্য-পানি-ওষুধ বঞ্চিত হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
গত ৭ ডিসেম্বর মিয়ানমারের যৌথ বাহিনীর পাঁচ শতাধিক সদস্য 'ও শাই চিয়া' গ্রামে অভিযান চালায়। এ সময় গ্রামবাসী পলায়নের চেষ্টা করলে তাদের উপর নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করা হয়। এ সময় একজন পুরুষ এবং একজন বালিকা আহত হয়। গ্রামটি থেকে ৩৭ জনকে গ্রেফতার করে নিয়ে গেছে যৌথ বাহিনী।
উত্তর মংডুর একজন বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, সেনাবাহিনী নারী ও শিশুদের তাদের ঘর থেকে বের করে দিয়ে তাদের গ্রামের মার্কেটের সামনে একটি ধানক্ষেতে নিয়ে আটকে রাখে।
তিনি বলেন, সেখানে সেনারা নারীদের গহনা কেড়ে নেয় এবং সারাদিন ধরে উৎপীড়ন করে। এরপর সেনা ও বিজিপি সদস্যরা তাদের হুমকি দিয়ে বলে, আমাদের বলো সন্ত্রাসীরা কোথায়। যদি না বলো আমরা তোমাদের হত্যা করব, তোমাদের গ্রেফতার করব।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মিয়ানমার সেনাবাহিনী সমর্থিত রাখাইন সন্ত্রাসীরা ব্যাপকহারে রোহিঙ্গাদের বাড়ি ও দোকানে লুটতরাজ করছে। যা অন্য রাখাইনদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়েছে।
একজন বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা বলেছেন, সেনাবাহিনী আমাদের বাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে। রাখাইন সন্ত্রাসীরা আমাদের বহু বাড়ি ও দোকান লুট করেছে। তারা আমাদের রান্নার চুলা গুড়িয়ে দিয়েছে এবং সব গৃহস্থালি তৈজসপত্র লুটে নিয়েছে। এ কারণে আমরা রান্না করতে, খেতে এবং ঘুমাতে পারছি না। এখন আমাদের কোনো আশ্রয় নেই। কোনো খাদ্য, পানীয় এবং ওষুধ নেই। বহু মানুষ খাদ্যাভাবে ও রোগের শিকার হয়ে শিগগির মারা যাবে। এরইমধ্যে অনেকে মারাও গেছে।
এদিকে রাদেডংয়ের 'চিনখালি' গ্রাম থেকে গত দুইদিনে চারজন রোহিঙ্গা যুবককে গ্রেফতার করে নিয়ে গেছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। তাদেরকে মংডুর চিকানপিয়িন গ্রামে অবস্থিত বিজিপির সদর দফতের পাঠানো হয়েছে। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, সেখানে অন্তত একশ' জন রোহিঙ্গাকে আটকে রেখে অমানসিক নির্যাতন করা হয়েছে।

captcha