IQNA

বাংলাদেশ, ভারত ও মালদ্বীপের যুবকদের আফগানিস্তানে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে দায়েশ

21:42 - January 06, 2017
সংবাদ: 2602309
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: এসব যুবককে প্রথমে উপসাগরীয় দেশগুলোতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এরপর তারা পৌঁছে যায় নাঙ্গারহার শিবিরে। আইসিস সেখানে এসব যুবককে প্রশিক্ষণ দিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড সম্পন্ন করতে ফেরত পাঠাতো ভারতে।
মানবজমিনের উদ্ধৃতি দিয়ে বার্তা সংস্থা ইকনা: বাংলাদেশ, ভারত ও মালদ্বীপ থেকে সংগ্রহ করা বেশ কিছু সদস্যকে আফগানিস্তানে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে আইসিস বা দায়েশ। এসব সদস্যের মাধ্যমে তারা ভারত ও বাংলাদেশে অবস্থান পোক্ত করতে চায়। ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড এনালাইসিস উইংকে (র) উদ্ধৃত করে এ খবর দিয়েছে অনলাইন ডেকান ক্রনিকল। দায়েশ সম্পর্কে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে জমা দেয়া সাম্প্রতিক এর রিপোর্টে এসব কথা বলেছে ভারতের বিদেশ বিষয়ক গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’। এতে তারা বলেছে, দায়েশ ভারত ও বাংলাদেশকে টার্গেট করেছে। তারা এ দেশ দুটিতে প্রবেশের পথ খুঁজছে। এ জন্য আফগানিস্তানের নাঙ্গারহারে স্থাপিত শিবিরে এসব দেশের ক্যাডারদের প্রশিক্ষণ দেয়া শুরু করেছে দায়েশ। ‘র’ তার রিপোর্টে বলেছে, আইএসআইএল ভারতে তাদের উপস্থিতি প্রতিষ্ঠার জন্য বেপরোয়াভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছে। তারা এ জন্য কেরালার রাজ্যের মতো ভারতের কিছু রাজ্যের তরুণ, যুবককে উদ্বুদ্ধ করে থাকতে পারে। তাদেরকে দলে ভেরানোর পর নিয়ে যাওয়া হয়েছে নাঙ্গারহারে প্রশিক্ষণ শিবিরে। ‘র’ তার রিপোর্টে বলেছে, ধারণা করা হচ্ছে ভারতের ২০ জনের বেশি যুবককে জালালাবাদের কাছে নাঙ্গারহারে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে আইসিস। ধারণা করা হয়, এসব যুবককে প্রথমে উপসাগরীয় দেশগুলোতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এরপর তারা পৌঁছে যায় নাঙ্গারহার শিবিরে। আইসিস সেখানে এসব যুবককে প্রশিক্ষণ দিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড সম্পন্ন করতে ফেরত পাঠাতো ভারতে। উল্লেখ্য, ভারতের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ) সম্প্রতি দক্ষিণ ভারতে বড় ধরনের অভিযান শুরু করেছে। এতে আইসিসের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে এক ডজনেরও বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করেছে। এসব যুবক এ অঞ্চলে সহিংস ঘটনা ঘটানোর পরিকল্পনা করছিল। ভারত সরকারের বিভিন্ন সূত্র বলেছেন, ‘র’ যে রিপোর্ট দিয়েছে তা ভারতের অন্যান্য নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে জানানো হয়েছে, যাতে তারা প্রয়োজনীয় পদেক্ষেপ নিতে পারে। ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, বিশ্বাস করা হয় ভারত ছাড়াও বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের কিছু যুবক নাঙ্গারহার শিবিরে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। ডেকান ক্রনিকল লিখেছে, কয়েক বছরে আইসিস ভারত ও বাংলাদেশের যুবকদের আকৃষ্ট করতে ও তাদেরকে উগ্রবাদী হয়ে উঠতে সামাজিক মিডিয়ায় আগ্রাসী প্রচারণা চালাচ্ছে। তাদের উদ্দেশ্য বাংলাদেশ ও ভারতে পায়ের নিচের মাটি শক্ত করা। ধারণা করা হয়, গত জুলাইয়ে ঢাকায় সন্ত্রাসী হামলায় জড়িতদের উগ্রাবাদে দীক্ষা দিয়েছিল আইসিস। সূত্রগুলো বলেছেন, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার ‘র’-এর রিপোর্ট গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে। একই সঙ্গে এনআইএ ও ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোকে (আইবি) দেশে ও পাশ্ববর্তী অঞ্চলে আইসিসের সব কর্মকা-ের ওপর নিবিড় নজর রাখতে বলা হয়েছে। আইসিসের অপারেশনের ওপর নজরদারি করার জন্য স্পেশাল সেল রয়েছে এনআইএ ও আইবির। একজন সিনিয়র গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেছেন, আইসিস তার ক্যাডারদেরকে আফগানিস্তানে কড়া প্রশিক্ষণ দিচ্ছে যাতে তারা ভারত ও পুরো অঞ্চলের নিরাপত্তার ওপর একটি আঘাত হানতে পারে। যদি এসব সন্ত্রাসী বাংলাদেশ ও মালদ্বীপে তাদের সফলতা পায় তাহলে তা হবে ভারতের আভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য ভয়াবহ। আমরা নিবিড়ভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। 
ভারত ও আফগানিস্তানের মধ্যে নিরাপত্তা বিষয়ক সহযোগিতা বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই নাঙ্গারহার শিবিরকে নিষ্ক্রিয় করে দিতে ভারতীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলো কাজ করছে। সূত্রগুলো আরও বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর সঙ্গে এসব তথ্য শেয়ার করেছে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর রয়েছে বড় ধরনের উপস্থিতি।#

captcha