IQNA

আল কাতিফে সৌদি পুলিশের বর্বরোচিত গুলি: ২ বাংলাদেশি নিহত

20:16 - June 11, 2017
সংবাদ: 2603240
সৌদি আরবের আল কাতিফ শহরে পুলিশের গুলিতে দুই প্রবাসী বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। এ সময় গুরুতর আহত হয়েছেন আরও একজন।

বার্তা সংস্থা ইকনা: গত মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৯ টায় বর্বরোচিত এ হত্যাকাণ্ড ঘটলেও ঘটনার ৫ দিন পর আজ (রোববার) সকালে তাদের পরিবারের সদস্যরা বিষয়টি জানতে পারেন। তাদের মরদেহ সৌদি আরবের দাম্মামের আবুমি হাসপাতালে রাখা হয়।

নিহতরা হলেন- কিশোরগঞ্জের ভৈরব পৌর এলাকার চন্ডিবের গ্রামের নূরুল ইসলামের ছেলে শাহ পরান (৩২) ও একই গ্রামের সুরুজ মিয়ার ছেলে শামীম আহমেদ (৩৯)। সম্পর্কে তারা দু'জন একে অপরের মামাতো-ফুফাতো ভাই। আহত ব্যক্তির নাম মাহাবুব আলম। তিনি ভৈরব উপজেলার ছনছাড়া গ্রামের মতিউর রহমান ভূইয়ার ছেলে।

নিহতদের পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, শাহ পরান ১৪ বছর আগে সৌদিপ্রবাসী হন। এক বছর আগে দেশে এসে তিনি বিয়ে করেন। ছয় মাস আগে আবার সৌদি আরব চলে যান। আর শামীম পেশায় মুরগি ব্যবসায়ী ছিলেন। চার মাস আগে তিনি সৌদি আরব যান। সেখানে গিয়ে তিনি আকামা (বৈধভাবে অবস্থানের অনুমোদন) জটিলতায় পড়েন। আকামা সমস্যা সমাধানের জন্য কোম্পানির মালিকের মাইক্রোবাসে করে শামীম, শাহপরান ও মাহবুব আল কাতিফ শহরে যান। সকাল সাড়ে ৯টায় তারা আল কাতিফ শহরের কাছে পৌঁছে দেখতে পান রাস্তাঘাট ফাঁকা এবং কোনো লোক সমাগম নেই। তখন গাড়িটি থামানোর সঙ্গে সঙ্গে সৌদি পুলিশ তাদেরকে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়ে। এতে শাহ পরান ও শামীম ঘটনাস্থলেই নিহত হন। আর গাড়িচালক মাহবুব গুরুতর আহত হন। দাম্মাম শহরে থাকা তাদের আত্মীয়-স্বজন ৪ দিন খোঁজ করার পর গত শনিবার রাতে ঘটনার খবর পান তারা। পরে রোববার সকালে তারা দেশের বাড়িতে খবর দেন।

এদিকে, শামীম ও শাহপরানের হত্যাকাণ্ডের খবরে দুই পরিবারে চলছে শোকের মাতম। শাহপরানের বৃদ্ধা মা শামসুন্নাহার জাহান অচেতন হয়ে শয্যায় পড়ে আছেন। স্বামী হারিয়ে বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন শামীমের স্ত্রী আলেয়া আক্তার। তিনি বলেন, ‘সংসারে সচ্ছলতা আনার জন্য আমার স্বামী সৌদি আরব গিয়েছিলেন। তার স্বপ্ন ছিল ছেলেমেয়েদের ভালোভাবে পড়ালেখা করাবেন। এখন আমি কীভাবে আমার সন্তানদের পড়ালেখা করাব?’

নিহতদের মরদেহ দেশে আনার ব্যবস্থা করতে বাংলাদেশ সরকারের কাছে অনুরোধ করেছেন শামীম ও শাহপরানের পরিবার।

প্রসঙ্গত, কাতিফ শহরে শিয়া মুসলমানদের ওপর সৌদি বর্বরতা চলছে। এ বর্বরতার ভয়াবহতা কতটুকু তা এই দুই বাংলাদেশি হত্যার ঘটনা থেকেই ধারণা করা যায়। পার্সটুডে
captcha