পার্সটুডের উদ্ধৃতি দিয়ে বার্ত সংস্থা ইকনা'র রিপোর্ট: এ ঘটনার স্মরণে প্রতি বছরই ফার্সি ১৩ অবন (৪ নভেম্বর) সাম্রাজ্যবাদবিরোধী দিবস পালিত হয়। এ উপলক্ষে রাজধানী তেহরানসহ সারাদেশে বিক্ষোভ মিছিলসহ নানা কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। রাজধানী তেহরানসহ দেশের বিভিন্ন শহরে লাখ লাখ মানুষ আমেরিকার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছেন। বিক্ষোভকারীরা মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়েছেন এবং মার্কিন পতাকায় অগ্নিসংযোগ করেছেন।
তেহরানে সাম্রাজ্যবাদবিরোধী জাতীয় দিবসের মূল কর্মসূচি পালিত হয়েছে সাবেক মার্কিন দূতাবাস ভবনের সামনে। সেখানে বিশাল এক সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সমাবেশে বক্তারা সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে অটল থাকার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
১৯৭৯ সালের ১১ই ফেব্রুয়ারি মরহুম ইমাম খোমেনি (রহ.)-এর নেতৃত্বে ইরানে ইসলামী বিপ্লব বিজয় লাভ করে। এর ফলে ইরানে অবসান হয় আড়াই হাজার বছরের রাজতন্ত্রের। আমেরিকার তাঁবেদার স্বৈর শাসনের পতন হয়। উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে আমেরিকা।
ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের নবগঠিত বিপ্লবী সরকারের পতন ঘটানোর লক্ষ্যে আমেরিকা ব্যাপক ষড়যন্ত্র শুরু করে। ওই ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে তেহরানস্থ মার্কিন দূতাবাস নানা পরিকল্পনা হাতে নেয়। তেহরানে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস থেকেই যে ব্যাপক ষড়যন্ত্রের জাল বিছানো হচ্ছে, তা ইরানের বিপ্লবী ছাত্ররা টের পেয়ে যায়। তারা সাহসিকতার সঙ্গে মার্কিন দূতাবাস দখল করে।
মার্কিন দূতাবাস দখলের পর সেখান থেকে ইরান বিরোধী গুপ্তচরবৃত্তির প্রচুর দলিলপত্র উদ্ধার করা হয়। সেসব দলিলপত্র এখনো সংরক্ষিত রয়েছে। দূতাবাস ভবনটি এখনও ইরানে গুপ্তচরবৃত্তির আখড়া হিসেবে পরিচিত। বিপ্লবী ছাত্রদের সেদিনের ওই পদক্ষেপ ইরানের ইসলামি বিপ্লবের ভিত্তিকে আরও শক্তিশালী করেছিল।
ইরানের ইসলামি বিপ্লবের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ এ ঘটনা সম্পর্কে দেশটির সব পর্যায়ের নেতারাই বারবার বক্তব্য দিয়েছেন। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ি এক বক্তব্যে ওই দিনের ঘটনা প্রসঙ্গে বলেছেন, ১৯৭৯ সালের ৪ নভেম্বর তার দেশের ঈমানদার ও সাহসী যুবকরা তেহরানে মার্কিন দূতাবাস দখলের মাধ্যমে এটা আবিষ্কার করে যে সেটা আসলে ছিল গুপ্তচরবৃত্তির আখড়া এবং তারা তা বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরে।
সর্বোচ্চ নেতা আরও বলেছেন, মার্কিন সরকার সাম্রাজ্যবাদী চরিত্রের হওয়ায় সব দেশের ঘরোয়া বিষয়ে হস্তক্ষেপে বিশ্বাসী, কিন্তু ইরানি জাতি ইসলামী বিপ্লবের মাধ্যমে আমেরিকার বলদর্পিতা ও কর্তৃত্বকামিতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় এবং বিপ্লবের বিজয়ের পরও তাদের দেশে সাম্রাজ্যবাদের শেকড় কেটে দেয়; আর এভাবে তারা অন্য অনেক দেশের বিপরীতে বিপ্লবের কাজকে অর্ধ-সমাপ্ত রাখেনি বলেই ওইসব দেশের বিপ্লবীদের মতো ক্ষতির শিকারও হয়নি। iqna