এ মাসের শুরুর দিকে ৫৭ মুসলিম রাষ্ট্রের জোট ওআইসির সম্মেলনে পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি এ নিয়ে সরাসরি হুমকিও দিয়ে বসেন।
তিনি বলেন, ‘আমি ওআইসি-কে আবার বলছি, আমরা চাই পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের একটা সম্মেলন হোক। আপনাদের পক্ষে তা সম্ভব না হলে কাশ্মীর প্রশ্নে যে দেশগুলো পাকিস্তানের পাশে দাঁড়াতে প্রস্তুত, তাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের নিয়ে সম্মেলন আয়োজনের বিষয়ে আমি প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে কথা বলতে বাধ্য হবো।’
এমন মন্তব্যে অবশ্য পাকিস্তানের প্রত্যক্ষ কোনো সুবিধা হয়নি। বরং ফিনান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এমন মন্তব্যে ক্ষুব্ধ সৌদি আরব ইতোমধ্যে তেল ঋণ সংক্রান্ত ৩২ লাখ ডলারের প্রস্তাব স্থগিত করে আগের পাওনা ৩০০ কোটি ডলার পরিশোধের জন্য চাপও দিতে শুরু করেছে পাকিস্তানকে।
তবে পরিস্থিতি যে ভালো নয় তা বুঝতে পেরেছে ইমরান খান সরকার। দৈনিক ডনসহ পাকিস্তানের জাতীয় গণমাধ্যমগুলোর একাংশ মনে করে, উদ্ভূত পরিস্থিতি সামাল দিতে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়াকে সম্প্রতি সৌদি আরবে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু তিনি যুবরাজ সালমানের সাক্ষাৎ পাননি।
কাশ্মীর প্রশ্নে কী চায় পাকিস্তান?
ওয়াশিংটনভিত্তিক উড্রো উইলসন সেন্টার ফর স্কলার্সের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক বিশেষজ্ঞ মিশায়েল কুগালমান মনে করেন, কাশ্মীর প্রশ্নে পাকিস্তান বহির্বিশ্বে যেমন সমর্থন আশা করেছিল তা একেবারেই পায়নি। অন্যদিকে পাকিস্তানের সাম্প্রতিক কিছু কাজের সমালোচনা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষ করে জম্মু এবং কাশ্মীরকে অন্তর্ভুক্ত করে নতুন মানচিত্র উন্মোচনের মাঝে দেশে সাধারণ মানুষের সাময়িক হাততালি ছাড়া আর কিছু প্রাপ্তির আশা নেই বলেও মনে করেন তারা।
কে আছে, কে নেই?
ইসলামাবাদের কায়েদে আজম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারি অধ্যাপক রাজা কায়সার আহমেদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, চলমান পরিস্থিতিতে কাশ্মীর প্রশ্নে আক্রমণাত্মক কূটনীতিতে আস্থা রাখা উচিত পাকিস্তানের। অথচ এ সময়েও চীন, মালয়েশিয়া আর তুরস্ক ছাড়া আরো কাউকে পাশে পাচ্ছে না পাকিস্তান।
জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধ্যাপক ভালি নাসির মনে করেন, সৌদি আরবের কাছে ভারত হলো বড় এক বাণিজ্যিক বন্ধু, ফলে তারা চায় না দিল্লির সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হোক। আর তাই পাকিস্তান কাশ্মীর ইস্যুতে ভারতকে চাপ দেওয়ার দাবি তোলায় উল্টো পাকিস্তানকে চাপ দিচ্ছে সৌদি আরব।
সূত্র: ডয়েচে ভেলে