IQNA

ফের নিষেধাজ্ঞা: খাদ্য ক্রয় ও করোনা চিকিৎসার শেষ সুযোগও কেড়ে নিতে চায় ওয়াশিংটন

21:08 - October 09, 2020
সংবাদ: 2611612
তেহরান (ইকনা): যুক্তরাষ্ট্র ২০১৮ সালের মে মাসে পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর নিষেধাজ্ঞা দেয়ার মাধ্যমে ইরানের ওপর সর্বাত্মক চাপ সৃষ্টির নীতি গ্রহণ করে। কিছু দিন পরপরই তারা ইরানের ওপর নতুন কোনো না কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দিচ্ছে।

মার্কিন অর্থমন্ত্রণালয় নতুন করে ইরানের ১৮টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দিয়েছে। মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্টিভেন মানুচিন ইরানের বিরুদ্ধে এ নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, অবৈধপন্থায় ইরান যাতে ডলার সংগ্রহ করতে না পারে সেজন্যই এ নিষেধাজ্ঞা। তিনি বলেন যতক্ষণ পর্যন্ত ইরান পরমাণু কর্মসূচি থেকে সরে না আসবে ততক্ষণ পর্যন্ত এসব নিষেধাজ্ঞা বলবত থাকবে।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ইরানের ১৮টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ওপর নতুন করে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরোপের ফলে আন্তর্জাতিক অর্থ ব্যবস্থার সাথে ইরানের ব্যাংকগুলোর সরাসরি যোগাযোগের সব পথ বন্ধ হয়ে যাবে। এতে করে ইরানের জনগণ আরো বেশি ভোগান্তির মুখে পড়বে। যদিও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি করেছেন, মানবিক বিষয়গুলো ছাড়া অন্য সব ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। কিন্তু নতুন এ নিষেধাজ্ঞার ফলে ওষুধ ও অন্যান্য জরুরি পণ্য সামগ্রীসহ কোনো ধরনের পণ্যই ইরান বাইরে থেকে আমদানি করতে পারবে না। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাওয়াদ জারিফ বলেছেন, ব্যাংকের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা দেয়ার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র আসলে ইরানের খাদ্য আমদানি ও করোনা চিকিৎসার অবশিষ্ট সুযোগও কেড়ে নেয়ার চেষ্টা করছে।

মোটকথা, পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর মার্কিন সরকার ইরান যাতে কোনো ধরনের পণ্যই আমদানি করতে না সে জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ব্যাংকের ওপর আগেও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। কিন্তু এবার দ্বিতীয় ধাপের নিষেধাজ্ঞা দেয়ার মাধ্যমে ইরানের ব্যাংকগুলো ছোট ছোট যেসব সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ভিন্ন পথে জরুরি পণ্য আমদানি করত সেই পথও তারা আটকে দিল। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পরবর্তী টার্গেট হচ্ছে, ইরান বিরোধী নিষেধাজ্ঞার জাল এমনভাবে বিস্তার করা যাতে ডেমোক্রেট দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জো বাইডেন নির্বাচনে জেতার পর পরমাণু সমঝোতায় ফিরে যেতে না পারেন।

মার্কিন কংগ্রেসে ইরান বিরোধী নিষেধাজ্ঞার প্রণেতারা বলেছেন, ইরানকে আলোচনার টেবিলে বসতে বাধ্য করাই ওই দেশটির ওপর চাপ সৃষ্টির মূল উদ্দেশ্য। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও বলেছেন, ইরান যতক্ষণ পর্যন্ত আলোচনায় না আসবে ততক্ষণ পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা বলবত থাকবে। এমন সময় তিনি এ কথা বললেন যখন এরই মধ্যে ইরানের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ নিষেধাজ্ঞার মার্কিন নীতি কার্যত ব্যর্থ হয়েছে এবং ইরানকে আলোচনায় বসাতেও তারা সফল হবে না। এর আগে ট্রাম্প বলেছিলেন, ইরানের ওপর এমনভাবে চাপ সৃষ্টি করা হবে যে দেশটি আলোচনার টেবিলে ফিরে আসতে বাধ্য হবে। কিন্তু ওই ঘোষণার দুই বছর পেরিয়ে গেলেও ট্রাম্পের সে স্বপ্ন আজও পূরণ হয়নি।

যাইহোক সর্বশেষ নতুন নিষেধাজ্ঞা দিয়ে মার্কিন প্রশাসন ইরানকে নতজানু করার চেষ্টা করবে। কিন্তু অতীত অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে ইরান মার্কিন আবদারের কাছে কখনোই নতি স্বীকার করেনি।
সূত্র: পার্সটুডে

captcha