
মার্কিন ডেমোক্রেট দলের সিনেটর ক্রিস মারফি সৌদি আরবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে রিপাবলিকান দলের প্রতিনিধিদের নীরবতার তীব্র সমালোচনা করে এক টুইটবার্তায় বলেছেন, নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন শিগগিরি ক্ষমতা হাতে নিতে যাচ্ছেন। এ অবস্থায় সৌদি সরকার মানবাধিকার রক্ষায় তাদের স্বদিচ্ছার প্রমাণ হিসেবে রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি ও জুলুম নির্যাতন বন্ধ রাখতে পারতো। কিন্তু তা না করে ড্রাইভিং শেখার অধিকার চাওয়ার অপরাধে সৌদি সরকার ওই মানবাধিকার আন্দোলনকর্মীকে কারাদণ্ড দিল।
এ ব্যাপারে এক প্রতিক্রিয়ায় রিপাবলিকান দলের সিনেটর ও সিনেটের পররাষ্ট্র সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির প্রধান জিম রিশ সৌদি সরকারের এ আচরণের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, মানবাধিকার কর্মীর বিরুদ্ধে সৌদি আদালতের এ রায়ে আমি খুবই হতাশ হয়েছি।
বাস্তবতা হচ্ছে, সৌদি সরকার দীর্ঘদিন ধরে সরকার বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও মানবাধিকার আন্দোলনকারী ও সমালোচকদের গ্রেফতার করে কারাগারে নিক্ষেপ করছে। তাদের ওপর জুলুম নির্যাতন চালাচ্ছে এবং সরকার বিরোধী বহু ব্যক্তিকে গুম করা হয়েছে। সৌদি সরকার সেদেশের অভ্যন্তরে জুলুম নির্যাতন চালানো ছাড়াও ২০১৫ সাল থেকে ইয়েমেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে আসছে এবং এ পর্যন্ত হাজার হাজার নিরীহ ইয়েমেনিকে তারা হত্যা করেছে ও তাদের ঘরবাড়ি ধ্বংস করেছে।
সৌদি সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মহলে ব্যাপক সমালোচনা হলেও ওয়াশিংটন এ ব্যাপারে সম্পূর্ণ নীরব রয়েছে। সৌদি আরবের মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রধান শরীক হচ্ছে মার্কিন সরকার। বিশেষ করে বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার দেশের অর্থনীতির স্বার্থে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি উপেক্ষা করে সৌদি আরবের কাছে কোটি কোটি ডলার মূল্যের অস্ত্র বিক্রি করেছেন। আর সেইসব অস্ত্র দিয়ে সৌদি আরব সন্ত্রাসীদেরকে পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে কিংবা ইয়েমেনের মতো দেশে গণহত্যা চালাচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্র সরকার বাক স্বাধীনতা ও মানবাধিকার রক্ষার কথা বললেও সৌদি আরবের অপরাধযজ্ঞের ব্যাপারে সম্পূর্ণ নীরব রয়েছে। তবে নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সৌদি আরবের ব্যাপারে সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নীতি থেকে কিছুটা সরে এসেছেন বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু আমেরিকার অতীত ইতিহাস থেকে বোঝা যায় যে সরকারই ক্ষমতায় থাকুক না কেন সৌদি আরবে গণতন্ত্র কিংবা মানবাধিকার পরিস্থিতির চাইতে সৌদি পেট্রোডলারের গুরুত্ব ওয়াশিংটনের কাছে সবচেয়ে বেশি।
সূত্র: পার্সটুডে