আইআরআইবি’র বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা ইকনা: পশ্চিমা যুবসমাজের উদ্দেশে লেখা দ্বিতীয় চিঠিতে তিনি এই আহ্বান জানান। আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী বলেন, “সমাজের ফাটলগুলোকে গভীর করার পরিবর্তে ভরাট করতে হবে। সন্ত্রাস বিরোধী যুদ্ধের নামে তড়িঘড়ি প্রতিক্রিয়া দেখানো হবে মস্তবড় ভুল যা বিদ্যমান ফাটলগুলোকে আরো বড় করে তুলবে।”
তিনি বলেন, “বর্তমানে ইউরোপ ও আমেরিকায় বসবাস করছে কোটি কোটি মুসলমান যারা সেখানকার সমাজের নানা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছে। যেসব হঠকারী ও ত্বরিৎ পদক্ষেপ এই মুসলিম সমাজে ভীতি ও শঙ্কা তৈরি করে এবং অতীতের চেয়ে আরো বেশি করে তাদের অধিকার লঙ্ঘিত হয় এবং সমাজের মূলধারা থেকে তাদেরকে সরিয়ে দেয় সেসব পদক্ষেপের ফলে সমস্যার সমাধান তো হবেই না বরং উল্টো সেই ফাটল ও বিদ্বেষকে আরো গভীর করে তুলবে। প্রতিক্রিয়াশীল যেকোনো পদক্ষেপ বিশেষ করে সেটিকে যদি আইনি রূপ দেয়া হয় তাহলে তাতে বিদ্যমান শ্রেণিবিভাগকে উস্কে দেয়া এবং নতুন নতুন সংকটের পথ উন্মুক্ত করে দেয়া ছাড়া অন্য কোনো ফল পাওয়া যাবে না।”
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া খবরের বরাত দিয়ে বলেন, “কোনো কোনো ইউরোপীয় দেশে এমন আইন করা হয়েছে যার ফলে কিছু নাগরিককে মুসলমানদের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তিতে বাধ্য করা হচ্ছে। এই আচরণগুলো অত্যন্ত অন্যায় এবং আমরা সবাই জানি অন্যের প্রতি অন্যায় আচরণ কোনো না কোনোভাবে নিজের প্রতি ফিরে আসে। এ ছাড়া, মুসলমানরা এমন অকৃতজ্ঞ আচরণের শিকার হওয়ার যোগ্য নন।”
পশ্চিমা যুবসমাজের উদ্দেশে লেখা চিঠির শেষাংশে তিনি বলেন, “পশ্চিমা দুনিয়া বহু শতাব্দি ধরে মুসলমানদের সঙ্গে ওঠাবসা করেছে। এক সময় তারা মুসলিম দেশগুলোতে উপনিবেশ স্থাপন করে সেইসব দেশের সম্পদ লুণ্ঠন করেছে এবং বর্তমানে মুসলমানদেরকে তাদের নিজেদের দেশে আপ্যায়ন করে বিভিন্নভাবে তাদের সেবা গ্রহণ করেছে। দু’টি ক্ষেত্রেই মুসলমানরা পশ্চিমাদের সঙ্গে অত্যন্ত সদয় আচরণ করেছে ও ধৈর্যের চরম পরাকাষ্ঠা দেখিয়েছে। কাজেই আমি তোমাদের কাছে প্রত্যাশা করব, তোমরা গভীর দৃষ্টি দিয়ে ইসলাম সম্পর্কে একটি স্বচ্ছ ধারণা লাভ করার পাশাপাশি অতীত অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে মুসলিম বিশ্বের ব্যাপারে একটি সঠিক ও সম্মানজনক পন্থা অবলম্বন করবে। তখন দেখবে, অচিরেই এই ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত ভবনটি তার নির্মাতাদের ওপর বিশ্বাস ও আস্থা সৃষ্টিকারী ছায়া বিস্তার করবে, তাদেরকে শান্তি ও নিরাপত্তা উপহার দেবে এবং বিশ্ব অঙ্গনে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের প্রতি আশার আলোর সঞ্চার করবে।”