
সাউত পাকিস্তান ওয়েবসাইটের বরাত দিয়ে ইকনা জানায়, ভারতের মুসলিমরা তাদের পবিত্র স্থানগুলোকে কোণঠাসা করা ও লক্ষ্যবস্তু করার একটি অভিযানের মুখোমুখি হচ্ছেন, যা তাদের মৌলিক অধিকার আরও ক্ষুণ্ন করার হুমকি সৃষ্টি করছে।
এই বৈষম্যমূলক কর্মকাণ্ডের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য উদাহরণ হিমাচল প্রদেশের শিমলা শহরে সঞ্জাওলি মসজিদের উপরের তলা ধ্বংস। কর্তৃপক্ষের বাজেট অনুমোদনের পর মসজিদের উপরের তলা ভেঙে ফেলার কাজ শুরু হয়েছে।
এর আগে এই মসজিদের দুটি তলা ধ্বংস করা হয়েছে, যা স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। তারা মনে করছেন, এটি মুসলিম সম্প্রদায় ও তাদের উপাসনালয়কে ইচ্ছাকৃতভাবে লক্ষ্য করে নেওয়া হচ্ছে।
মসজিদ কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ লতিফ এই কর্মকাণ্ডে গভীর ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, এর কোনো যুক্তিসংগত কারণ নেই, বরং এটি দেশে মুসলিমদের উপস্থিতি কমিয়ে আনা ও দুর্বল করার একটি পদ্ধতিগত নীতির অংশ।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, স্থানীয়দের ব্যাপক প্রতিবাদ ও ধর্মীয় অনুভূতি সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষ এই পদক্ষেপ নিয়েছে।
এই ঘটনা শুধু সঞ্জাওলি মসজিদে সীমাবদ্ধ নয়। উত্তরাখণ্ডে কান্ডুগাল গ্রামের একটি মসজিদের প্রথম ও দ্বিতীয় তলা নিবন্ধন বা নির্মাণ অনুমতির অভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
অথচ একই এলাকায় অনেক অবৈধ ভবন টিকে আছে, কিন্তু উপাসনালয়গুলোকে লক্ষ্য করা কর্তৃপক্ষের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। এ ধরনের তাড়াহুড়ো কর্মকাণ্ড মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে অসুরক্ষা ও ভবিষ্যতে এই নীতির আরও তীব্রতার আশঙ্কা সৃষ্টি করেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই কর্মকাণ্ড সরকার-সমর্থিত ইসলামবিদ্বেষের বৃহত্তর কাঠামোর অংশ। তারা উল্লেখ করেন, নরেন্দ্র মোদির সরকার আইনি ও প্রশাসনিক হাতিয়ার ব্যবহার করে মুসলিম সম্প্রদায়কে কোণঠাসা করছে এবং তাদের ধর্মীয় স্বাধীনতা সীমিত করছে।
মোদি ক্ষমতায় আসার পর থেকে ভারতে হিন্দু পরিচয়কে শক্তিশালী করা এবং সংখ্যালঘু— বিশেষ করে মুসলিমদের (দেশের জনসংখ্যার প্রায় ১৪%)— দুর্বল করার নীতি কার্যকর করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের বিশ্বাস, বর্তমান সরকার মসজিদের ওপর নতুন আইন চাপিয়ে দেওয়া বা ধর্মীয় কার্যক্রমের নিয়ন্ত্রণ বাড়ানোর মতো স্বেচ্ছাচারী পদক্ষেপের মাধ্যমে মুসলিমদের লক্ষ্য করে একটি পরিবেশ তৈরি করছে। এই নীতি শুধু মসজিদের ভৌতিক ধ্বংসে সীমাবদ্ধ নয়, বরং ব্যক্তিগত স্বাধীনতা, ধর্মীয় অনুশীলন এবং শিক্ষাকেও সীমিত করছে। 4324459#