IQNA

ইরানের বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা বিশ্ব অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর

20:56 - July 24, 2022
সংবাদ: 3472171
তেহরান (ইকনা): ইরানের বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা বিশ্ব অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর উল্লেখ করে দেশটির প্রেসিডেন্ট বলেন: পারমাণবিক শক্তি সংস্থায় রেজুলেশন জারি করা ছিল ইরানি জাতির বিরুদ্ধে চাপ সৃষ্টির লক্ষ্যে একটি সংকট সৃষ্টিকারী পদক্ষেপ, যা রাজনৈতিক আস্থায় আঘাত করেছে।
১২০ মিনিটের টেলিফোন কথোপকথনে, প্রেসিডেন্ট আয়াতুল্লাহ সাইয়্যেদ ইব্রাহিম রায়িসি এবং ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা জোরদার করার উপায়, সেইসাথে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন এবং খাদ্য নিরাপত্তা ও জ্বালানি নিরাপত্তা সহ প্রধান বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন।
 
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রেসিডেন্ট আয়াতুল্লাহ সাইয়্যেদ ইব্রাহিম রায়িসি বলেছেন, সম্প্রতি ভিয়েনায় আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা বা আইএইএ'র নির্বাহী বোর্ডের সভায় তেহরানের বিরুদ্ধে প্রস্তাব ইরানি জাতির বিরুদ্ধে চাপ সৃষ্টির লক্ষ্যে একটি সংকট সৃষ্টিকারী পদক্ষেপ।
প্রেসিডেন্ট সাইয়্যেদ ইব্রাহিম রায়িসি (শনিবার) ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে টেলিফোনালাপে ইরানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলোর কর্মকাণ্ড ও অগঠনমূলক অবস্থানের কথা উল্লেখ করে বলেন, আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থায় ইরানের বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাসের ফলে রাজনৈতিক আস্থায় একটি ধাক্কা লেগেছে।
ইরানের বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তিন ইউরোপীয় দেশ যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স এবং জার্মানির মাধ্যমে প্রস্তাবিত এ  প্রস্তাবটি  গত  8 জুন  আন্তর্জাতিক আণবিক সংস্থার নির্বাহী বোর্ডের ত্রৈমাসিক সভায় চীন ও রাশিয়ার তীব্র বিরোধিতা সত্ত্বেও অনুমোদিত হয়। ইহুদিবাদী ইসরাইলের মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্যের ওপর ভিত্তি করে আইএইএ'র মহাপরিচালক ইরানের বিরুদ্ধে তড়িঘড়ি ও ভারসাম্যহীন প্রতিবেদন তৈরি করে। সংস্থার অগঠনমূলক পদক্ষেপের পাশাপাশি প্রস্তাব পাসের কারণে ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানও এর বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা নিয়েছে যার মধ্যে রয়েছে উন্নত সেন্ট্রিফিউজ স্থাপন এবং নিরাপত্তা ক্যামেরা নিষ্ক্রিয় করা।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার ইউরোপীয়  মিত্র দেশগুলোর ইরান-বিরোধী পদক্ষেপে মাধ্যমে এটাই প্রমাণ হচ্ছে যে ইরানের উপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আলোচনায় পশ্চিমা দলগুলো ইরানকে চাপে রাখার পাশাপাশি ভিয়েনা আলোচনায় সৃষ্ট অচলাবস্থার ক্ষতিপূরণ এড়িয়ে যাওয়ার জন্য তারা আইএইএর রাজনৈতিক প্রস্তাবকে একটি হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করার অপচেষ্টা করছে। 
প্রকৃতপক্ষে, আমেরিকা আইএইএ এবং এর প্রযুক্তিগত সমস্যাগুলিকে অপব্যবহারের মাধ্যমে ইরানকে তার আইনি ও বৈধ দাবিগুলো থেকে পিছু হঠতে বাধ্য করার চেষ্টা করছে ।
এটা স্পষ্ট যে নিষেধাজ্ঞার ধারাবাহিকতা, আইএেইএতে ইরান বিরোধী প্রস্তাব এবং কূটনীতির দ্বৈত নীতির ব্যবহার এবং ইরানের বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগ কেবল ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে আস্থা-নির্মাণের পদক্ষেপ বিরোধীই নয় বরং প্রত্যেক আলোচনায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বারবার তার অযৌক্তিক এবং অপ্রাসঙ্গিক দাবি নিয়ে হাজির হচ্ছে। অথচ ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের কর্তৃপক্ষ বারবার জোর দিয়ে বলছে যে ইরান কখনই অন্য পক্ষের অবাস্তব দাবির কাছে নতি স্বীকার করবে না।
ইরানের ইসলামি প্রজাতন্ত্রের প্রেসিডেন্ট ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের সাথে টেলিফোনালাপে ইরানের অবস্থানের কথা আবারও স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেছেন, তার দেশের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়গুলোর পূর্ণ সমাধানের পাশাপাশি চুক্তির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর পূর্ণ আনুগত্য এবং তেহরানের অর্থনৈতিক স্বার্থ নিশ্চিত করা হলেই কেবল ইরান একটি সমঝোতায় আবদ্ধ হতে প্রস্তুত। 
এছাড়া, সাইয়্যেদ ইব্রাহিম রায়িসি ম্যাকরনের সঙ্গে টেলিফোনালাপে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাথে ইরানের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধির প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, ইরানের বিরুদ্ধে অবৈধ মার্কিন নিষেধাজ্ঞা বৈশ্বিক অর্থনীতি বিশেষ করে ইউরোপের জন্য  অত্যন্ত ক্ষতিকর।  
এই প্রসঙ্গে ব্লুমবার্গ নিউজ এজেন্সি ইরানের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আলোচনার উত্থান-পতনের কথা উল্লেখ করে লিখেছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের চুক্তি পুনরুজ্জীবিত করার আশা ক্রমশ  ম্লান হয়ে যাচ্ছে, যদিও বিশ্বে এখন তেলের প্রয়োজন আগের চেয়ে বহুগুণ বেশি। 4072830
 
captcha