IQNA

কুরআন কি? / ৩৬

কুরআন , করুণাময় এক পরামর্শদাতা

0:36 - November 06, 2023
সংবাদ: 3474611
তেহরান (ইকনা): কুরআনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল এটি পথপ্রদর্শক। এটি এমন একটি বই যা মানুষকে কোনোভাবেই প্রতারিত করে না এবং তাদের উন্নত জীবনযাপনে সহায়তা করে।

এটা অনেক মানুষের সাথে ঘটেছে যে মানুষ তাদের জীবনের পথে এসে ধূর্ততা এবং কূটকৌশলের সাথে সহানুভূতিশীল হিসাবে নিজেকে উপস্থাপন করেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা প্রতিপক্ষকে বোকা বানিয়ে তাকে নিরাপদে জীবনের পথ থেকে তুলে নিয়ে যায়। এ ধরনের লোকের অস্তিত্ব থাকলেই পথপ্রদর্শক হিসেবে কুরআনের গুরুত্ব স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
আমিরুল মুমিনীন আলী (আ.) নাহজুল বালাগায় কুরআনের জন্য যে গুণাবলীর কথা উল্লেখ করেছেন তার মধ্যে একটি হল কুরআন হচ্ছে উপদেশদাতা। উপদেশ প্রদানের অর্থ হল কাউকে সঠিক পথে পরিচালিত করা এবং ভালো কাজ করা। হযরত ইমাম আলী (আ.) বলেনঃ وَ اسْتَنْصِحُوهُ عَلَى أَنْفُسِكُمْ ؛  কুরআন দিয়ে নিজেকে উপদেশ দিন। )  নাহজুল বালাগায়; খুতবা ১৭৬(
এই লেখাটি পড়ার পর একটি প্রশ্ন যা জাগতে পারে তা হল, একজন মানুষের কুরআনের বিরুদ্ধে কী পরামর্শ দেওয়া উচিত? শব্দ (انفس: جمع نفس/ নাফসের বহুবচন আনফুস) অনুসারে এই প্রশ্নের উত্তর নির্ধারিত হয়। এটি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলা উচিত যে মানুষের নাফসের স্তর রয়েছে এবং তা নিম্নরূপ:


  • 1.    নাফসে আম্মারা (نفس اماره) : নাফসে আম্মারা শব্দের আক্ষরিক অর্থ খারাপ বা মন্দের আদেশ করা। এই অবস্থা একজন মানুষ অন্যকে গুনাহের দিকে ডাকে এবং যেহেতু পাপ যুক্তির বিরুদ্ধে কাজ, এই অবস্থায় মানুষ যুক্তি মানে না। নাফসে আম্মারা একজন মানুষের সর্বনিম্ন স্তরের নাফস এবং ইসলামী হাদিসে সর্বদা এই বিদ্রোহী নাফসের বিরুদ্ধে লড়াই করার কথা বলা হয়েছে।

  • 2.    নাফসে লাওয়ামা (نفس لوامه) : লাওয়ামা এর আক্ষরিক অর্থ দোষারোপকারী। একজন মানুষ যখন কোনো অন্যায় বা গুনাহ করে, তখনই সে অনুতপ্ত হয় এবং নিজেকে দোষারোপ করে। এটি নাফসে লাওয়ামা বিশেষ গুন। নফস লাওয়ামা এই নামকরণের কারণ কুরআনের আয়াত থেকে নেওয়া হয়েছে। সূরা কিয়ামতের দ্বিতীয় আয়াতে আল্লাহ বলেন: وَلَا أُقْسِمُ بِالنَّفْسِ اللَّوَّامَةِ আরও শপথ করছি (মন্দকর্মে) ভর্ৎসনাকারী আত্মার।

  • 3.    নাফসে মুতমায়িন্না (نفس مطمئنه) : মানুষের সর্বোচ্চ অবস্থা হল নাফসে মুতমায়িন্না। একটি নাফসে মুতমায়িন্না বা আত্মবিশ্বাসী আত্মার অর্থ হল একজন ব্যক্তি গুনাহ না করে যুক্তি অনুসরণ করে আত্মবিশ্বাস এবং মানসিক শান্তিতে পৌঁছেনো, যাতে এটি তার অভ্যাস হয়ে যায়।  সূরা ফাজরে আল্লাহ বলেন: يا أَيَّتُهَا النَّفْسُ الْمُطْمَئِنَّةُ ارْجِعِي إِلى رَبِّكِ راضِيَةً مَرْضِيَّةً فَادْخُلِي فِي عِبادِي وَ ادْخُلِي جَنَّتِی ؛ হে প্রশান্ত আত্মা! (২৮) তুমি তোমার প্রতিপালকের নিকট ফিরে এস সন্তুষ্টচিত্তে ও সন্তোষভাজন হয়ে, (২৯) আমার বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত হও, (৩০) এবং আমার জান্নাতে প্রবেশ কর। 
    সূরা ফাজর, আয়াত: ২৭ থেকে ২৯
captcha