মাযুরা ( মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ) ইসরাইলের প্রতিরক্ষা কারী ঢাল বা শিল্ডের ব্যবধান ও ফাঁক ফোকর সমূহ বন্ধ করার ব্যাপারে সাহায্য করতে ত্বরা করছে । গত রোববার বাইডেন প্রশাসন ইসরাইলে একটি থাড অ্যান্টি মিসাইল ব্যাটারি মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছে , ইরানের ওপর ইসরাইলের কাঙ্খিত প্রতিশোধ মূলক আঘাত হানার আগেভাগেই।
* " ইসরাইলের গোলাবারুদ সমস্যা ( ঘাটতি ও অভাব এখন ) ভীষণ ও তীব্র। " - মধ্য প্রাচ্যের দায়িত্ব ভারপ্রাপ্ত প্রাক্তন মার্কিন সিনিয়র প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা ডানা স্ট্রাওল এ কথা উল্লেখ করে আরো বলেন : " যদি ইরান ইসরাইলের কোনো হামলার পাল্টা জবাব দেয় এবং হিযবুল্লাহও যদি যোগ দেয়-
* তাহলে ইসরাইলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা টানাটানির মধ্যে পড়ে যাবে । " তিনি আরো বলেন : " মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র ভাণ্ডার তো আর অফুরন্ত ও অসীম নয় । "
****
FT - এর এ প্রতিবেদন থেকে স্পষ্ট হয়ে যায় যে ইসরাইলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা [ আয়রন ডোম , ডেভিড'স স্লিং বা দাউদের গুলতি, তীর ( অ্যারো ) ২ ও ৩ ] , মার্কিন প্যাট্রিয়ট প্রভৃতির আকাশ প্রতিরক্ষার ক্ষেপণাস্ত্রের তীব্র ঘাটতির সম্মুখীন। খুব সাদামাটা ও সস্তা ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে হামাস , হিযবুল্লাহ এবং অন্যান্য প্রতিরোধ আন্দোলনের যোদ্ধারা ইসরাইলের আকাশ প্রতিরক্ষাকারী ক্ষেপণাস্ত্রের ভাণ্ডার ফুরিয়ে দিয়েছেন যার ফলে বিশেষ করে ইরানী ক্ষেপণাস্ত্র সমূহ ইসরাইলের আকাশ প্রতিরক্ষাকারী ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা ধ্বংস করে ফেলে। এ ভাবে ইসরাইলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা অকেজো হয়ে যাওয়ার কারণে ইরান , হামাস , হিযবুল্লাহ , ইয়ামানী আনসারুল্লাহ , ইরাকী প্রতিরোধ গ্রুপ সমুহের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হচ্ছে। আর ফাইনান্সিয়াল টাইমসের উক্ত প্রতিবেদনে উল্লেখিত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ইন্টারসেপ্টর মিসাইলের তীব্র ঘাটতি ও অভাবের কারণে ১লা অক্টোবরে ইসরাইলে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা সফল হয়েছে এবং ইসরাইলের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করেছে। ঘাটতি এতটাই প্রকট যে এরফলে মাযুরা (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) তার সর্বাধুনিক থাড আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার একটি ব্যাটারি ইসরাইলে তরিঘরি করে মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছে !! তার মানে হামাস ও হিযবুল্লাহর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ও আগ্রাসনে ইসরাইলের অবস্থা মোটেও ভালো নেই । আর এ ভাবে যুদ্ধ চলতে থাকলে ও স্থায়ী হলে ইসরাইলী জেনারেল ইসহাক ব্রিকের ভবিষ্যদ্বাণীও সত্য হবে ও ফলবে। ঐ ইসরাইলী জেনারেল গত ২২ অগাষ্ট বলেছিল: হামাসের বিরুদ্ধে আরো এক বছর যুদ্ধ অব্যাহত রাখলে ইসরাইলেরই পতন ঘটবে। শুধু জেনারেল ইসহাক ব্রিকের ভবিষ্যদ্বাণী নয় বরং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র নীতির রূপকার প্রাক্তন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড: হেনরি কিসিঞ্জার ( যিনি ছিলেন নিজেও যায়নবাদী ও ইহুদী )
এবং ১৬ টি মার্কিন ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি ২০১৩ সালে ঐকমত্য পোষণ করেছিলেন যে অদূর ভবিষ্যতে ইসরাইল আর টিকে থাকবে না । ঐ সময় ( ২০১৩ সালে ) নিউ ইয়র্ক পোস্ট হেনরি কিসিঞ্জারের উদ্ধৃতি দিয়েছে : " দশ বছরের মধ্যে ইসরাইলই আর বিদ্যমান থাকবে না! " ( In 10 years there will be no more Israel )
আর ঐ ১৬ টি মার্কিন ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি একমত যে ইসরাইল আসন্ন ফিলিস্তিন পন্থী অপ্রতিরোধ্য শক্তি ও আন্দোলন যা আরব বসন্ত , ইসলামী জাগরণ এবং ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের উত্থানের সমন্বয়ে গঠিত তা প্রতিরোধ ও সহ্য করতে পারবে না ( Israel cannot withstand the coming pro - Palestine juggernaut consisting of the Arab Spring , the Islamic Awakening and the rise of the Islamic Republic of Iran .)
বিস্তারিত জানার জন্য দেখুন Kevin Barrett প্রণীত Kissinger , US intelligence endorse " a world without Israel " প্রবন্ধটি , হলিডে ( Holiday ) , শুক্রবার ২২ - ৩ - ২০১৩
গত ৭ অক্টোবর ২০২৩ থেকে তূফানুল আকসা অভিযানের মধ্য দিয়ে ইসরাইল তার অস্তিত্ব সংকটের বেড়াজালে আটকে গিয়েছে এবং এক বছরের অধিক কাল হামাস ও গাযার বিরুদ্ধে আগ্রাসন ও যুদ্ধ চালিয়ে বিজয়ী ও সফল হতে পারে নি দখলদার ইসরাইলী সেনাবাহিনী এবং বর্তমানে লেবাননের হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে ইসরাইল । আর এ যুদ্ধে ইরাকের প্রতিরোধ সংগ্রামী গ্রুপ সমুহ ও ইয়ামান হামাস ও ফিলিস্তিনীদের পক্ষে ইসরাইলের বিরুদ্ধে যোগদান করেছে এবং ইরান ইসরাইলের অভ্যন্তরে দু ' বার সফল ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলনের বিরুদ্ধে ইসরাইলের যুদ্ধ যা দীর্ঘ মেয়াদী ও স্থায়ী এবং ইসরাইলের অভ্যন্তর পর্যন্ত সম্প্রসারিত হয়েছে তা আসলে ইসরাইলকে বিলুপ্তি ও পতনের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে । কারণ ইসরাইলের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রথম প্রধানমন্ত্রী ডেভিড বেন গোরিওনের মতে যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী ও তা ইসরাইলের অভ্যন্তর পর্যন্ত সম্প্রসারিত হলে ইসরাইল আর টিকে থাকতে পারবে না !!!
ইসরাইলী সংবাদ মাধ্যম ynet.news : ইসরাইল তীব্র ইন্টার্সেপ্টর মিসাইল ঘাটতির সম্মুখীন।
( আর ইন্টারসেপ্টর মিসাইলের ঘাটতি মানে ইসরাইল হিযবুল্লাহ , হামাস , ইরাকী প্রতিরোধ যোদ্ধা এবং ইয়ামানী মুজাহিদদের নিক্ষিপ্ত মিসাইল ও রকেট প্রতিহত করতে পারবে না ।)
লিংক সমূহ :
https://www.ynetnews.com/article/sysqh9sykg
https://www.ft.com/content/86fa8b4b-b21c-4f99-90a5-f22160f02305
ইসলামী চিন্তাবিদ এবং গবেষক হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলেমিন মুহাম্মদ মুনীর হুসাইন খান