IQNA

প্যালেস্টাইনের সর্বশেষ পরিস্থিতির সংক্ষিপ্ত পর্যালোচনা

নেতানিয়াহুর মিথ্যাচার থেকে শুরু করে বন্দিদের পরিবারের অর্থনৈতিক অচলাবস্থার হুমকি

9:19 - August 11, 2025
সংবাদ: 3477862
ইকনা- ইসরায়েলি দখলদার সরকারের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এক সংবাদ সম্মেলনে হামাসকে কঠোরভাবে আক্রমণ করার পাশাপাশি গাজায় খাদ্যাভাবের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।

ইকনার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নেতানিয়াহু দাবি করেছেন— “আমাদের লক্ষ্য দখল নয়, মুক্তি। যদি হামাস অস্ত্র ফেলে দেয়, তাহলে গাজার যুদ্ধ আগামীকালই শেষ হতে পারে।

তিনি বলেন— “আমাদের উদ্দেশ্য হামাসকে নিরস্ত্র করা এবং গাজায় একটি অ-ইসরায়েলি বেসামরিক প্রশাসন গঠন করা, যেখানে হামাস বা ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কোনো ভূমিকা থাকবে না। হামাস নিরস্ত্র না হওয়া পর্যন্ত ইসরায়েলের আর কোনো উপায় নেই।

নেতানিয়াহু দাবি করেন— “যুদ্ধ চলাকালে মানবিক সংকট ঠেকানোই আমাদের নীতি। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে আমরা দুই মিলিয়ন টন সহায়তা গাজায় পাঠিয়েছি। হামাস এই সহায়তা লুট করেছে এবং সংকট সৃষ্টি করেছে। জাতিসংঘও কেরেম শালোম ক্রসিং দিয়ে আনা সহায়তা বিতরণে বাধা দিয়েছে। আমরা গাজায় অনাহার রোধে কাজ করছি, কিন্তু তবুও আমাদের বিরুদ্ধে বৈশ্বিক প্রচারণা চালানো হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন— “হামাস আমাদের বন্দিদের ইচ্ছাকৃতভাবে অনাহারে রাখছে এবং গাজা সম্পর্কে ভুয়া ছবি প্রচার করছে। নিউ ইয়র্ক টাইমস ভুয়া ছবি প্রকাশ করায় তাদের বিরুদ্ধে আমরা মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি। বিদেশি সাংবাদিকদের গাজায় প্রবেশের অনুমতি দেয়ার নির্দেশ দিয়েছি, কিন্তু তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কঠিন।

নেতানিয়াহুর দাবি— “গাজার ধ্বংস হামাসের কাজ, তারা অনেক ভবনে বোমা পুঁতে রেখেছে। ইসরায়েল নিরাপদ করিডোর খুলবে এবং নতুন সহায়তা কেন্দ্র চালু করবে। আক্রমণ না করলে বন্দিদের ফেরানো সম্ভব নয়। আমি যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করতে চাই না, বরং শেষ করতে চাই। যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হওয়া মানে বন্দিদের অনাহারে মৃত্যু।

 

از دروغگویی نتانیاهو تا تهدید خانواده‌های اسیران به فلج‌کردن اقتصاد اسرائیل

ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের ক্ষোভ

ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের উগ্রপন্থী নিরাপত্তামন্ত্রী ইতমার বেন-গভিরের মন্তব্যের নিন্দা জানিয়েছে। বেন-গভির ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে সন্ত্রাসীআখ্যা দিয়ে তা পতনের আহ্বান জানিয়েছিলেন।

বিবৃতিতে বলা হয়ইসরায়েলি নেতাদের এসব উসকানিমূলক বক্তব্য গণহত্যা, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি, ফিলিস্তিনের ভূমি দখল এবং ফিলিস্তিনি জাতীয় লক্ষ্য ধ্বংসের ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার অংশ। আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘের প্রস্তাবের প্রতি ইসরায়েলের অবজ্ঞারই এটি প্রমাণ।

মন্ত্রণালয় সব দেশ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর চলমান দমন-পীড়ন বন্ধে রাজনৈতিক, আইনগত ও নৈতিক দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছে।

বেন-গভির বলেনআগামী মন্ত্রিসভা বৈঠকে তিনি নেতানিয়াহুকে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ পতনের জন্য অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে প্রস্তাব দেবেন। মাহমুদ আব্বাসের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিকে তিনি ভ্রান্ত কল্পনাআখ্যা দেন।

 

از دروغگویی نتانیاهو تا تهدید خانواده‌های اسیران به فلج‌کردن اقتصاد اسرائیل

বন্দিদের পরিবারের অর্থনৈতিক অচলাবস্থার হুমকি

গাজায় আটক ইসরায়েলি বন্দিদের পরিবার ঘোষণা করেছেতারা সরকারের নীতি পরিবর্তন না হলে ১৭ আগস্ট (২৭ মোরদাদ) অধিকৃত ভূখণ্ডের অর্থনৈতিক কার্যক্রম অচল করে দেবে।

সৈনিক ও বন্দিদের মুক্তির জন্য কর্মবিরতিস্লোগানে তারা সকল অর্থনৈতিক কেন্দ্র বন্ধের হুমকি দিয়েছে। অভিযোগ অনুযায়ী, নেতানিয়াহুর সরকার যুদ্ধ বাড়িয়ে দিয়ে জীবিত বন্দিদের মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

তেলআবিবে এক সংবাদ সম্মেলনে পরিবারগুলো জানায়এক সপ্তাহের মধ্যে সব অর্থনৈতিক কার্যক্রম বন্ধ করা হবে। ইসরায়েলি চ্যানেল ১৩ জানিয়েছে, তারা সমস্ত বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধ করার হুমকি দিয়েছে। চ্যানেল ১২-এর খবর অনুযায়ী, তারা শীঘ্রই ইসরায়েলি শ্রমিক ইউনিয়নের প্রধানের সঙ্গে বৈঠক করবে তাকে ধর্মঘটে যোগদানে রাজি করাতে।

বিরোধী নেতা ইয়ায়ির লাপিদ এই পদক্ষেপকে যৌক্তিকবলে সমর্থন করেছেন। ডেমোক্র্যাটিক ইসরায়েলদলের নেতা ইয়ায়ির গোলানও ধর্মঘটে যোগদানের ঘোষণা দিয়েছেন।

এই প্রতিবাদ এসেছে এমন এক সময়ে যখন নেতানিয়াহুর মন্ত্রিসভা নিরাপত্তা বাহিনীকে গাজা শহর সম্পূর্ণ দখলের প্রস্তুতি নিতে বলেছে। তবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এটিকে কৌশলগত ফাঁদবলে আখ্যা দিয়েছে।

 از دروغگویی نتانیاهو تا تهدید خانواده‌های اسیران به فلج‌کردن اقتصاد اسرائیل

জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের প্রতিনিধি: গাজায় গণহত্যার চেষ্টা করছে ইসরায়েল

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে ফিলিস্তিনি প্রতিনিধি রিয়াদ মানসুর বলেনইসরায়েলের লক্ষ্য ফিলিস্তিনিদের গণহত্যা, বন্দিদের মুক্তির বিষয়ে তাদের কোনো উদ্বেগ নেই।

তিনি উল্লেখ করেনগাজা দখলের পরিকল্পনা আসলে অঞ্চলটিতে সামরিক দখল জোরদার ও ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনে বাধা দেওয়ার উদ্দেশ্যে, হামাসের শাসন শেষ করার জন্য নয়।

মানসুর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে গণহত্যা বন্ধে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান এবং কেবল মৌখিক নিন্দার বাইরে গিয়ে ইসরায়েলে অস্ত্র রপ্তানি বন্ধ করার দাবি জানান।

তিনি জোর দিয়ে বলেনআমরা বেসামরিক জনগণের ক্ষতি মেনে নেব না; ফিলিস্তিনিদের জীবন অন্যদের জীবনের মতোই মূল্যবান।

এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল ঠিক সেই সময়ে যখন ইসরায়েলি মন্ত্রিসভা গাজা দখলের পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে, যা দেশটির সামরিক ও নিরাপত্তা মহলে ব্যাপক বিরোধিতা তৈরি করেছে।

আন্তর্জাতিক মহলে বহু দেশ, সংস্থা ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান গাজা দখল পরিকল্পনার নিন্দা জানিয়েছে এবং যুদ্ধ বন্ধ ও যুদ্ধবিরতির আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছে। 4299287#

 

captcha