ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুর ওয়ার্ল্ড–এর বরাতে ইকনার প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশটি পর্যটন উন্নয়ন কৌশলের অংশ হিসেবে দুইটি প্রধান বিমানবন্দরে—কেনডাল প্রদেশের টেকো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং সিয়েম রিপ–আংকর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর—নির্দিষ্ট নামাজঘর চালু করেছে। এসব সুবিধা মুসলিম ভ্রমণকারীদের ধর্মীয় চাহিদা পূরণ, ভ্রমণ অভিজ্ঞতা উন্নয়ন এবং কম্বোডিয়াকে মুসলিমবান্ধব গন্তব্য হিসেবে পরিচিত করতে গড়ে তোলা হয়েছে।
বিমানবন্দরগুলোতে নামাজঘর নির্মাণ মুসলিম পর্যটকদের ক্রমবর্ধমান উপস্থিতির সরাসরি প্রতিক্রিয়া। এ উদ্যোগ বৃহত্তর পরিসরে সরকারের ধর্মীয় সম্প্রীতি ও অন্তর্ভুক্তি প্রচারের প্রচেষ্টার অংশ।
নামাজঘরের পাশাপাশি পর্যটন মন্ত্রণালয় এমন অবকাঠামো উন্নয়নে কাজ করছে যা মুসলিম ভ্রমণকারীদের চাহিদা পূরণ করবে। এর মধ্যে রয়েছে হালাল সার্টিফায়েড রেস্তোরাঁ, নামাজের সুবিধা ও সাংস্কৃতিক সেবার ব্যবস্থা।
রাজধানী নমপেন থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত টেকো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর গত সপ্তাহে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়েছে। ২ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে নির্মিত আধুনিক এ বিমানবন্দরটি পুরনো নমপেন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিবর্তে ব্যবহৃত হবে। প্রতি বছর ১ কোটি ৩০ লাখ যাত্রী পরিবহনের ক্ষমতা নিয়ে নির্মিত এ বিমানবন্দরটি ২০৫০ সালের মধ্যে যাত্রী ধারণক্ষমতা ৫ কোটি পর্যন্ত বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছে এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম প্রধান বিমান যোগাযোগ কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠতে প্রস্তুত।
বিমানবন্দরটির যাত্রী–বান্ধব অঙ্গীকারের প্রতিফলন ঘটেছে মুসলিম ভ্রমণকারীদের জন্য নির্দিষ্ট নামাজঘর স্থাপনের মাধ্যমে। টার্মিনালের ভেতরে অবস্থিত এসব কক্ষ সহজ প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করেছে। আন্তর্জাতিক যাত্রীদের বহুমুখী চাহিদা পূরণের ক্ষেত্রে এটি বিমানবন্দরের প্রতিশ্রুতির প্রতীক।
অন্যদিকে, সিয়েম রিপ–আংকর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, যা ২০২৩ সালের অক্টোবরে চালু হয়, আংকর ওয়াট মন্দির কমপ্লেক্সে ভ্রমণকারীদের প্রধান প্রবেশদ্বার হিসেবে কাজ করছে। আংকর ওয়াট থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত এ বিমানবন্দরটি পুরনো সিয়েম রিপ বিমানবন্দরের পরিবর্তে নির্মিত হয়েছে, কারণ পুরনো বিমানবন্দরটির অবস্থান মন্দিরের খুব কাছাকাছি হওয়ায় বিমান চলাচলের কম্পন মন্দিরের ক্ষতি করতে পারত।
টেকো বিমানবন্দরের মতোই সিয়েম রিপ–আংকর বিমানবন্দরেও মুসলিম ভ্রমণকারীদের জন্য নির্দিষ্ট নামাজঘর চালু করা হয়েছে। এ উদ্যোগ পর্যটন মন্ত্রণালয়ের মুসলিম পর্যটন উন্নয়ন পরিকল্পনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, যার উদ্দেশ্য মুসলিম ভ্রমণকারীদের জন্য প্রয়োজনীয় সুবিধা ও সেবা নিশ্চিত করে কম্বোডিয়ার আকর্ষণ বাড়ানো।
এ পরিকল্পনায় আরও রয়েছে সারাদেশে হালাল সার্টিফায়েড রেস্তোরাঁ, নামাজের স্থান ও সাংস্কৃতিক সেবা উন্নয়ন। এসব পদক্ষেপ কম্বোডিয়াকে মুসলিম পর্যটকদের জন্য আরও আকর্ষণীয় করে তুলবে, তাদের দীর্ঘস্থায়ী অবস্থান ও বেশি ব্যয়কে উৎসাহিত করবে, যা দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।
কম্বোডিয়া তার সেবা ও অবকাঠামো উন্নত করে মুসলিম ভ্রমণকারীদের আতিথেয়তা অব্যাহত রাখতে চায় এবং দেশটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম শীর্ষ মুসলিম ভ্রমণ গন্তব্যে পরিণত হচ্ছে। 4305110#