ইকনা’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইয়েমেনের প্রেসিডেন্সি এক বিবৃতির মাধ্যমে নিশ্চিত করেছে যে, তাগিয়ির ও বিনা সরকার (دولت التغییر و البناء)-এর প্রধানমন্ত্রী আহমাদ গালিব আর-রাহউই এবং কয়েকজন মন্ত্রী গত বৃহস্পতিবার সানায়ে সায়োনিস্ট শাসনের হামলায় শাহাদাত বরণ করেছেন।
ইয়েমেন প্রেসিডেন্সির বিবৃতির পূর্ণাঙ্গ পাঠঃ
“ইসরায়েলি শাসনের সঙ্গে সর্বাত্মক যুদ্ধের চরম মুহূর্তে আমরা জাতি ও মুসলিম উম্মাহকে জাতীয় নেতাদের একদল শহীদের সংবাদ জানাচ্ছি।
আহমাদ গালিব আর-রাহউই, তাগিয়ির ও বিনা সরকারের প্রধানমন্ত্রী, গত বৃহস্পতিবার ৬ই شهریور (২৩ আগস্ট)-এ সায়োনিস্ট শাসনের হামলায় কয়েকজন মন্ত্রীর সঙ্গে শাহাদাত বরণ করেছেন।
ইসরায়েলি শত্রু প্রধানমন্ত্রী ও কয়েকজন মন্ত্রীকে লক্ষ্যবস্তু করেছে, যখন তারা একটি কর্মশালায় সরকারের কার্যক্রম ও পারফরম্যান্স মূল্যায়ন করছিলেন।
ইসরায়েলের সাম্প্রতিক আগ্রাসনে কয়েকজন মন্ত্রীও আহত হয়েছেন—যাদের মধ্যে কারও আঘাত মাঝারি মাত্রার, আবার কারও অবস্থা গুরুতর এবং নিবিড় পরিচর্যায় রাখা হয়েছে।
আমরা মহান ইয়েমেনি জাতিকে আশ্বস্ত করছি এবং তাদের সঙ্গে পুনরায় অঙ্গীকার করছি যে, আল্লাহর সাহায্যে সরকার তার দায়িত্ব পালনে অব্যাহত থাকবে।
রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলো মহান, মুজাহিদ ও ধৈর্যশীল ইয়েমেনি জাতির সেবা প্রদান অব্যাহত রাখবে, এবং এই বিপর্যয় যতই কঠিন হোক না কেন, সেবার ধারায় কোনো প্রভাব ফেলবে না।
আমরা আমাদের জনগণ, ফিলিস্তিনের নিপীড়িত জনগণ, সমগ্র মুসলিম উম্মাহ ও বিশ্বের স্বাধীনচেতা মানুষদের নিশ্চয়তা দিচ্ছি যে, আমরা গাজা জনগণের সমর্থন ও সহায়তার আমাদের মৌলিক অবস্থান অব্যাহত রাখব।
আমরা আমাদের সশস্ত্র বাহিনীকে শক্তিশালীকরণ ও তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধির কাজ অব্যাহত রাখব, যাতে তারা সব চ্যালেঞ্জ ও হুমকির মোকাবিলা করতে পারে। যেমন আমাদের মহান জাতি সব ময়দান ও অঙ্গনে উপস্থিত রয়েছে।”
হিজবুল্লাহর শোকবার্তা
এই প্রেক্ষাপটে লেবাননের হিজবুল্লাহ আন্দোলনও আহমাদ আর-রাহউই, তাগিয়ির ও বিনা সরকারের প্রধানমন্ত্রী, এবং কয়েকজন মন্ত্রীর শাহাদাতের ঘটনায় ইয়েমেনি জাতি, নেতৃত্ব ও সাইয়্যেদ আবদুল মালেক আল-হুথিকে শোক জানিয়েছে।
হিজবুল্লাহ তার বিবৃতিতে জোর দিয়ে বলেছে যে, এই নৃশংস আগ্রাসন কেবল একটি নতুন অপরাধ, যা সায়োনিস্ট সন্ত্রাসী অপরাধের রেকর্ডে যুক্ত হলো—যা গাজা, লেবানন, সিরিয়া, ইয়েমেন ও ইরানে ছড়িয়ে পড়েছে এবং শিশু, নারী, বৃদ্ধ ও নিরস্ত্র বেসামরিক মানুষের রক্তে রঞ্জিত হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই আগ্রাসন শত্রুর সেই প্রকৃতিকে উন্মোচিত করে, যে সবচেয়ে ভয়াবহ অপরাধ সংঘটিত করে।
হিজবুল্লাহ ইয়েমেনের ফিলিস্তিন সমর্থনে অবিচল ও দৃঢ় উপস্থিতির ওপর গুরুত্বারোপ করেছে এবং একে ‘‘আগ্রাসন ও অবরোধের মধ্যেও ধৈর্য ও স্থিতিশীলতার সবচেয়ে আন্তরিক ও বিশ্বস্ত উদাহরণ’’ হিসেবে উল্লেখ করেছে।
হিজবুল্লাহ জোর দিয়ে বলেছে, এটি গৌরব ও সম্মানের বিষয় যে, ইয়েমেন গাজাকে সমর্থন করতে এবং অবরোধ ভাঙতে এতো বড় আত্মত্যাগ করছে—যখন পুরো বিশ্ব নীরব দাঁড়িয়ে দর্শকের ভূমিকা পালন করছে।
হিজবুল্লাহ ঘোষণা করেছে যে, তারা নিশ্চিত যে এই আগ্রাসন ইয়েমেনি জনগণের সংকল্প ও স্থিতিশীলতা আরও বাড়িয়ে তুলবে এবং তাদের নেতৃত্বকে গাজা ও তার সংগ্রামী জনগণের অব্যাহত সমর্থন থেকে বিচ্যুত করতে পারবে না।
হিজবুল্লাহ তার বিবৃতির শেষে জোর দিয়ে বলেছে: এই শহীদদের রক্ত সায়োনিস্ট শাসনের ওপর অভিশাপ এবং ধৈর্য ও প্রতিরোধের প্রতীক হয়ে থাকবে। 4302483#