আমেরিকার টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের হিউস্টন শহরের মিউজিয়াম অব ফাইন আর্টস কুরআনের লিপিকলাপের (ক্যালিগ্রাফি) শতাব্দীব্যাপী ইতিহাসকে নতুন এক প্রদর্শনীতে জনসম্মুখে উপস্থাপন করেছে।
ফাইন বুকস ম্যাগাজিন–এর প্রতিবেদনে বলা হয়, এই প্রদর্শনী কুরআন লিপিকলার শিল্পের বিবর্তনকে তুলে ধরছে। এতে সপ্তম শতাব্দী থেকে উনবিংশ শতাব্দী পর্যন্ত মোট বারোটি অনন্য নিদর্শন প্রদর্শিত হচ্ছে, যা ইসলামী ভূখণ্ডজুড়ে ১২০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে তৈরি সমৃদ্ধ পাণ্ডুলিপি সংস্কৃতির প্রতিফলন।
১. সপ্তম শতাব্দীর একটি পাণ্ডুলিপি পৃষ্ঠা — আরব উপদ্বীপে হিজাজি লিপিতে পশুর চামড়ায় লেখা। এটি কুরআনের প্রাচীনতম কপিগুলোর মধ্যে একটি, যার কেবল কিছু পৃষ্ঠা ও টুকরো অবশিষ্ট রয়েছে।
2. ইরানি কুরআন পাণ্ডুলিপি (১২৬০ হিজরি/১৮৪৪–৪৫) — স্বনামধন্য ক্যালিগ্রাফার মীর আব্দুলকরীম মুহাম্মদ সাদিক আল-হোসেইনি আল-ইয়াজদী–এর স্বাক্ষরিত কাজ। এটি কাগজের ওপর কালির সঙ্গে ম্যাট ওয়াটারকালার ও সোনার প্রলেপে লেখা।
3. "মুজাহাব রেড ২" (২০০৯) — পুরান জিনচি
এটি সমকালীন এক শিল্পকর্ম, যাতে কাগজে কালি দিয়ে কুরআন লেখা হয়েছে। এতে বিশেষভাবে তাজবিদ বা সঠিক তিলাওয়াতের দিকটি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে, এবং ক্যালিগ্রাফির সৌন্দর্যের মাধ্যমে দর্শককে শুধু শব্দ নয়, বরং অর্থের গভীরতায় মনোযোগী হতে আহ্বান জানানো হয়েছে।
4. আয়াতুল কুরসি স্ক্রল (২০১৫) — হাজি নুরুদ্দিন
এই অনন্য কাজটি আরবি কলম (কলম-ই-নেই) ও চীনা ব্রাশ ক্যালিগ্রাফির সমন্বয়ে লেখা হয়েছে। এতে আয়াতুল কুরসি নতুন রূপে উপস্থাপন করা হয়েছে।
এই প্রদর্শনী ২৮ জুন ২০২৬ (৭ تیر ১৪০۵) পর্যন্ত চলবে।
হিউস্টনের ফাইন আর্টস মিউজিয়াম আমেরিকার অন্যতম প্রধান আর্ট মিউজিয়াম। এর স্থায়ী সংগ্রহে ৫,০০০ বছরের ইতিহাস জুড়ে ছয় মহাদেশের প্রায় ৮০,০০০ শিল্পকর্ম রয়েছে। প্রদর্শনীর আয়তনের দিক থেকে এটি আমেরিকা মহাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম আর্ট মিউজিয়াম।
দুই বছর আগে এখানে ছয়টি নতুন গ্যালারি যুক্ত হওয়ায় ইসলামিক আর্ট বিভাগের আয়তন প্রায় দ্বিগুণ হয়। বর্তমানে এই বিভাগে সপ্তম থেকে উনবিংশ শতাব্দীর নানা নিদর্শন রয়েছে—যেমন: কুরআনের পাণ্ডুলিপি, সেরামিক, খোদাই করা ধাতব সামগ্রী ও বস্ত্রশিল্প। এগুলো মরক্কো, স্পেন, তিউনিসিয়া, মিশর, তুরস্ক, সিরিয়া, ইরান, ইরাক, উজবেকিস্তান, আফগানিস্তান ও ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। 4303161#