
ইকনা নিউজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, নিউজ রুমের উদ্ধৃতি দিয়ে আল-আযহার উগ্রপন্থা মোকাবিলা পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের একটি রিপোর্টে স্পেনে মুসলমানদের বিরুদ্ধে ঘৃণাপূর্ণ বার্তার সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক সংকট এবং অভিবাসনের ঢেউ বৃদ্ধির কারণে ইউরোপ নজিরবিহীনভাবে ঘৃণাচারণ বৃদ্ধির সাক্ষী হচ্ছে।
এই প্রেক্ষিতে, স্পেনের বর্ণবাদ ও বিদেশিবিদ্বেষ মোকাবিলা পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের প্রকাশিত আরেকটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুধু জুলাই মাসেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্ল্যাটফর্মগুলোতে ১ লাখ ৯০ হাজারেরও বেশি বর্ণবাদী বার্তা রেকর্ড করা হয়েছে, যা গত তিন মাসে (এপ্রিল, মে ও জুন) রেকর্ড হওয়া ১ লাখ ৮৪ হাজার বার্তার তুলনায় উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি প্রদর্শন করছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, এসব বার্তার ৮৬ শতাংশ বিশেষভাবে মুসলমান ও উত্তর আফ্রিকার মানুষদের লক্ষ্যবস্তু করেছে, যা জুন মাসের তুলনায় ৫ শতাংশ বৃদ্ধি নির্দেশ করে। এটি এই গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে উদ্বেগজনক হারে ঘৃণাচারণ বৃদ্ধির প্রমাণ। কেবল ৬ থেকে ২২ জুলাইয়ের মধ্যে অনলাইনে ১ লাখ ৩৮ হাজারেরও বেশি ইসলামবিরোধী বার্তা পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। এসব বার্তা ছিল অত্যন্ত বৈরিতাপূর্ণ, যার মধ্যে ৮৮ শতাংশে সরাসরি অপমান ও অশালীন গালাগাল অন্তর্ভুক্ত ছিল।
প্রতিবেদন অনুসারে, এসব বার্তার ২৪ শতাংশ মুসলমানদের সমাজের জন্য হুমকি হিসেবে চিত্রিত করেছে, ১২ শতাংশ মুসলমানদের বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছে এবং ৫ শতাংশ সরাসরি মুসলমানদের বিরুদ্ধে সহিংসতা উসকে দিয়েছে।
এই উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি ঘটেছে মুরসিয়া প্রদেশের তোরে-পাচেকো শহরের এক ঘটনার পর, যেখানে উগ্র-ডানপন্থী গোষ্ঠীগুলো ওই ঘটনাকে অভিবাসীদের বিরুদ্ধে পদ্ধতিগত প্রচারণা চালানোর অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করেছে, যার মধ্যে রাস্তার তাড়া ও হয়রানি পর্যন্ত অন্তর্ভুক্ত ছিল।
এই প্রেক্ষাপটে আল-আযহার পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র সতর্ক করেছে যে, অভিবাসী ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে সহিংস উগ্রপন্থা ও বর্ণবাদ ভার্চুয়াল জগৎ থেকে বাস্তব জগতে ছড়িয়ে পড়ছে, যা স্পেন ও ইউরোপের সামাজিক শান্তির জন্য একটি গুরুতর হুমকি।
প্রতিবেদনে জোর দিয়ে বলা হয়েছে যে, উগ্র-ডানপন্থীরা ঐতিহ্যগতভাবে ব্যক্তিগত ঘটনাগুলোকে নিজেদের শ্বেতাঙ্গ-প্রাধান্যমূলক এজেন্ডার স্বার্থে অতিরঞ্জিত করেছে। তারা অন্যদের দানবীয় রূপে উপস্থাপন করে যাতে শেষ পর্যন্ত বহিষ্কারের জন্য প্রস্তুতি নিতে পারে, যা অব্যাহত থাকলে সহিংসতার এক ঢেউ সৃষ্টি করতে পারে যা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।
পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রটি এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় আইন প্রণয়ন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্মগুলোর ওপর নিয়ন্ত্রণ জোরদার করা এবং সহাবস্থান সংস্কৃতি ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার মূল্যবোধ প্রচারের লক্ষ্যে অনুষ্ঠান আয়োজনের আহ্বান জানিয়েছে।