IQNA

“কুরআনের আলোকে সহযোগিতা” পর্ব–২

নবী করিম (সা.)-এর জীবনধারায় সহযোগিতার শিক্ষা

16:20 - October 15, 2025
সংবাদ: 3478252
ইকনা- ইসলামী শিক্ষায় ‘তাওয়াউন’ (সহযোগিতা) একটি মৌলিক নৈতিক ধারণা, যার অর্থ পরস্পরের সহায়তা, সাহায্য ও অংশগ্রহণ। আরবিতে এর অর্থ “একজন অন্যজনকে সাহায্য করা”, যা ইংরেজি শব্দ cooperation–এর সমার্থক। তবে এটি কেবল একটি ভাষাগত ধারণা নয়—বরং একাধিক বিদ্যা ও সামাজিক বিজ্ঞানে এর বাস্তব প্রয়োগ দেখা যায়, যেমন জীববিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান, অর্থনীতি ও উন্নয়ন গবেষণায়।
কুরআন ও নবী করিম (সা.)–এর সীরাতে (জীবনধারা) তাওয়াউন বা সহযোগিতা মূলত এমন সকল কাজকে নির্দেশ করে, যা মানুষের প্রয়োজন পূরণ ও অন্যের কল্যাণ সাধনের উদ্দেশ্যে সম্পন্ন হয়।
বিশ্লেষকদের মতে, সহযোগিতার অর্থবোধকে নিম্নলিখিত কয়েকটি দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাখ্যা করা যায়: পারস্পরিক প্রয়োজন পূরণের জন্য পারস্পরিক সহায়তা ও অংশগ্রহণ। আত্মনির্ভরতা ও অন্যের সহায়তার অপেক্ষা না করা। একজনের সাফল্যকে অন্যের সাফল্যের সঙ্গে যুক্ত দেখা—অর্থাৎ ‘আমার অগ্রগতি তোমার অগ্রগতির মাধ্যমেই সম্ভব’। প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে সমবায়মূলক কর্মকাণ্ড (যেমন: সমবায় প্রতিষ্ঠান)। নিঃস্বার্থ অন্যকে সাহায্য করা বা ‘অন্য-সহায়তা’।
এই শেষ দিকটি—অন্যকে সাহায্য করা বিনিময়ে কিছু প্রত্যাশা না করে—হল সহযোগিতার সর্বোচ্চ রূপ, যা আত্মত্যাগ ও ‘ইসার’ (নিঃস্বার্থ ত্যাগ)-এর প্রকাশ।
রাসুলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর আহলে বায়ত (আ.)-এর জীবনে সহযোগিতা এই উচ্চতর রূপেই প্রতিফলিত হয়েছে। তাঁরা মানুষের প্রয়োজন পূরণে, অভাবগ্রস্তকে সাহায্যে ও সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় এমনভাবে অগ্রসর হতেন যে অনেক সময় তা আত্মত্যাগ ও ইসারে রূপ নিত।
ইসলামী শিক্ষা সহযোগিতাকে শুধু একটি সামাজিক আচরণ নয়, বরং একটি নৈতিক ও আদর্শিক বাধ্যবাধকতা হিসেবে বিবেচনা করে। ইসলাম বিশ্বাসীদের আহ্বান জানায়—
“সৎ কাজে ও তাকওয়ায় পরস্পর সহযোগিতা করো, কিন্তু পাপ ও অন্যায় কাজে সহযোগিতা করো না।” (সূরা মায়িদা: ২)
তাই ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে প্রকৃত সহযোগিতা মানে হলো ভালো কাজে একে অপরকে সহায়তা করা, আর অন্যায় বা অবিচারে অংশ না নেওয়া—যা সমাজে ন্যায়, সমতা ও ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠার মূল চাবিকাঠি। 3494998
 
captcha