বার্তা সংস্থা ইকনা’র রিপোর্ট: পাকিস্তানের করাচীতে বসবাসরত ব্যবসায়ী মোহাম্মদী দরবার রয়টার্সকে জানিয়েছেন: ইমাম হুসাইন (আ.)এর আরবাইনের পদযাত্রায় অংশগ্রহণ করার পর আমার স্ত্রী ও নাতনী রোদে ঝলসানো মুখ থেকে বুঝতে পেরেছি, এই পথে যে বাতাস প্রবাহিত হয়, তা কতটা গরম। তাই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে নাজাফ থেকে কারবালার (আরবাইনের পথ) পথের ছায়ার ব্যবস্থা করবো।
আরবাইন অর্থাৎ আশুরা তথা দশই মুহররমের ৪০ দিন পূর্তিকে কেন্দ্র করে নাজাফ থেকে লাখ লাখ জিয়ারতকারী কারবালায় পায়ে হেঁটে যান। এ রাস্তার দু’পাশে বেশির ভাগ এলাকা ধু ধু করছে এবং কোনও গাছপালা প্রায় নেই।
গত বছর আরবাইনের জিয়ারত শেষে তার স্বজনরা রোদে পোড়া হয়ে করাচী ফিরে আসার পর আহলে বাইয়াত (আ.)এর ভক্ত মোহাম্মদ দরবারের মনে ছায়াতরু পাঠানোর কথা আসে।
এতে জিয়ারতকারীদের কষ্ট দূর করার জন্য রাস্তা দু’পাশে ছায়া-তরু বোনার কথা ভাবতে থাকেন দরবার। তিনি ইরাক সফর করেন এবং গাছ লাগানর জন্য সেখান কর্মকর্তাদের অনুমতিও আদায় করেন। চারা গাছ কেবল লাগাবেন না বরং এবং এগুলোকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য প্রয়োজনীয় যত্ন-আত্তিও করবেন বলে তাদের নিশ্চিত করেন তিনি।
পরীক্ষামুলক ভাবে নাজাফে কিছু চারা বোনেন তিনি। তার এ পরীক্ষা ভালো ভাবে উৎরে যায়। তিনি বলেন, নাজাফে লাগান চারাগুলো সুখে-শান্তিতে বেড়ে উঠছে।
করাচী থেকে এবারে প্রথম চালানে আট প্রজাতির ৯৮০০ চারা পাঠানো হয়। এ সব চারার কোনো কোনোটির বয়স আটমাস। ইরাকে বিরাজমান পরিস্থিতির কারণে প্রথম চালান পাঠাতে প্রায় একমাস দেরি হয়েছে। এ সব চারা ইরান হয়ে ইরাকে যাবে। গোটা শীতকাল এগুলো থাকবে বাগদাদের একটি নার্সারিতে। আগামী মার্চ থেকে শুরু হবে এ গুলো বোনার কাজ। প্রায় ১২ জনের একটি কর্মীদলকে এ সব চারার সঙ্গে ইরাকে পাঠান হয়েছে।
তিন বছরের মধ্যে চারা বোনার কাজ শেষ হওয়ার আশা ব্যক্ত করেন দরবার। এ খাতে তার ব্যয় হবে আড়াইশ' কোটি রুপী বা প্রায় সাড়ে ১৬ হাজার মার্কিন ডলার।
ছায়াঘেরা পথে জিয়ারতকারীদের গমনাগমনের সুন্দর দৃশ্য দেখার সৌভাগ্য শেষপর্যন্ত ৮৫ বছর বয়সী তার হবে কিনা সে বিষয়ে নিশ্চিত নন দরবার। তবে আল্লাহ তাকে এ বয়সেও সঠিক কাজ করার তৌফিক এনায়েত করেছেন সে জন্য তার দরবারে লাখো লাখো শুকরিয়া আদায় করেন তিনি। তিনি বলেন, প্রকৃতির সঙ্গে মিলে মিশে কাজ করতে পারছি এর চেয়ে ভালো আর কি হতে পারে! iqna