IQNA

মানুষের জন্য অদৃশ্য ইমামের (আ.) উপকারিতা কি?

23:43 - May 18, 2016
সংবাদ: 2600804
শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে লোক-সমাজ ইমামের আবির্ভাব হতে বঞ্চিত এবং মুসলিম উম্মাহও তাদের ঐশী নেতা ও পবিত্র ইমামের সহচার্য্য থেকে বঞ্চিত। তাহলে তার অদৃশ্যে অবস্থান ,দৃষ্টির অন্তরালে জীবন-যাপন এবং মানুষের ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থাকা পৃথিবী তথা বিশ্ববাসীর জন্য কি কাজে আসবে? এটা কি হতে পারত না, যে তিনি আবির্ভাবের নিকটবর্তী সময়ে জন্মগ্রহণ করতেন এবং নিজের অদৃশ্যের জন্য তার অনুসারীদের এই দূর্ভোগ পোহাতে হত না?

শাবিস্তানের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা ইকনার রিপোর্ট: শিয়া মাযহাবের দৃষ্টিতে এবং ইসলামী শিক্ষার ভিত্তিতে ইমাম হচ্ছেন সৃষ্টির সকল আস্তিত্বের মাঝে আল্লাহর রহমত পৌঁছে দেওয়ার মাধ্যম। তিনি হচ্ছেন সৃষ্টিজগতের কেন্দ্রবিন্দু ও মানদণ্ড এবং তিনি না থাকলে পৃথিবী ,মানুষ ,জ্বীন ,ফেরেশতা ,পশু ও জড়বস্তু কিছুরই অস্থিত্ব থাকবে না।

ইমাম জা ফর সাদিকের (আ.) কাছে প্রশ্ন করা হল, ইমাম ব্যতীত পৃথিবীর অস্তিত্ব টিকে থাকতে পারে কি? তিনি বললেন: ইমাম না থাকলে পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে।

তিনি যে মানুষের কাছে আল্লাহর বাণী পৌঁছে দেওয়ার এবং তাদেরকে পরিপূর্ণতার দিকে দিকনির্দেশ করার মাধ্যম এবং সকল কল্যাণ ও দয়া তার মাধ্যমেই সবার কাছে পৌঁছে তা একটি অতি স্পষ্ট ও অনিবার্য বিষয়। কেননা, সৃষ্টির প্রথম থেকেই আল্লাহ তা’আলা মানুষকে তার রাসূল এবং পরবর্তীতে তাদের উত্তরাধিকারীদের মাধ্যমে হেদায়াত করে আসছেন।

তবে মাসুম ইমামগণের থেকে বর্ণিত হাদীস থেকে বোঝা যায় যে, পৃথিবীর বুকে পবিত্র ইমামগণের আসার উদ্দেশ্য হচ্চে বৃহৎ থেকে অতি ক্ষুদ্রতম জিনিসের কাছে আল্লাহর রহমত ও বরকত পৌঁছে দেওয়া। আরো স্পষ্টভাবে বলা যায় যে ,প্রত্যেকেই যে রহমত ও বরকত পেয়ে থাকে তা পবিত্র ইমামদের মাধ্যমেই পেয়ে থাকে। তাদের অস্তিত্বও ইমামদের মাধ্যমেই এবং তাদের জীবনের সকল নিয়ামত ও কল্যাণও ইমামদের মাধ্যমে অর্জিত হয়।

যিয়ারতে জামে’ কাবীরা যা ইমাম পরিচিতির একটি বিশেষ পাঠ সেখানে বর্ণিত হয়েছে: بکم فتح الله و بکم یختم و بکم یترل الغیث و بکم یمسک السماء ان تقع علی الارض الا باذنه

হে মহান ইমামগণ আল্লাহপাক আপনাদের মাধ্যমেই পৃথিবীকে সৃষ্টি করেছেন এবং আপনাদের মাধ্যমেই তার সমাপ্তি ঘটাবেন। আপনাদের পবিত্র অস্তিত্বের মাধ্যমেই বৃষ্টি বর্ষিত হয় এবং আপনাদের মাধ্যমেই আকাশ দন্ডায়মান রয়েছে।

সৌরজগতে সূর্যের ভূমিকা সবচেয়ে বেশী। তাকে কেন্দ্র করে অন্য সব গ্রহ অনবরত ঘুরছে। অনুরূপভাবে ইমাম মাহদী (আ.)ও সকল সৃষ্টির কেন্দ্রবিন্দু। বর্নিত হয়েছে: ببقائه بقیت الدنیا و بیمنه رزق الوری و بوجوده ثبتت الررض و السماء

তার কারণেই পৃথিবী অস্তিত্বমান এবং তার বরকতেই পৃথিবীর সকলেই রিযিক প্রাপ্ত হয় এবং তার বরকতেই পৃথিবী ও আকাশ প্রতিষ্ঠিত রয়েছে।

সূর্য কখনোই কিরণ দেওয়া থেকে বিরত থাকে না এবং যে যতটুকু তার সাথে সম্পর্ক রাখবে সে ততটুকুই সূর্যের আলো থেকে উপকৃত হতে পারবে। অনুরূপভাবে ইমাম মাহদী (আ.)-এর মাধ্যমেই সকলেই আধ্যাত্মিক ও পার্থিব নিয়ামত গ্রহণ করে থাকে। তবে প্রত্যেকেই তাদের সম্পর্ক অনুযায়ী উপকৃত হবে।

ইমাম জাফর সাদিক(আ.) বলেছেন: ইমাম মাহদী(আ.) তোমাদের দৃষ্টির আড়ালে নেই। কিন্তু তোমাদের গোনাহ তার সাথে তোমাদের দুরত্বকে বাড়িয়ে দিয়েছে এবং সেই কারনেই তোমরা তাকে দেখতে পাও না।

ট্যাগ্সসমূহ: ইমামের
captcha