হুজ্জাতুল ইসলাম আলী সাদুকি বলেন, আদর্শ পরিবার সম্পর্কে জানতে হলে সর্ব প্রথম আমাদেরকে পরিবার কি সে সম্পর্কে জানতে হবে। পরিবার এমন একটি স্থান যেখানে মানুষ লালিতপালিত হয়।
ইসলাম পারিবারিক জীবনকে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করাসহ কুরআন-সুন্নাহর বিধিবিধানের একটা বৃহৎ অংশ জুড়ে রয়েছে পরিবার। সর্বপ্রথম আদম (আ.) ও হাওয়া (আ.)-কে সৃষ্টি এবং তাদের দাম্পত্য জীবনের মাধ্যমে পৃথিবীতে পারিবারিক জীবনের সূচনা করেন মহান আল্লাহপাক। ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মানব! তোমরা তোমাদের প্রতিপালককে ভয় কর, যিনি তোমাদেরকে এক ব্যক্তি হতেই সৃষ্টি করেছেন ও যিনি তা হতে তার স্ত্রী সৃষ্টি করেছেন এবং যিনি তাদের দুজন হতে বহু নর-নারী ছড়িয়ে দিয়েছেন’ (সূরা নিসা)। ‘হে মানুষ! আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি এক পুরুষ এবং নারী থেকে। তারপর তোমাদেরকে বিভক্ত করেছি বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে, যাতে তোমরা পরস্পরে পরিচিত হতে পার’ (সূরা হুজুরাত)। এ আয়াত থেকে অতীতকালে পরিবার ও সমাজের অস্তিত্বের ইঙ্গিত ও মানুষের পারিবারিক ও সামাজিক জীবনের যাত্রা প্রমাণ করে। অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, ‘হে আদম, তুমি ও তোমার স্ত্রী জান্নাতে একত্রে বসবাস কর এবং যেখান থেকে মন চায় তোমরা দুজনে অবাধে পানাহার কর। কিন্তু এই বৃক্ষের নিকটবর্তী হবে না; তাহলে তোমরা অন্যায়কারীদের অন্তর্ভুক্ত হবে(সূরা বাকারা)। বিবাহকেন্দ্রিক পরিবারের গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে মহান আল্লাহ জান্নাতেই আদম ও হাওয়া (আ.)-এর বিবাহের ব্যবস্থা করেন। তাদের জান্নাতে বিবাহ ও অবাধে পানাহার করার সুযোগ দেয়ার পরেও একটি বৃক্ষের নিকট যেতে নিষেধ করা হয়েছিল। এতে করে বিধিবদ্ধ জীবন-যাপনের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। পরিবার হলো আমাদের নাড়ির বাঁধন। মানব জীবন বিকাশের কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে আমাদের পরিবার। মানব জীবনে প্রথম এবং সবচেয়ে বড় মানবীয় সংগঠনের নাম পরিবার। সৃষ্টির নিয়মে প্রধানত রক্তের সম্পর্কিত মানুষজন নিয়েই গঠিত হয় পরিবার। একটি শিশুর পরিবার থেকেই নৈতিকতাসম্বলিত আদর্শিক জীবন গঠিত হয়ে থাকে। পরবর্তীতে বড় হয়ে ধীরে ধীরে সে সমাজে কিংবা রাষ্ট্রে নিজের অবস্থান করে নেয়। পাশাপাশি তার নিজ যোগ্যতায় পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের উন্নয়নে ভূমিকা রাখে। তাই ব্যক্তি ও রাষ্ট্রের জন্য পরিবার ও পারিবারিক কাঠামো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের অন্যতম গুণ হবে সুন্দর পারিবারিক জীবন কামনা। ইরশাদ হয়েছে হে আমার পরওয়ারদিগার রব! আমাদেরকে আমাদের স্ত্রী-পরিজন ও আমাদের সন্তান-সন্ততির চোখের শীতলতা দান করুন এবং আমাদেরকে মুত্তাকীদের ইমাম ও পরিচালক নিয়োজিত করুন। সূরা ফোরকান)।