IQNA

হযরত জয়নাবের (আ.) বীরত্বব্যঞ্জক খোতবা আশুরার বাণীকে চিরঞ্জীব করেছে

15:59 - December 02, 2015
সংবাদ: 3459412
আমিরুল মু'মিনিন আলী (আ.) ও খাতুনে জান্নাত ফাতেমা যাহরার (আ.) সুযোগ্য কন্যা হযরত জয়নাব (আ.) আশুরার মর্মান্তিক ঘটনার পর বীরত্বব্যঞ্জন খোতবা আশুরার বাণীকে চিরঞ্জীব করেছেন।

৬১ হিজরির ১০ মহররম আশুরার পর ইয়াজিদি বাহিনী হযরত ইমাম হুসাইন (আ.)’র একমাত্র জীবিত পুত্র  হযরত ইমাম জয়নুল আবেদিন(আ.)সহ  ইমাম শিবিরের সব জীবিত ব্যক্তিদের বন্দী করে।  বন্দীদের প্রায় সবাই ছিলেন নারী ও শিশু। তাঁদের পায়ে পরানো হয়েছিল লোহার শিকল ও হাতে পরানো হয়েছিল হাতকড়া।

কুফায় ইবনে জিয়াদের দরবারসহ নানা স্থানে এবং দামেস্কে ইয়াজিদের দরবারে বন্দী অবস্থায়  ইমাম হুসাইন (আ.)’র বোন হযরত জয়নাব (সা.) যেসব সাহসী বক্তব্য রেখেছিলেন তা ইতিহাসে অমর হয়ে আছে।

কুফায় তাঁর ভাষণ শ্রবণকারী একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেছিল, আল্লাহর শপথ, "এমন আর কোনো লজ্জাশীলা নারীকে কখনও এমন ভাষণ দিতে শুনিনি।" তার ভাষণে ছিল পিতা হযরত আলী (আ.)'র বীরত্ব, বাগ্মিতা ও নারীসুলভ লজ্জাশীলতা।

কুফা নগরীর প্রবেশ দ্বারের কাছে মাত্র দশ-বারোটি বাক্যে তিনি তাঁর ভাষণ শেষ করেছিলেন। কুফাবাসীরা তাদের প্রতি জয়নাব(সা.)'র যৌক্তিক ও মর্মস্পর্শী তিরস্কার শুনে অনুশোচনা ও বিবেকের দংশনের তীব্রতায় নিজেদের আঙুলগুলো মুখে ঢুকিয়ে কামড়াচ্ছিল। এখানে নারীসুলভ মর্যাদা বজায় রেখে সাহসী বীর নারী ইমাম হুসাইন (আ.)'র কন্যা ফাতিমা (সা. আ.) একটি সংক্ষিপ্ত ভাষণ দিয়েছিলেন। সে সময়ও সবাই অশ্রু-সজল হয়ে পড়ে।

হযরত জয়নাব (সা.) কুফাবাসিকে তিরস্কার করে বলেছিলেন, " তোমরা নিজেদের জন্য চিরন্তন অপরাধ ও লজ্জা রেখে এসেছ এবং চিরন্তন লাঞ্ছনা খরিদ করেছ। তোমরা কোনোদিনই এ লাঞ্ছনা দূর করতে সক্ষম হবে না। আর কোনো পানি দিয়েই তা ধুয়ে ফেলতে পারবে না। কারণ, তোমরা হত্যা করেছ হুসাইনকে যিনি হচ্ছেন খাতামুন্নাবিয়্যিনের(সা.)'র কলিজার টুকরা, বেহেশতে যুবকদের নেতা।"

জয়নাব (সালামুল্লাহি আলাইহা)সহ নবী পরিবারের বন্দীদেরকে কুফায় ইবনে জিয়াদের দরবারে নিয়ে আনা হলে জিয়াদ তাঁকে বিদ্রূপ করে বলেছিল: সকল প্রশংসা আল্লাহর যিনি তোমাদের লাঞ্ছিত করেছেন, তোমাদের পুরুষদের হত্যা করেছেন এবং তোমাদের বাগাড়ম্বরকে মিথ্যা প্রমাণ করেছেন। সঙ্গে সঙ্গে জয়নাব (সা.) জবাব দিয়েছিলেন: "সব প্রশংসা আল্লাহর যিনি নবী মুহাম্মাদ(সা.)'র বদৌলতে আমাদেরকে সম্মানিত করেছেন এবং আমাদেরকে সব অপবিত্রতা থেকে মুক্ত করেছেন। অবশ্যই ফাসেক লাঞ্ছিত হবে এবং ফাজের বা পাপাচারী মিথ্যা বলছে, (যার বাগাড়ম্বরের কথা সে বলছে) সে ব্যক্তি আমরা ছাড়া অন্য কেউ। তাই সব প্রশংসা আল্লাহর।"

captcha