IQNA

কুরআন তিলাওয়াত একটি অনন্য শিল্প/৬

"কামেল ইউসুফ"; প্রশিক্ষণ ছাড়া একজন দক্ষ ক্বারী

0:03 - December 19, 2022
সংবাদ: 3473013
তেহরান (ইকনা):  মিশরের বিখ্যাত ক্বারিদের মধ্যে একজন যিনি তার নিজস্ব শৈলী প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছিলেন, তিনি মুহাম্মদ রিফাতের মতো মহান ক্বারিদের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন এবং তার পরবর্তী ক্বারিদেরও তিনি প্রভাবিত করেছিলেন, তিনি হলেন “কামেল ইউসুফ বেহতাইমি”। কুরআন তিলাওয়াতের জন্য তিনি কারো নিকট হতে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেননি এবং শুধুমাত্র বিশিষ্ট ক্বারিদের তিলাওয়াত শুনে তার প্রতিভা বিকাশ করেছেন।

কামেল ইউসুফ ১৯২২ সালে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৯৬ সালের ২য় জুন ইন্তেকাল যান। তিনি "বেহতাইমী" গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ছিলেন গ্রামের ক্বারিদের একজন। মিশরে কুরআনিক ব্যক্তিত্বের আবিস্কার এবং তিলাওয়াতের অসামান্য চিত্রগুলি গ্রামীণ স্থান থেকে উদ্ভূত হয়েছে এবং এই প্রতিভাগুলি গ্রামের সরল পরিবেশে আবিষ্কৃত হয়েছে। ওস্তাদ কামেল ইউসুফও সেই সব ক্বারিদের কাতারে রয়েছেন যাদের প্রতিভা গ্রাম হতে আবিষ্কৃত হয়েছে।

ছয় বছর বয়সে তার বাবা তাকে কুরআন তিলাওয়াতের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন। ১০ বছর বয়সের আগেই তিনি পুরো কুরআন মুখস্থ করেন। তাঁর শৈশবও এমনভাবে কেটেছে যে তিনি ধর্মীয় সঙ্গিতের প্রতি খুব আগ্রহী ছিলেন, তাই একই সময়ে তিনি তাঁর গ্রামের মসজিদের মুয়াজ্জিনকে বলেছিলেন যে তিনি আযান বলতে চান। কিন্তু মসজিদের মুয়াজ্জিন তাকে এ অনুমতি দেননি। এই সমস্যাটির কারণে ১০ বছর বয়সী কামেল ইউসুফ জামাতের ইমাম বা মসজিদের মুয়াজ্জিনের অনুমতি ছাড়াই মানুষের জন্য অবাধে কুরআন তিলাওয়াত করতেন।

এই তিলাওয়াতগুলি তাঁর উচ্চ শৈল্পিক ক্ষমতাকে উদ্ভাসিত করেছিল এবং সবাই দেখেছিল যে এই শিশু ক্বারির সামনে কী উজ্জ্বল ভবিষ্যতয রয়েছে। এর কিছু দিন পর মসজিদের মুয়াজ্জিন কামেল ইউসুফকে মসজিদে নামাযের আযান দেওয়ার জন্য সম্মতি প্রদান করেন।

কামেল ইউসুফ অল্প বয়সে মোহাম্মদ আল-সাইফির সাথে দেখা করেন এবং গোপনে মোহাম্মদ আল-সাইফির তিলাওয়াত শুনতেন এবং তার দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন। কামেল ইউসুফের অনুকরণের এত উচ্চ ক্ষমতা ছিল যে তার কর্মজীবনের একেবারে শুরুতে, অধ্যাপক মোহাম্মদ আল-সাইফি বুঝতে পেরেছিলেন যে কামেল ইউসেফের মধ্যে একটি বিশেষ প্রতিভা রয়েছে এবং তিনি এই প্রতিভাকে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী ছিলেন। কামেল ইউসুফকে কায়রোসহ মিশরের বিভিন্ন শহরে কুরআন মাহফিলে অংশগ্রহণ এবং তিলাওয়াত করার জন্য তিনি নিয়ে যান। এই সময়েই মানুষ কামেল ইউসুফের সাথে পরিচিত হয়। কামেল ইউসুফ শেখ মোহাম্মদ রাফাত এবং মোহাম্মদ সালামেহের সুবিধা নেওয়ার এবং তাদের তিলাওয়াত পদ্ধতি এবং শৈলী ব্যবহার করার চেষ্টা করেছেন।

ওস্তাদ কামেল ইউসুফের তিলাওয়াতের বিকাশের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল যে মিশরের স্বর্ণযুগে উজ্জ্বল ক্বারিদের অধিকাংশই কুরআন মাহফিলে যোগ দিয়েছিলেন এবং সেখানে ক্বিরায়াত প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছিলেন, কিন্তু ওস্তাদ কামেল ইউসুফ শুধুমাত্র তিনজন ওস্তাদের তিলাওয়াত শুনতেন। তিলাওয়াত বুঝতে পেরেছেন এবং তিলাওয়াতের যুক্তিতে পৌঁছাতে পেরেছেন এবং ভালো তিলাওয়াত করে নতুন শৈলীর অধিকারী হয়েছেন।

captcha