IQNA

ইসরাইল ও পশ্চিমা দেশগুলোই প্রকৃত সন্ত্রাসবাদী

16:29 - October 28, 2023
সংবাদ: 3474572
তেহরান (ইকনা): ব্ল্যাক হাউস ( কালো প্রাসাদ অর্থাৎ হোয়াইট হাউস ) ঘোষণা করেছে যে " মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলের জন্য গাযা আক্রমণের ক্ষেত্রে কোন রেড লাইন নির্ধারণ করছে না । " ( আল - আলম টিভি চ্যানেল , শনিবার , ২৮-১০-২০২৩ ) 

তেহরান (ইকনা): এ কথার অর্থ হচ্ছে যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলকে গাযায় ফিলিস্তীনীদেরকে নির্দয় ও নিষ্ঠুর ভাবে ব্যাপক ভয়ঙ্কর গণহত্যা ও প্রজন্ম হত্যা করার যাবতীয় ছাড়পত্র ( পারমিট ) দিয়ে দিয়েছে । এখন ইসরাইল মুক্ত ও স্বাধীন ভাবে বিনা বাধায় সব ধরণের যুদ্ধাপরাধ , মানবতাবিরোধী কার্যকলাপ , গণহত্যা , প্রজন্ম হত্যা , শিশু হত্যা , নারী হত্যা , আগ্রাসন, মানবাধিকার লঙ্ঘন , বাড়ীঘর , মসজিদ, গীর্জা, হাসপাতাল সহ গাযার যাবতীয় অবকাঠামো ধ্বংস সহ সব ধরনের অপকর্ম ও অপরাধ করে যাচ্ছে । গতকাল থেকে গাযায় ইসরাইল ইন্টারনেট সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিয়েছে এবং গতকাল থেকে গাযার সাথে বহির্বিশ্বের যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে যাতে ইসরাইল এ সুযোগে গাযায় সকলের অগোচরে ও অজান্তে জঘন্য অন্যায়, যুদ্ধাপরাধ ও লোমহর্ষক গণহত্যা ও প্রজন্ম হত্যা এবং মানবিক বিপর্যয় ঘটাতে পারে।
ইসরাইল গতকাল রাত থেকে উন্মাদের মতো নির্বিচারে নির্বিশেষে  গাযায় জঙ্গি বিমান দিয়ে বোমাবর্ষণ , কামান , ট্যাংক ও মর্টারের ভারী গোলাবর্ষণ এবং নৌবাহিনীর যুদ্ধ জাহাজ থেকে গোলাবর্ষণ করে যাচ্ছে তার ফলে বর্তমানে গাযায় শহীদদের সংখ্যা ৭৭০০ এর অধিক এবং আহতদের সংখ্যা ১৮৫০০ ছাড়িয়ে গেছে এবং ১০০০ এর অধিক নিখোঁজ। পূর্ণ অবরোধ আরোপ করে রেখেছে ইসরাইল গাযায় যার জন্য খাদ্য , পানীয় জল , ওষুধ ও জ্বালানির তীব্র ঘাটতি ও অভাব তৈরি হয়েছে এবং বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সব  কিছু সম্পূর্ণ বন্ধ । এত কিছু করেও গত রাত থেকে আজ শনিবার ২৮-১০-২০২৩ বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত গাযার তিন স্থান দিয়ে  হানাদার ও দখলদার ইসরাইলী সেনাবাহিনী গাযায় অনুপ্রবেশের চেষ্টা করলে বীর ফিলিস্তিনি মুজাহিদদের তীব্র প্রতিরোধের কারণে জান মালের প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি স্বীকার করে ব্যর্থ হয়ে পশ্চাদপসারণ ( রিট্রিট ) করতে বাধ্য হয়েছে  যদিও ইসরাইল ও পশ্চিমারা অনেক কিছু মিথ্যা দাবি করেছে, করছে এবং ভবিষ্যতেও করবে।
    এখন গণতন্ত্র , লিবারেলিজম , মানবাধিকার, স্বাধীনতা , মুক্তবুদ্ধি , বিজ্ঞানমনস্কতা , যুক্তিবাদ , আখলাক ( ন্যায় নীতি ) , মহানতা , উদারতা , মহানুভবতা , বাক স্বাধীনতা, অবাধ তথ্য প্রবাহ , প্রেস ফ্রিডম , মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, নারীবাদ , নারী পুরুষের সমতা , নারী অধিকার, শিশু অধিকার ইত্যাদির প্রবক্তা পাশ্চাত্য ( পশ্চিমা দেশগুলো ) যাদের শীর্ষে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি, হল্যান্ড , কানাডা ইত্যাদি গংরা - তারা কেন মুখে কুলুপ এঁটে নিশ্চুপ ও নীরব রয়েছে ? অন্য কোনো দেশ যেমন : রাশিয়া যদি ইউক্রেনে এ অপরাধ গুলো করত এই পাশ্চাত্য - এ সব পশ্চিমা দেশগুলোর এত চিল্লাচিল্লি করত যে এর ফলে বিশ্ববাসীর কান ঝালাপালা হয়ে যেত । গাযায় ইসরাইলের তাণ্ডবলীলা , ধ্বংসযজ্ঞ এবং হত্যাকাণ্ডের ক্ষেত্রে পাশ্চাত্য সব আদর্শের কথা ও বুলি যেন ভুলে গেছে ?!! এটাই হলো পাশ্চাত্য অর্থাৎ পশ্চিমা দেশগুলোর দ্বিমুখী নীতি ও মুনাফেকী। পাশ্চাত্য কেবল নিজেদের প্রতিপক্ষকে নাজেহাল ও অপদস্থ করার জন্য এ সব বড় বড় বুলি কপচায় ও আওড়ায় অথচ নিজেরাই স্বার্থের জন্য এ সব বিষয় পদদলিত করে । আর এ ভাবে পশ্চিমারা আবারও প্রমাণ করল যে তারা গণতন্ত্র , স্বাধীনতা , বাকস্বাধীনতা, প্রেস ফ্রিডম , মত প্রকাশের স্বাধীনতা , মানবাধিকার , ন্যায় নীতি , বিবেকবোধ বিরোধী এবং মানবতার বড় দুশমন। পাশ্চাত্যের মদদপুষ্ট অপরাধী সন্ত্রাসবাদী ইসরাইল আজ ৭৫ বছর ধরে ফিলিস্তীনীদের ওপর সব ধরনের জুলুম, অন্যায় এবং সবধরনের অপকর্ম ও অপরাধ করেই যাচ্ছে । ফিলিস্তীনীরাই কেবল ফিলিস্তীনের প্রকৃত বাসিন্দা , অধিবাসী ও মালিক । তবে বহিরাগত দখলদার জবরদখল কারী ইসরাইলী যায়নবাদী ইহুদীরা ফিলিস্তীনের প্রকৃত বাসিন্দা , অধিবাসী ও মালিক নয় । পশ্চিমাদের বিশেষ করে ব্রিটেন , ফ্রান্স ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ মদদে ও পৃষ্ঠপোষকতায় ইসরাইল রাষ্ট্রটি হচ্ছে সন্ত্রাসবাদের ওপর প্রতিষ্ঠিত সন্ত্রাসবাদী রাষ্ট্র । এ রাষ্ট্রটি রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদের হোতা ও প্রবক্তা। তাই সন্ত্রাসবাদী রাষ্ট্র ইসরাইলের পাশে পশ্চিমা দেশগুলো বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ফ্রান্স, জার্মানি গংরা হচ্ছে ভয়ঙ্কর জঘন্য সন্ত্রাসবাদী ও সন্ত্রাসবাদের জননী ।
পশ্চিমাদের সঠিক ভাবে চিনতে হবে । 
 ইসলামী চিন্তাবিদ এবং গবেষক হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলেমিন মুহাম্মদ মুনীর হুসাইন খান

captcha