IQNA

মহানবীর চাচা হযরত আবু তালিবের (আ) ওফাত

22:39 - February 07, 2024
সংবাদ: 3475070
২৬ রজব হযরত রাসূলুলাহর (সা) আপন চাচা হযরত আবু তালিবের (আ) শাহাদাতসম ওফাত উপলক্ষে সবাইকে জানাই  আন্তরিক শোক ও তাসলিয়াত। মহানবী ( সা) ইসলামের দুই মুখলিস ও খাঁটি সাহায্যকারী , পৃষ্ঠপোষক ও প্রতিরক্ষাকারী অর্থাৎ হযরত আবু তালিব ( আ) এবং স্বীয় সহধর্মিণী , প্রথম ও সর্বশ্রেষ্ঠ উম্মুল মু'মিনীন হযরত  খাদীজা বিনতে খুওয়াইলিদ্ ( আ ) মহাবীর নুবুওয়াত ঘোষণার  ( বে'সাত ) দশম বর্ষে ( হিজরতের 3 বছর আগে) ইন্তেকাল করলে তীব্র শোকগ্রস্ত , অত্যন্ত ব্যথিত ও দু:খ ভারাক্রান্ত হন । 

আর তীব্র শোক ও দু:খের কারণে এবং এ দুজনের পুণ্য স্মৃতি এবং মহানবী ( সা) ও ইসলামের প্রতি তাঁদের খেদমত , অবদান  ও   আত্মত্যাগ ও কোরবানি চির স্মরণীয় রাখার জন্য ঐ বছরের ( নুবুওয়াতের দশম বর্ষ ) নামকরণ করেন আমুল হুযন ( عامُ الحُزن ) অর্থাৎ দু:খ ও শোকের বছর । এ থেকে স্পষ্ট প্রমাণিত  হয় যে হযরত আবু তালিব (আ) ছিলেন পূর্ণ খাঁটি মুখলিস ঈমানদার মুসলিম । 
তিনি ছিলেন মহান আল্লাহ , মহানবী (সা) এবং ইসলাম ধর্মের প্রতি এতটাই বিশ্বাসী যে তিনি তাঁর নিজের জীবন - প্রাণ , সন্তান - সন্ততি সব কিছু উৎসর্গ করে মহানবী (সা)কে মক্কার কাফির মুশরিকদের অত্যাচার , ষড়যন্ত্র এমনকি হত্যার পরিকল্পনা থেকে রক্ষা করতেন এবং ইসলামের প্রচার ও প্রসার রোধ করার জন্য মক্কার মুশরিকরা মহানবী (সা) ও বনী হাশিমকে সর্বাত্মক ( অর্থনৈতিক  সামাজিক  ) অবরোধ আরোপ , বয়কট এবং শেবে আবী তালিবে( আবূ তালিবের উপত্যকা ) নির্বাসিত করলে হযরত আবু তালিব (আ) স্বীয় সন্তান সন্ততি সহ মহানবীর (সা) সাথে স্বেচ্ছায় নির্বাসনে যান এবং গুপ্ত ঘাতকদের চোরাগুপ্তা আক্রমণ ও আঘাত থেকে মহানবী (সা)কে নিজে এবং নিজের সন্তান সন্ততি বিশেষ করে হযরত আলীকে (আ) দিয়ে রক্ষা করতেন । 

মহানবী (সা) ও ইসলামের জন্য হযরত আবু তালিবের এত সব আত্মত্যাগ থেকে প্রতীয়মান হয় যে তিনি খাঁটি মুমিন ছিলেন । জীবনে কোন দিন তিনি মূর্তি পূজা করেন নি । 
মহানবীর (সা) উদ্দেশ্যে তাঁর রচিত কবিতা সমূহও মহান আল্লাহ, তৌহিদ, ইসলাম ও হযরত মুহাম্মদের (সা) প্রতি তাঁর অগাধ বিশ্বাস ও ঈমানের পরিচায়ক । এতসব অবদানের কারণে কীভাবে মহানবী (সা) তাঁকে এবং হযরত খাদীজাকে ভুলে যাবেন ?!! তাঁদের বিয়োগ বেদনা ও শোক এতটাই তীব্র ছিল বলেই মহানবী (সা) নুবুওয়তের দশম বর্ষকে আমুল হুযন ( শোকের বছর ) নামকরণ করেন । আর এ থেকে প্রতীয়মান হয় যে ইসলামে মহানবী (সা) শোক পালন ও আযাদারীর সুন্নাতের প্রথম প্রবর্তক । আজ আমরা তাঁর সুন্নত অনুসরণ করে মহানবীর শাহাদাত সম ওফাত , আহলুল বাইত ( আ ) , মাসূম ইমামগণ ( আ ) এবং ইমাম হুসাইনের ( আ ) শাহাদাত উপলক্ষে শোকানুষ্ঠান ও আযাদারী পালন করি । 

পবিত্র কুরআনে উল্লেখিত ফের'আওন বংশীয় মুমিন ( হযরত হেযক্বীল : মুমিনে আলে ফের'আওন ) যিনি নিজ ঈমান গোপন রেখে হযরত মূসাকে ( আ ) সাহায্য করতেন ঠিক তাঁর মতো ছিলেন হযরত আবূ তালিব (আ) মুমিনে আলে হাশিম যিনি নিজের ঈমান গোপন রেখে মহানবীকে ( সা ) সর্বাত্মক সাহায্য ও সহযোগিতা করতেন। মু'মিনে আলে হাশিম হযরত আবু তালিবকে ( আ) আজ ২৬ রজব তাঁর ওফাত দিবসে এবং তাঁর অবদানের কথা স্মরণ করা সবার একান্ত কর্তব্য । 

মহানবীর ওফাতের পর খিলাফত ভিন্ন খাতে প্রবাহিত হয়ে ইসলামের চির শত্রু বনী উমাইয়ার হাতে চলে গেলে মহানবীর আহলুল বাইত ( আ) বিশেষ করে হযরত আলীকে খা টো ও হেয় করার জন্য আবূ সুফিয়ানের পুত্র মুয়াবিয়া খিলাফত জবরদখল করে প্রথমেই হযরত আলীকে ( আ) গালি দেয়ার জঘন্য প্রথা ও বিদ'আতের প্রবর্তন করে যা প্রায় ৯০ বছর ধরে সমগ্র মুসলিম বিশ্বে চালু ও বলবৎ ছিল এবং সেই সাথে মুয়াবিয়াকে হযরত আলী ( আ ) ও আহলুল বাইতের (আ) চেয়ে উত্তম প্রমাণ করার জন্য মহানবীর ( সা ) পিতা - মাতা , দাদা এবং আপন চাচা হযরত আবূ তালিবকে (আ) মুশরিক দেখিয়ে উমাইয়া খিলাফত প্রশাসন বিভিন্ন জা'ল হাদীস তৈরি ও প্রচার করে উম্মতের এক বিরাট অংশের মধ্যে এ ভ্রান্ত ধারণা বদ্ধমূল করে দিয়েছে যে মহানবীর দাদা , পিতা-মাতা ও আপন চাচা হযরত আবূ তালিব (আ) মুশরিক ছিলেন ( নাঊযুবিল্লাহ )। অথচ হযরত আলীর প্রতিদ্বন্দ্বী ও বিরোধী মুয়াবিয়ার পিতা আবূ সুফিয়ান মহানবীর ( সা ) চরম শত্রুতা প্রদর্শন ও বহু যুদ্ধ করেও ইসলাম ধর্ম গ্রহণের সৌভাগ্য লাভ করে । কিন্তু হযরত আলীর পিতা হযরত আবূ তালিব এত সাহায্য ও সহায়তা করেও শেষ পর্যন্ত ঈমান এনে মৃত্যুবরণ করতে পারেন নি !" আর এ ভাবে বনী উমায়ার খিলাফত হযরত আবু তালিব (আ) এবং হযরত আলীর ( আ ) চেয়ে   আবূ সুফিয়ান ও মুয়াবিয়াকে শ্রেষ্ঠ এবং হযরত আলীকে ( আ ) নিকৃষ্ট ও দ্বীনের চৌহদ্দি থেকে বহিষ্কৃত ও বিতাড়িত দেখিয়ে তাঁর নামে কুৎসা রটিয়েছে এবং চরম স্পর্ধা প্রদর্শন করে প্রায় ৯০ বছর ধরে তাকে মসজিদের মিম্বরে মিম্বরে গালিগালাজ করত ।




 মহানবীর( সা ) হাদীসে বর্ণিত অল্প বয়স্ক কুরাইশীয় যুবক কারা যারা মুসলিম উম্মাহকে  ধ্বংস করবে ?
আসলে এরা হচ্ছে বনী উমায়ার তরল মতির যুবকগণ যারা উম্মতকে ধ্বংস করবে ।
আসলে এ ভাবে শাজারায়ে খাবীসা ( খবীস অপবিত্র বিষবৃক্ষ ) বনী উমাইয়া ও উমাভী খিলাফত মুসলিম উম্মাহকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে গেছে। সহীহ বুখারীতে উল্লেখিত হয়েছে : মহানবী ( সা ) বলেন : 


 هَلَکَةُ أُمَّتِيْ عَلَیٰ یَدَيْ غِلْمَةٍ مِنْ قُرَیْشٍ .

কুরাইশ বংশীয় একদল অল্প বয়স্ক যুবকের হাতে ( আসলে বনী উমাইয়ার অল্প বয়স্ক যুবকগণ ) আমার উম্মতের ধ্বংস ( নিহিত রয়েছে )। ( দ্র : আবূ আব্দিল্লাহ মুহাম্মদ ইবনে ইসমাইল ইবনে ইব্রাহীম ইবনে বার্দেযবাহ্ আল - বুখারী ( ইমাম বুখারী ) ,সহীহ আল - বুখারী, ফিতনা সমূহের অধ্যায় বা কিতাবুল ফিতান ,  " কতিপয় বোকা আহমক অল্প বয়স্ক যুবকের হাতে আমার উম্মতের ধ্বংস ( হালাক) নিহিত রয়েছে । " - মহানবীর (সা) এ উক্তি সংক্রান্ত উপাধ্যায় , হাদীস নং ৭০৫৮ , পৃ : ১৭৭৪ - ১৭৭৫ , গবেষণা : মুহাম্মদ সিদক্বী আল - আত্তার , প্রথম সংস্করণ, ২০০৮ , প্রকাশক : দারুল ফিকর , বৈরুত , লেবানন হযরত আবূ হুরায়রা থেকে বর্ণিত: রাসূলুল্লাহ (সা) বললেন : " কুরাইশ গোত্রের এই মহল্লা জনগণকে ( উম্মতকে ) ধ্বংস করবে । " তখন সবাই বলল : " অত:পর আপনি আমাদের কী (করার ) আদেশ দিচ্ছেন ? " তখন তিনি বললেন : " জনগণ ( উম্মত ) যদি তাদের বর্জন করত ( অর্থাৎ তাদের থেকে পৃথক হয়ে যেত ) !! 


عَنْ أَبِيْ هُرَیْرَةَ - رضي الله عنه - قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ - ص - « یُهْلِکُ النَّاسَ هٰذَا الْحَيُّ مِنْ قُرَیْشٍ .» قَالُوْا : فَمَا تَأْمُرُنَا ؟ قَالَ : « لَوْ أَنَّ النَّاسَ اعْتَزَلُوْهُمْ .» 

দ্র: সহীহুল বুখারী, কিতাবুল মানাক্বিব ( ফাযায়েল ও গুণাবলী সংক্রান্ত অধ্যায় , হাদীস নং ৩৬০৪ , পৃ : ৮৮১ )
মারওয়ান বলল : আল্লাহর লানত ( অভিশাপ ) ঐ সব অল্প বয়স্ক যুবকের ওপর । অত:পর আবূ হুরায়রা বললেন : যদি তুমি চাইতে যে আমি বলি : " তারা অমুক অমুক বংশীয় । " তাহলে তা আমি করতাম ।
রাবী বলেন : যখন বনী মারওয়ান শামের রাজত্ব ( ও খেলাফত ) দখল করে তখন আমি আমার পিতামহের সাথে তাদের ( বনী মারওয়ান ) কাছে গিয়েছিলাম। আমার দাদা  তাদেরকে ( বনী মারওয়ান ) অল্প বয়স্ক তরুণ যুবক দেখতে পেয়ে আমাদেরকে বলেছিলেন : আশা করা যায় এরা ( বনী মারওয়ান ) তাদের ( ঐ সকল অল্প বয়স্ক কুরাইশীয় যুবকের )  অন্তর্ভুক্ত। "
আমরা বললাম: " আপনি সবচেয়ে ভালো জানেন । " ( দ্র: সহীহ আল - বুখারী , ফিতনা সংক্রান্ত অধ্যায় , হাদীস নং ৭০৫৮ , পৃ : ১৭৭৪ - ১৭৭৫  )
আর আবূ সুফিয়ানের জৈষ্ঠ্য পুত্র ও মুয়াবিয়ার বড় ভাই মহানবীর ওফাতের পর হযরত আবুবকরের খিলাফত কালে শামের দামেশকের গভর্ণর নিযুক্ত হয় । কিন্তু সে মারা গেলে হযরত উমর তরুণ যুবক মুয়াবিয়া ইবনে আবূ সুফিয়ানকে দামেস্কের শাসনকর্তা নিযুক্ত করেন । এরপর খলীফা ওসমান সমগ্র শামের শাসন কর্তৃত্ব মুয়াবিয়ার হাতে ন্যস্ত করলে তার ক্ষমতা , প্রভাব ও প্রতিপত্তি অত্যন্ত বৃদ্ধি পায় যে এরফলে সে বিভিন্ন বাহানা অজুহাত দাঁড় করিয়ে বিশেষ করে খলীফা ওসমান হত্যার প্রতিশোধ গ্রহণ ও জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তির ধুয়ো তুলে হযরত আলীর বাইআত না করে বরং তাঁর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে এবং মুয়াবিয়া ও আমর ইবনে আসের কারসাজিতে সিফফীনের যুদ্ধে খারেজী ফিৎনার উদ্ভব হয় এবং খারেজী আব্দুর রহমান ইবনে মুলজিম মুরাদীর হাতে হযরত আলী শহীদ হলে বিদ্রোহ ও ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ইমাম হাসানের (আ) কাছ থেকে খিলাফত কুক্ষিগত করে মুয়াবিয়া । 
মুয়াবিয়া পরবর্তীতে তার কুলাঙ্গার পুত্র ইয়াযীদকে খলীফা ঘোষণা করে যে ছিল তরল মতির চরিত্রহীন লম্পট রক্তপিপাসু যুবক । আর সে খলীফা হয়ে অপর এক উমাইয়া বংশীয় কুলাঙ্গার চরিত্রহীন লম্পট রক্তপিপাসু যুবক উবাইদুল্লাহ ইবনে যিয়াদ ইবনে আবীহ কে কূফার গভর্ণর নিযুক্ত করে তার মাধ্যমে কারবালার মহা বিপর্যয় ও হত্যাযজ্ঞ (অর্থাৎ ইমাম হুসাইনের শাহাদাত ) সংঘটিত করেছিল । তাই বনী আবী সুফিয়ানও বনী মারওয়ানের মতো কুরাইশ বংশীয় অল্প বয়স্ক তরল মতির চরিত্রহীন লম্পট আহমক যুবকদের অন্তর্গত যাদের হাতে উম্মত ধ্বংস হয়েছে। হযরত আলীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ বিগ্রহ ও বিদ্রোহ , তাঁকে গালিগালাজ, ইমাম হাসানকে ( আ) বিষ প্রয়োগে হত্যা , কারবালায় ইমাম হুসাইন, নবী পরিবার এবং হযরত আবু তালিবের বংশধরদের হত্যা  এবং গোটা উমাইয়া ও আব্বাসীয় খিলাফত ও রাজত্বকালে মহানবীর এবং হযরত আলীর বংশধরদের হত্যাযজ্ঞ অব্যাহত থেকেছে!! এই বিষবৃক্ষের গোড়া আবূ সুফিয়ান ছিল মহানবীর (সা) একনিষ্ঠ খাঁটি মুখলিস সাহাবাদের দৃষ্টিতে মহান আল্লাহর দুশমন এবং তাঁরা তাকে আল্লাহর দুশমন বলে অভিহিত করলে হযরত আবু বকর আবু সুফিয়ানকে কুরাইশদের শেখ ও সাইয়েদ বলে প্রতিবাদ করে মহানবীর (সা ) কাছে গিয়ে নালিশ করলে মহানবী (সা )ঐ সব সাহাবার অভিমত সমর্থন করে হযরত আবূবকরকে বলেছিলেন যে সে তাঁদেরকে ক্রূদ্ধ ও অসন্তুষ্ট করেছে এবং তাঁদের কে সে যদি ক্রুদ্ধ ও অসন্তুষ্ট করে থাকে তাহলে সে অবশ্যই মহান আল্লাহ কেই ক্রদ্ধ ও অসন্তুষ্ট করেছে। সহীহ মুসলিমে বর্ণিত হয়েছে : সালমান, সুহাইব ও বিলাল - রা - এর ফাযায়েল সংক্রান্ত উপাধ্যায় হাদীস নং ৬৪৪১ : আয়েয ইবনে আমর থেকে বর্ণিত আছে যে আবূ সুফিয়ান নয় জনের এক সমাবেশ ও আসরে (উপবিষ্ট ) সালমান , সুহাইব ও বিলালের ( রা ) কাছে আসলে তারা বললেন : " মহান আল্লাহর শপথ ! আল্লাহর তরবারি সমূহ আল্লাহর এই দুশমনটার গর্দান থেকে সেগুলোর ধারণের স্থান এখনও ধারণ ও পাকড়াও করে নি ( অর্থাৎ তার গর্দান কর্তন করে নি )। " আয়েয বলেন : হযরত আবূ বকর বললেন : "তোমরা কি এ কথা কুরাইশদের শেখ ( প্রবীণ নেতা ) ও দলপতিকে ( সাইয়েদ ) বলছ? " অত:পর তিনি মহানবীর (সা) কাছে এসে তাঁকে এ ব্যাপারে অবগত করলেন । তখন তিনি (সা ) বললেন : হে আবূ বকর ! সম্ভবত তুমি তাদেরকে ( সালমান, সুহাইব ও বিলাল ) ক্রুদ্ধ , রাগম্বিত ও অসন্তুষ্ট করেছে । যদি তুমি তাদেরকে ক্রুদ্ধ ,রাগন্বিত ও অসন্তুষ্ট করে থাক তাহলে তুমি অবশ্যই তোমার প্রভুকেও ক্রুদ্ধ , রাগন্বিত ও অসন্তুষ্ট করেছ ।
অতঃপর তাদের কাছে এসে হযরত আবু বকর বললেন : হে ভাই গণ ! আমি কি তোমাদেরকে ক্রুদ্ধ , রাগান্বিত ও অসন্তুষ্ট করেছি 
? তাঁরা বললেন : না , হে ভাই ! আল্লাহ তোমাকে ক্ষমা করুন ।


عن عائذ بن عمر و أن أبا سفیان أتیٰ علیٰ سلمان و صهیب و بلال في نفر ، فقالوا : وَاللّٰهِ ، مَا أَخَذَتْ سُیُوْفُ اللّٰهِ مِنْ عُنُقِ عَدُوِّ اللّٰهِ مَأْخَذَهَا . قَالَ أَبُوْبَکْرٍ : أَ تَقُوْلُوْنَ هٰذَا لِشَیْخِ قُرَیْشٍ وَ سَیِّدِهِمْ ؟  فَأَتَی النَّبِيَّ - ص- فَأَخْبَرَهُ . فَقَالَ : یَا أَبَا بَکْرٍ ، لَعَلَّکَ أَغْضَبْتَهُمْ . لَئِنْ أَغْضَبْتَهُمْ لَقَدْ أَغْضَبْتَ رَبَّکَ .
فَأَتَاهُمْ أَبُوْ بَکْرٍ فَقَالَ : يَا إِخْوَتَاه ، أَغْضَبْتُكُمْ ؟ قَالُوْا : لَا ، يَغْفِرُ اللّٰهُ لَكَ يَا أَخِيْ .

দ্র: সহীহ মুসলিম , হাদীস নং ৬৪৪১ পৃ : ৯৪৩ , সাহাবার ফাযায়েল সংক্রান্ত অধ্যায় , প্রকাশক : দার সাদির বৈরূত লেবানন , প্রথম সংস্করণ, ২০০৪ তাই দেখা যাচ্ছে যে আবূ সুফিয়ান ও বনী উমাইয়া ছিল মহান আল্লাহর শত্রু । কিন্তু হযরত আবূ বকর আবূ সুফিয়ানকে কুরাইশ গোত্র পতি ও নেতা ( সাইয়েদ ও শেখ ) অর্থাৎ অনেক বিরাট কিছু মনে করতেন এবং খলীফা হওয়ার পর তিনি এই খবীস বিষ বৃক্ষ বনী উমায়াকে ক্ষমতায় অংশী করেন আবূ সুফিয়ানের পুত্র ইয়াযীদকে দামেশকের শাসনকর্তার পদে অধিষ্ঠিত করে । হযরত আবূ বকর রাসূলুল্লাহর (সা) হাদীস বর্ণনা ও চর্চা নিষিদ্ধ করেন যা প্রায় এক শো বছর স্থায়ী হয়েছিল এবং সেই সুবাদে মিথ্যা, বিনোয়াট , জাল হাদীসের সয়লাব বয়ে গিয়েছিল মুসলিম বিশ্বে । আর এ অবস্থায় বনী উমাইয়া খিলাফত প্রশাসন হযরত আবূ তালিব সহ রাসূলুল্লাহর দাদা ও পিতা-মাতার মর্যাদা হরণকারী এবং তাদেরকে মুশরিক বলে পরিচিত কারী মিথ্যা জাল হাদিস তৈরি করে সমগ্র মুসলিম বিশ্বে ছড়িয়ে দিয়েছে।
এ ধরণের উল্টা পাল্টা ভ্রান্ত ধারণা ও বিশ্বাস উম্মতের মধ্যে ছড়িয়ে ও বিস্তৃত করে দিলে তো উম্মতের ধ্বংস অনিবার্য হবেই !!!
ইসলামী চিন্তাবিদ এবং গবেষক হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলেমিন মুহাম্মদ মুনীর হুসাইন খান

 

 

captcha