
ইকনা সূত্রে মিসরাওয়ির বরাতে জানা গেছে, মিশরের আসওয়ান অঞ্চলের এক নারী যিনি শিক্ষা থেকে বঞ্চিত ছিলেন, তিনি তাঁর প্রবল ইচ্ছাশক্তি ও নাতনির সহযোগিতায় নিরক্ষরতা কাটিয়ে কোরআন তিলাওয়াত করতে সক্ষম হন।
ফাতেমা আলী মোহাম্মদ নামের এই নারী মিশরের সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত “নিরক্ষরতাকে না বলুন, ঐক্যের পথে এগিয়ে চলুন” শীর্ষক একটি প্রকল্পে অংশগ্রহণ করেন। এই প্রকল্পে তিনি উল্লেখযোগ্য সাফল্যসহ সাক্ষরতা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন এবং তাঁর বহুদিনের স্বপ্ন পূরণ করেন।
ফাতেমার নাতনি আলা ইসাম জানান, ছোটবেলায় ফাতেমা তাঁর বাবাকে হারান, যার ফলে তাঁর শিক্ষা বন্ধ হয়ে যায়। তিনি দ্বিতীয় শ্রেণির মাঝামাঝি সময়ে স্কুল ছেড়ে দেন এবং পরিবারের ছোট মেয়ে হওয়ায় তাঁর ভাইবোনেরা তাঁর দেখাশোনা করতেন। এরপর তিনি অল্প বয়সে বিয়ে করেন এবং ৯ সন্তানের (৫ ছেলে, ৪ মেয়ে) জননী হন।
ফাতেমা নিজের শিক্ষা না থাকলেও সন্তানদের শিক্ষাদানের ব্যাপারে ছিলেন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তাঁর দুই মেয়ে শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজ থেকে স্নাতক হন এবং তৃতীয় মেয়ে পাঁচ বছর মেয়াদি শিক্ষকতা ডিপ্লোমা অর্জন করেন। বর্তমানে তারা সকলে বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন। তাঁর ছেলেরাও মাধ্যমিকে ভর্তি হয়ে বাণিজ্য ও কারিগরি ডিপ্লোমা অর্জন করেন, এবং এইভাবেই ফাতেমা তাঁর সন্তানদের শিক্ষিত করার স্বপ্ন পূরণ করেন।
আলা বলেন, সাক্ষরতা ক্লাসে ভর্তি হওয়ার পর ফাতেমা আবার কোরআন পড়ার স্বপ্ন স্মরণ করেন। তখন আলা তাঁকে বর্ণমালা ও সহজ কিছু শব্দ শেখানো শুরু করেন এবং পরবর্তীতে তাঁকে অন্যান্য শিক্ষার্থীদের ক্লাসে পাঠান। এভাবে প্রতিদিন একটু একটু করে ফাতেমা তাঁর নিরক্ষরতা থেকে মুক্তির পথে এগিয়ে যান, যতক্ষণ না তিনি পরীক্ষায় সফলভাবে উত্তীর্ণ হন।
আলা বলেন, তিনি দারুণ খুশি যে, তিনি তাঁর দাদির নিরক্ষরতা দূর করতে এবং কোরআন পড়ার স্বপ্ন পূরণে সহায়তা করতে পেরেছেন। এটাই তাঁর জন্য তাঁর দাদির পরিশ্রমের প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা ও প্রতিদান। 4296188#