
ইসরায়েলি মিডিয়ার তথ্য অনুযায়ী, ইয়েমেন থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রের জেরে জেরুজালেম, তেলআবিবসহ বিভিন্ন ইসরায়েলি শহরে সাইরেন বাজানো হয়েছে।
রিপোর্ট অনুযায়ী, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় মার্কিন তৈরি 'অ্যারো' ও 'থাড' পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়ে ওই ক্ষেপণাস্ত্রকে ভূপাতিত করা হয়েছে।
ইয়েমেনি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, যতদিন না গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যা বন্ধ হচ্ছে, ততদিন তারা দখলদার ইসরায়েলের জাহাজ এবং তাদের গন্তব্যে রওনা হওয়া জাহাজে হামলা অব্যাহত রাখবে।
যুক্তরাজ্যও ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর জাতিসংঘে ফিলিস্তিন স্বীকৃতির ঘোষণার কয়েকদিন পর, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার জানিয়েছেন, সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন শুরুর আগেই তার দেশ ফিলিস্তিনকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেবে— যদি ইসরায়েল গাজা পরিস্থিতি সমাধানে গঠনমূলক পদক্ষেপ না নেয়।
যুক্তরাজ্য সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়েছে: "যদি ইসরায়েল গাজায় যুদ্ধ বন্ধ না করে, পশ্চিম তীর দখলের পরিকল্পনা থেকে সরে না আসে এবং দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানে আন্তরিক প্রতিশ্রুতি না দেয়, তবে যুক্তরাজ্য সেপ্টেম্বর মাসেই ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে।"
স্টারমার আরও বলেন, যুক্তরাজ্য হামাসকে জিম্মিদের মুক্তি দিতে এবং যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হতে আহ্বান জানাচ্ছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান: সমর্থন নেই
এই ঘোষণার পরপরই, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, "আমরা ব্রিটেনের এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত নই।"
তিনি বলেন, "আমি এই সিদ্ধান্তে জড়িত ছিলাম না এবং এটা আমাদের অবস্থান নয়। স্টারমার ও ম্যাক্রোঁর অবস্থান এক হতে পারে, কিন্তু আমি তাদের সঙ্গে একমত নই।"
তিনি আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্র গাজা উপত্যকায় খাদ্য বিতরণে ইসরায়েলের সঙ্গে কাজ করবে।
"আমরা গাজার শিশুদের খাদ্য দিচ্ছি। মেলানিয়া (ট্রাম্পের স্ত্রী) মনে করেন গাজার পরিস্থিতি ভয়াবহ।"
ফ্রান্স: বসতি স্থাপনকারীদের সহিংসতা সন্ত্রাসবাদ
ফরাসি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপনকারী ইহুদিদের সহিংসতাকে তারা "সন্ত্রাসী কাজ" হিসেবে বিবেচনা করে।
তারা দাবি করে, ইসরায়েল সরকারকে দায়ীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
সম্প্রতি রামাল্লাহর কফর মালেক গ্রামে ১৫০ জন ইহুদি বসতি স্থাপনকারী ইসরায়েলি সেনাদের সঙ্গে মিলে আক্রমণ চালালে তিনজন ফিলিস্তিনি নিহত ও সাতজন গুরুতর আহত হন।
তারা ঘরবাড়ি ও গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং স্থানীয় জনগণের প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়।
আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলো ক্রমবর্ধমান এ ধরণের সহিংসতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
গাজার মানবিক পরিস্থিতি: জাতিসংঘের হুঁশিয়ারি
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, "গাজা এখন দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে।"
তিনি আরও বলেন: "ফিলিস্তিনিরা একটি মানবিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি। এটা কেবল সতর্কবার্তা নয়— এটা এখন বাস্তবতা।"
তিনি জানান, গাজায় ঢোকা সাহায্য এখন সমুদ্রে একফোঁটা জলের মতো। খাদ্য, পানি, ওষুধ এবং জ্বালানি কোনো বাধা ছাড়াই পৌঁছাতে দিতে হবে।
গুতেরেসের বক্তব্য এসেছে নিউ ইয়র্কে অনুষ্ঠিত দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানভিত্তিক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে, যা ফ্রান্স ও সৌদি আরবের উদ্যোগে গঠিত হয়েছে।
এই সম্মেলন দুই দিনব্যাপী চলবে এবং পরবর্তী ধাপ হবে সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘ অধিবেশনের সময়।
এই মুহূর্তে ফিলিস্তিন ইস্যুতে রাজনৈতিক, সামরিক ও মানবিক সব দিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাপ্রবাহ চলছে— যেখানে ইয়েমেনি প্রতিরোধ, ইউরোপীয় অবস্থান বদল, মার্কিন বিরোধিতা এবং গাজার দুর্ভিক্ষের বাস্তবতা একসঙ্গে ফিলিস্তিন সংকটকে আরও গভীর করে তুলেছে। 4297119#