মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, বিশেষ করে টেক্সাস এবং ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যে মসজিদে হামলার নতুন ধারা আমেরিকায় "ইসলামফোবিয়া"র উত্থানকে তুলে ধরছে।
ইকনার (আন্তর্জাতিক কুরআন সংবাদ সংস্থা) বরাত দিয়ে পার্স টুডে জানিয়েছে, কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশনস (CAIR) এর উপ-পরিচালক এডওয়ার্ড আহমেদ মিচেল আমেরিকান মুসলমানদের জন্য গত দুই বছরে নানা দুর্দশা ও অসুবিধার কথা তুলে ধরেছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন যে ছয় বছর বয়সী ফিলিস্তিনি-আমেরিকান মুসলিম শিশু বা বালক হত্যাসহ ঘৃণামূলক বিভিন্ন অপরাধ এই ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলেছে।
মসজিদে সাম্প্রতিক নানা হামলাগুলো যার মধ্যে দেয়ালে স্টার অফ ডেভিডের অনুরূপ প্রতীক আঁকা অন্তর্ভুক্ত-এসবকে ঘৃণামূলক অপরাধ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে এবং আমেরিকান-ইসলামিক সম্পর্ক কাউন্সিল নিরাপত্তা টহল ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়েছে।
.... কাজ চলছে
হিজাব এবং নাম: আমেরিকায় মুসলমানদের জন্য পেশাগত কাজে বাধা
আমেরিকাতে বৈচিত্র্য এবং সাংস্কৃতিক অন্তর্ভুক্তির গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি পেলেও, কর্মক্ষেত্রে ইসলামোফোবিয়ার ঘটনা বাড়ছে। আমেরিকান হিউম্যান রিসোর্সেস ম্যানেজমেন্ট ওয়েবসাইটের দেয়া রিপোর্ট অনুযায়ী কর্মক্ষেত্রে মুসলিম কর্মীরা ব্যাপক বৈষম্য, অপ্রকাশ্য বিদ্বেষ এবং এমনকি ধর্মীয় চাহিদার প্রতি অবহেলার সম্মুখীন হন।
মুসলিম কর্মীরা নাম, অতীত কর্ম-তৎপরতা বা চেহারা, যেমন হিজাবের কারণে চাকরির ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হতে পারেন। এই ধরণের আচরণের ফলে মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব ছাড়াও, চাকরির সুযোগ, পদোন্নতি এবং কর্মক্ষেত্রে কার্যকর অংশগ্রহণের অভাব দেখা দিতে পারে।
অস্ট্রেলিয়ায় ইসলামোফোবিক সহিংসতার প্রধান শিকার মুসলিম নারীরা
গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে অস্ট্রেলিয়ায় ইসলামোফোবিক ঘটনা বেশ ব্যাপক মাত্রায় বৃদ্ধি পেয়েছে।সেখানকার মুসলিম নারী ও মেয়েদেরকে উল্লেখযোগ্যভাবে লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে। অস্ট্রেলিয়ার এসবিএস নিউজ নেটওয়ার্ক জানিয়েছে যে গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে দেশটিতে ইসলামোফোবিয়া উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে; মুসলিম নারী ও মেয়েদেরকে উল্লেখযোগ্য মাত্রায় এ জাতীয় সহিংসতায় লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে। ইসলামোফোবিয়া রেজিস্টার অস্ট্রেলিয়ার নির্বাহী পরিচালক নোরা আমাত বলেন, এই ঘটনাগুলির শিকার প্রায় ৭৫ শতাংশই হলেন নারী এবং এ জাতীয় অপরাধী তৎপরতার বেশিরভাগ ঘটকই হল অমুসলিম পুরুষ।
গত মার্চ মাসে জানা গেছে, গত জানুয়ারী ২০২৩ থেকে নভেম্বর ২০২৪ এর মধ্যে সরাসরি উপস্থিত থেকে এবং অনলাইনে ইসলামোফোবিয়ার ৬০০ টিরও বেশি ঘটনা তদন্ত করা হয়েছিল। ফলাফলে দেখা গেছে যে মুসলিম মহিলারা, বিশেষ করে হিজাব পরা মহিলারা এইসব সহিংসতার প্রধান শিকার।
ইসলাম-আতঙ্ক বা ইসলাম-বিদ্বেষের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জরুরি:পাকিস্তান
এ প্রসঙ্গে, পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী মুহাম্মদ ইসহাক দার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সভায় ইসলামোফোবিয়া মোকাবেলায় তার দেশের অগ্রণী ভূমিকার উপর ভাষণ দেন এবং ঘোষণা করেছেন যে ১৫ মার্চকে "আন্তর্জাতিক ইসলামোফোবিয়া মোকাবেলা দিবস" হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে পাকিস্তানের ব্যাপক প্রচেষ্টা ও বিশ্বব্যাপী এ উদ্যোগের প্রতি ব্যাপক সমর্থন পাওয়ার সুবাদে। ইসহাকদার ইসলামোফোবিয়ার উদ্বেগজনক বৃদ্ধি মোকাবেলায় ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা তথা ওআইসির সদস্য দেশগুলো এবং জাতিসংঘের মধ্যে সহযোগিতা আরও গভীর করার আহ্বান জানান। তিনি এই ঘটনাকে "নৈতিক দিক থেকে পুরোপুির বা শতভাগ নিন্দনীয়" বলে অভিহিত করেন এবং জোর দিয়ে বলেন যে ধর্মীয় বিদ্বেষ জাতিসংঘ সনদের ভিত্তিকেই আঘাত করে। #পার্স টুডে