হিজবুল্লাহ লেবাননের মহাসচিব শেইখ নাঈম কাসেম শহীদ মোহাম্মদ সাঈদ ইযদীর (যিনি হাজী রমজান নামে পরিচিত) চেহলাম উপলক্ষে দেয়া বক্তব্যে বলেন: আমেরিকা লেবাননের সেই সামরিক শক্তিকে কেড়ে নিতে চায়, যার প্রতিফলন ঘটেছে প্রতিরোধের মাধ্যমে।
ইকনা নিউজ, আল-মানারের বরাতে জানিয়েছে: শেইখ নাঈম কাসেম বলেন, “শহীদ মোহাম্মদ সাঈদ ইযদী ফিলিস্তিনের জনগণের সেবা এবং এর মুক্তির জন্য এসেছিলেন। তিনি গাজার প্রতিরক্ষা পরিকল্পনা ও প্রতিরোধ আন্দোলনের বিকাশ তত্ত্বাবধান করতেন এবং ফিলিস্তিনে প্রতিরোধমূলক কর্মকাণ্ড বিস্তারে গভীর আগ্রহ দেখিয়েছেন। হাজী রমজান ফিলিস্তিনের জাতীয় ঐক্য কামনা করতেন।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের নেতাদের দৃষ্টিতে, ফিলিস্তিন একটি মানবিক ইস্যু, ভূখণ্ডগত নয়। অর্থাৎ, সকলের উচিত এটি সমর্থন করা। হাজী রমজান শহীদ সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহর শাহাদতের দুই দিন পর লেবাননে এসে নিজেকে হিজবুল্লাহর সেবায় নিয়োজিত করেন।”
বৈরুত বন্দরের বিস্ফোরণ
তিনি বলেন, “আমরা চাই, বৈরুত বন্দরের বিস্ফোরণ সংক্রান্ত তদন্ত নিরপেক্ষভাবে এবং রাজনৈতিক প্রভাবমুক্তভাবে সম্পন্ন হোক।”
লেবাননের ভবিষ্যৎ ও মার্কিন হস্তক্ষেপ
হিজবুল্লাহর মহাসচিব বলেন, “লেবানন গঠনের জন্য ও স্থিতিশীলতার জন্য জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে অংশগ্রহণ ও সহযোগিতা দরকার। আমাদের অবশ্যই লেবাননের বাস্তবতা অনুযায়ী অগ্রাধিকার নির্ধারণ করতে হবে এবং আমেরিকান বা অন্য কোনো দেশের আধিপত্যকে মেনে নেওয়া যাবে না।”
তিনি আরও জানান, “হিজবুল্লাহ সম্পূর্ণভাবে অস্ত্রবিরতি মেনে চলছে এবং কোনোভাবেই তা লঙ্ঘন করেনি বরং সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করেছে। অন্যদিকে, ইসরায়েল এই চুক্তি হাজার হাজারবার লঙ্ঘন করেছে। তারা এই চুক্তি মানে না, কারণ এটা হিজবুল্লাহকে লেবাননে শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত রাখে।”
মার্কিন চক্রান্ত ও বারাকের শর্ত
শেইখ কাসেম বলেন, “আমেরিকা এমন সব শর্ত দিয়েছে যার উদ্দেশ্য হলো লেবানন, প্রতিরোধ আন্দোলন এবং জনগণকে তাদের ক্ষমতা থেকে বঞ্চিত করা—যা ইসরায়েলের স্বার্থে।”
তিনি বলেন, “মার্কিন দূত বারাকের শর্ত অনুযায়ী হিজবুল্লাহর অবকাঠামোর ৫০% এক মাসের মধ্যে গুঁড়িয়ে দিতে হবে এবং ইসরায়েলের দক্ষিণ লেবাননের তিনটি এলাকা থেকে পিছু হটার ব্যাপারটি এর সঙ্গে যুক্ত।”
প্রতিরোধ ও অস্ত্র আত্মসমর্পণের বিপদ
তিনি দৃঢ়ভাবে বলেন, “আমরা কোনো নতুন চুক্তি মেনে নেব না। ইসরায়েলের হামলার ছকে বাধ্যতামূলক সময়সূচি আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। বিদেশি চাপের সামনে আত্মসমর্পণের বিনিময়ে আর্থিক সহায়তা যদি আমাদের দাস বানিয়ে ফেলে, তবে তার কোনো উপকার নেই।”
“ইসরায়েলের পক্ষে এখন বড় হামলা চালানো বুদ্ধিমানের কাজ হবে না, কারণ প্রতিরোধ, সেনাবাহিনী এবং জনগণ একসঙ্গে রক্ষা করবে, এবং আমাদের ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের ভেতরে আঘাত হানবে, তাদের যে নিরাপত্তা ছিল তা মাত্র এক ঘণ্টায় শেষ হয়ে যাবে।”
“আমরা যদি আমাদের অস্ত্র সমর্পণ করি, তবুও হামলা বন্ধ হবে না। এটি ইসরায়েলি কর্মকর্তারাই স্পষ্টভাবে স্বীকার ক
রেছে।” 4298473