ইকনা, আরবি২১ সূত্রে জানা গেছে, মন্ট্রিয়ালে এই হামলার ঘটনার ভিডিও ধারণ করে এক মুসলিম নারী তা ভুক্তভোগী ব্যক্তিকে সরবরাহ করেন, যা পরবর্তীতে পুলিশ তদন্তে সহায়তা করে এবং হামলাকারীকে দ্রুত গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়। ইহুদি সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে এই সাহসী নারীর ভূমিকার প্রশংসা করা হয়েছে।
তবে, ইসলামিক সোসাইটি অব কানাডা (ISC) এই ঘটনার প্রেক্ষিতে ইসলামবিদ্বেষ, ফিলিস্তিনপন্থীদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ও আরববিদ্বেষ বাড়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। সংগঠনটি বলেছে, যদিও পুলিশ এখনো হামলার মোটিভ প্রকাশ করেনি, তারপরও কিছু মহল এই ঘটনাকে রাজনৈতিক ও আদর্শগত স্বার্থে ব্যবহার করছে — যা উদ্বেগজনক।
পুলিশ ২৩ বছর বয়সী সার্জিও ইয়ানেস পার্সিয়াডো-কে অভিযুক্ত করেছে, যিনি ৮ আগস্ট মন্ট্রিয়ালের একটি পার্কে এক ইহুদি ব্যক্তির উপর হামলা চালান। অভিযোগ অনুযায়ী, হামলার সময় ভুক্তভোগী ব্যক্তি তার সন্তানদের সামনে মাটিতে পড়ে ছিলেন এবং অভিযুক্ত তাকে ঘুষি ও লাথি মারেন।
হামলার শিকার ব্যক্তি গুরুতর জখম না হলেও আহত অবস্থায় চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন।
অভিযুক্ত ব্যক্তির মানসিক অবস্থা যাচাই করার জন্য তাঁকে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের মূল্যায়নের আওতায় আনা হয়েছে এবং প্রয়োজনে তাঁকে বিচারের মুখোমুখি করা হবে।
হাসিদিক ইহুদি সম্প্রদায়ের একজন মুখপাত্র বলেন, "এই ভিডিও ধারণকারী নারী একজন মুসলিম। তিনি ভিডিওটি আক্রান্ত ব্যক্তিকে দিয়েছেন, যদিও তিনি গোপন থাকতে চেয়েছেন।"
এই মুখপাত্র আরও বলেন, “আমি মনে করি, সমাজ হিসেবে আমাদের এই কাজের প্রশংসা করা উচিত। কারণ এমন ঘটনা যদি নথিভুক্ত হয় ও বিশ্বের সঙ্গে শেয়ার করা যায়, তাহলে তা পরিবর্তন আনতে পারে।"
হাসিদিক ইহুদিরা সাধারণত সায়োনিস্ট নীতির বিরোধিতা করে এবং অনেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গাজা যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন।
ইসলামিক সোসাইটি অব কানাডা এই সহিংস হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেছে, “এ ধরনের কাজ আমাদের সমাজে কোনো স্থান পায় না এবং এগুলোকে নিঃশর্তভাবে প্রত্যাখ্যান করতে হবে।”
তবে সংগঠনটি আরও যোগ করে, “এই দুঃখজনক ঘটনার রাজনৈতিক অপব্যবহার, ইসলামীফোবিয়া, ফিলিস্তিনবিরোধী মনোভাব এবং আরববিদ্বেষ ছড়ানোর চেষ্টা অত্যন্ত উদ্বেগজনক – বিশেষ করে তখন, যখন এখনো পুলিশ ঘটনার প্রকৃত উদ্দেশ্য এবং হামলাকারীর পেছনে কারা আছে, তা প্রকাশ করেনি।”
সংগঠনটি সতর্ক করে বলেছে, এমন তড়িঘড়ি রাজনৈতিক ব্যাখ্যা জনসচেতনতা ও সামাজিক সম্প্রীতির জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।
এই ঘটনা একদিকে যেমন মুসলিম নারীর সাহসিকতার জন্য প্রশংসিত, অন্যদিকে তা সামাজিক সম্প্রীতি রক্ষার জন্য এক চ্যালেঞ্জ হিসেবেও সামনে এসেছে। তদন্ত এখনো চলমান, এবং পুলিশ হামলার মোটিভ জানায়নি। ۴۲۹۹۸۲۲#