সম্প্রতি খবরে প্রকাশ:
**নেতানিয়াহু সম্প্রতি বৃহত্তর ইসরাইল গঠনের কথা বলেছে। ইহুদীবাদী যায়নিস্ট ইসরাইলীরা মনে করে যে সমগ্র পশ্চিম এশিয়া অর্থাৎ মক্কা মদীনা হিজায সহ গোটা মধ্যপ্রাচ্যই হচ্ছে তাদের প্রতিশ্রুত ভূমি ও ভূখণ্ড (الآراضي الموعودة)!!!**
দেখুন:
Netanyahu provokes outcry by declaring affinity with vision of ‘Greater Israel’ | | AW https://share.google/CiOLhNdBhRsJlMsxB
Arab nations fume after Netanyahu says he feels connection to vision of Greater Israel | The Times of Israel
টাইমস অব ইসরাইল: নেতানিয়াহু অনুভব করে যে সে বৃহত্তর ইসরাইলের স্বপ্ন বা ভিশনের সাথে যুক্ত রয়েছে। - এ কথা বলার পর আরব জাতিগুলো ক্ষুব্ধ ও ক্রুদ্ধ হয়েছে।
https://share.google/YOGKOTIYJ2ASmfIAB
বৃহৎ ইসরাইল গঠনের স্বপ্ন বা ভিশনের সাথে নিজের ঝোঁক,সম্বন্ধ ও কুটুম্বিতার কথা ঘোষণা দিয়ে নেতানিয়াহু হট্টগোল ও হৈচৈ-এর উদ্রেক করেছে।
*******
এতদসংক্রান্ত কিছু কথা:
ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ প্রথমে ওসমানী (অটোম্যান) সাম্রাজ্যকে ভেঙে টুকরো টুকরো করে হিজায ও জাযীরাতুল আরবে ( আজকের সৌদি আরব) অতি সংকীর্ণমনা,কুপমণ্ডুপ,ওয়াহাবী-সালাফী-তাকফীরী সৌদি রাজবংশকে ক্ষমতায় বসিয়ে*(দ্রঃ The House of Saud,পৃ:৮০)
সৌদীদের মাধ্যমেই হিজায,জেদ্দা,তায়েফ,মক্কা-মদীনায় জান্নাতুল বাকী ও জান্নাতুল মুআল্লা গোরস্থান সহ ইসলাম, রাসূলুল্লাহ (সা),আহলুল বাইত (আ) ,সাহাবা ও তাবেয়ীদের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল ধর্মীয় ঐতিহাসিক চিহ্ন ও নিদর্শন ধ্বংস করিয়েছে ফালতু শিরক , বিদআত,মাযার-কবর পূজা এবং নগর ও শহর উন্নয়ন ও আধুনিকীকরণের ধূয়ো তুলে ও দোহাই দিয়ে। কিন্তু প্রাগৈসলামিক জাহিলী যুগ এমনকি প্রাগৈতিহাসিক যুগের সকল পুরাকীর্তি,চিহ্ন ও নিদর্শন এবং মদীনা,খায়বার,ফাদাক প্রভৃতি অঞ্চলে (অর্থাৎ হিজাযে) বিদ্যমান ইহুদীদের ঐতিহাসিক চিহ্ন ও নিদর্শনাদি অত্যন্ত চমকপ্রদভাবে সুসংরক্ষণ করে আসছে সৌদি সরকার ও প্রশাসন! (* দেখুন: আমার প্রণীত প্রবন্ধ:
সৌদি আরবের ওয়াহহাবী রাজতান্ত্রিক সরকার
আল্লাহর গজবে ধ্বংসপ্রাপ্ত পূর্ববর্তী জাতিসমূহ এবং পবিত্র মদীনা , খায়বর ও হিজাযে ইহুদীদের ঐতিহাসিক স্থান চমকপ্রদভাবে সুসংরক্ষণ করছে!!!
বুধবার ১৩ নভেম্বর ২০২৪ - ২০:৪৮
https://bn.hawzahnews.com/news/404346/)
এখন যখন ইসলামের সকল স্মৃতি চিহ্ন ও ঐতিহাসিক নিদর্শনাদি আর বিদ্যমান নেই এবং প্রাগৈসলামিক ও প্রাগৈতিহাসিক পৌত্তলিক জাহিলী যুগের কাফির মুশরিকদের স্মৃতি চিহ্ন ও পুরাকীর্তি এবং ইহুদীদের ঐতিহাসিক চিহ্ন ও নিদর্শনাদি সুসংরক্ষিত আছে তখন ইসরাইল ও নেতানিয়াহু মক্কা-মদীনা,তায়েফ,জেদ্দা ও হিজাযকে ইসলাম ও মুসলমানদের চেয়েও ইহুদীদের প্রাচীন আবাসভূমি বলে গণ্য ও দাবি করে নীল থেকে ফুরাত এবং ফিলিস্তিন থেকে পবিত্র মক্কা-মদীনা সহ হিজাযকে অন্তর্ভুক্ত করে বৃহত্তর ইসরাইল প্রতিষ্ঠা করার ঘোষণা দেবেই।আর ইসলাম , মহানবী (সা),আহলুল বাইত (আ),সাহাবা ও তাবেয়ীন অর্থাৎ ইসলামের প্রথম আদি শতাব্দী সমূহের সাথে সংশ্লিষ্ট ঐতিহাসিক ধর্মীয় স্মৃতিচিহ্ন ও নিদর্শনাদি ওয়াহহাবী সৌদী গোষ্ঠী কর্তৃক ধ্বংসের কারণে যেহেতু সেগুলো এখন আর বিদ্যমান নেই সেহেতু ইসরাইল ও নেতানিয়াহুর গ্রেটার (বৃহত্তর) ইসরাইল দাবির ক্ষেত্র ও পথ প্রস্তুত হয়ে গেছে।
[[সম্প্রতি (২ মে ২০২৫) প্রকাশিত আমার লিখিত বই "জান্নাতুল বাকী মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের প্রতীক"-এ (পৃ:৭১-৭৬) এ ব্যাপারে আলোচনা করা হয়েছে যে ১০০ বছর আগে ইসলামের সূতিকাগার হিজাযে ইসলাম, রাসূলুল্লাহ, আহলুল বাইত,সাহাবা এবং তাবেয়ীদের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল ঐতিহাসিক চিহ্ন ও নিদর্শন যেমন জান্নাতুল বাকী তাখরীব ও ধ্বংস আসলে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের নীলনকশা মোতাবেক করা হয়েছিল যাতে ভবিষ্যতে যায়নবাদী ইহুদী চক্র পবিত্র মক্কা-মদীনা ও হিজায ইহুদীদের বলে দাবি করতে পারে। কারণ ইসলামের স্মৃতি বিজড়িত সকল ঐতিহাসিক চিহ্ন ও নিদর্শন ধ্বংস করা হয়েছে এবং ইহুদীদের ঐতিহাসিক চিহ্ন ও নিদর্শন যেমন মদীনার নিকটে খায়বার দুর্গ চমকপ্রদ ভাবে সুসংরক্ষণ করা হচ্ছে সৌদি কর্তৃপক্ষ কর্তৃক!!!]]
এখন বিগত ২২ মাসের অধিক কাল ধরে গাযায় ইসরাইল ও নেতানিয়াহুর লাগাতার এত সব গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধের বিরুদ্ধে আরব দেশগুলোর সরকার সমূহ ও জনগণের নির্লিপ্ত ও নিস্পৃহ থাকা এবং ইসরাইলের বিরুদ্ধে গাযাবাসীদের সর্বাত্মক সাহায্য, সহযোগিতা ও পৃষ্ঠপোষকতা না করার দরূন ইসরাইল ও নেতানিয়াহু গ্রেটার (বৃহত্তর) ইসরাইল প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এত বড় কথা বলতে পারছে।
আসলে আলে সৌদ ( ক্ষমতাসীন ওয়াহহাবী সৌদী রাজবংশ) বিধর্মী ইহুদী-নাসারাদের যর্খরীদ (কেনা) বশংবদ গোলাম ও সেবাদাস। গ্রেটার (বৃহত্তর) ইসরাইল প্রতিষ্ঠা ও গঠনের পরিষেবা দিয়ে আসছে আলে সৌদ (সৌদী শাসক চক্র) বিগত ১০০ বছর ধরে। উত্তর আমেরিকায় ইসরাইলের জন্য ইহুদীবাদী যায়নিস্ট নেতা ও পেশাজীবীদের প্রশিক্ষণ দানকারী সংস্থা The Wexner Foundation আমাদের ঘরবাড়ী সমূহে ফেরা (Returning to our homes) নামক প্রতিবেদনে লিখেছে: "সম্ভবতঃ সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিস্মৃত জায়গা (site) হচ্ছে খাইবার যা সৌদি আরবের মদীনা নগরীর উত্তরে অবস্থিত একটি আকর্ষণীয় মরূদ্যান। ইসলামের একদম প্রথম যুগের এক কেন্দ্রীয় ও প্রধান যুদ্ধ ক্ষেত্র হওয়ার আগে আরবের এই প্রাচীন পাথর নির্মিত দুর্গটি ছিল ইহুদিদের জীবনের একটি প্রাচীন কেন্দ্র।আজ এর সুউচ্চ ও সুরক্ষিত ভবন সমূহ এবং অন্যান্য ধ্বংসাবশেষ সৌদি সরকার কর্তৃক চমকপ্রদ ভাবে সুসংরক্ষিত আছে।" ( The Wexner Foundation, https://www.wexnerfoundation.org/ returning to our homes)
Dennis A/Evi Lipkin প্রণীত Return to Mecca (মক্কায় ফেরা):Israel is returning to Mecca (ইসরাইল মক্কায় ফিরছে)।Let my people go so that they may circle me in the desert [আমার জনগণকে যেতে দাও যাতে তারা আমার চারপাশে তাওয়াফ (প্রদক্ষিণ) করে মরুভূমিতে। Amazon-এ এ বইটা বিক্রি হচ্ছে ১৩•৯৭ ডলারে।]
আমাদের ঘরবাড়ি সমূহে ফেরা এবং ইসরাইল পবিত্র মক্কায় ইসরাইল ফিরছে ইত্যাদির অর্থ হচ্ছে পবিত্র মক্কা সহ মধ্যপ্রাচ্যের সকল ভূভাগ জবরদখল করে সেখানে বৃহত্তর ইসরাইলের প্রতিষ্ঠা। কারণ,যায়নবাদী ইহুদীবাদীদের দাবি হচ্ছে যে পশ্চিম এশিয়া (মধ্যপ্রাচ্য) ও উত্তর আফ্রিকার এ সব দেশ ও স্থানে একসময় ইহুদীরা (বনী ইসরাইল) বসবাস করত। তাই আওয়ার হোমস (our homes) বলতে এ সব ভূখণ্ড ও দেশকেই বোঝানো হয়েছে!!
অতএব ইসলামের প্রকৃত দুশমন আসলে কারা?
আসলে এই ওয়াহাবী তাকফীরী সালাফী আলে সৌদ এবং প্রতিক্রিয়াশীল আরব ও মুসলিম নামধারী শাসক গোষ্ঠী হচ্ছে পাপিষ্ঠ,নরপিশাচ ও প্রকৃত মুনাফিক গোষ্ঠী যারা কুফর ও শিরক নিজেদের অন্তরে লুকিয়ে রেখেছে এবং ইহুদী নাসারার পাশাপাশি এরাও ইসলামের প্রকৃত দুশমন!!! আর তাই সঠিক খাঁটি সত্য ইসলামের দিকে প্রত্যাবর্তন এবং যায়নবাদী-ইহুদীবাদী ইসরাইলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ সংগ্রাম ও জিহাদে যোগদান ও অংশগ্রহণ ব্যতীত তাদের ( মুসলিম দেশগুলোর আরব-অনারব রাজন্য ও শাসকবর্গ) এ দুর্নাম ও কলঙ্ক কখনো ঘুচবে না।
গ্রেটার (বৃহত্তর) ইসরাইল যদি বাস্তবায়িত,গঠিত ও প্রতিষ্ঠিত হয় তাহলে এ সব আরব্য রাজা-বাদশাহ ও রাষ্ট্রপতি ও শাসকবর্গের কেমন দশা হবে?এরাই তো ইসরাইলকে এখনো গোপনে সাহায্য সহযোগিতা করছে গাযার বিরুদ্ধে যুদ্ধে।ইসরাইলের বর্বর আক্রমণ ও ধ্বংস যজ্ঞে গাযার মযলূম জনতার ৬২০০০ জন গণহত্যা ও প্রজন্ম হত্যার শিকার হয়ে শহীদ,১৪০০০এর অধিক নি:খোঁজ ও লক্ষাধিক আহত এবং গাযা সম্পূর্ণ ধ্বংস, বিরান ও বসবাসের অযোগ্য এবং গাযার জনগণের পক্ষে ও ইসরাইলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধে লেবাননে ৪-৫ হাজার ও ইয়ামানে ২-৩ হাজার শহীদ এবং ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের চাপিয়ে দেয়া ১২ দিনের যুদ্ধে ১০০০এর অধিক শহীদ এবং হাজার হাজার আহত।
গাযার ৯০%এর অধিক বাড়ীঘর ও সকল ধরনের অবকাঠামো ও স্থাপনা ধ্বংস করেছে দখলদার হানাদার আগ্রাসী ইসরাইলী সেনাবাহিনী এবং ইসরাইলের আরোপিত কঠোর অবরোধ ও নিষেধাজ্ঞায় গাযাবাসীগণ কৃত্রিম দুর্ভিক্ষ,তীব্র খাদ্যাভাব ও সংকটের মধ্যে ক্ষুধার্ত ও পিপাসার্ত।আর ক্ষুধা-তৃষ্ণায় ও ওষুধ সংকটে এবং গাযার স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ায় বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছে গাযাবাসীরা। এমনকি খাবার দেওয়ার নাম করে ক্ষুধার্ত তৃষ্ণার্ত গাযাবাসীদের জড় করে নির্বিচারে হত্যাও করছে ইসরাইল।আর এহেন তীব্র সংকটজনক পরিস্থিতি ও চরম ক্রান্তিকালেও মিসর,জর্দান, সৌদি আরব,আরব আমিরাত,কাতার,কুয়েত,বাহরাইন,সিরিয়া,তুরস্ক ইত্যাদির মতো প্রতিবেশী ও নিকটবর্তী আরব ও মুসলিম দেশগুলো কেবল মৌখিক নিন্দা করা ছাড়া আর কিছুই করছে না। কিন্তু উচিত ছিল ইসরাইলের এ চরম অন্যায়, যুদ্ধাপরাধ ও গণহত্যার প্রতিবাদে সকল আরব ও মুসলিম দেশগুলোর একযোগে একত্রে ইসরাইলের বিরুদ্ধে সশস্ত্র জিহাদ করা। অথচ এ সব তথাকথিত আরব ও মুসলিম দেশগুলোর সরকার ও জনগণ তা না করে শুধু নীরব দর্শকের ভূমিকাই পালন করছে এবং বেশ কিছু আরব ও মুসলিম দেশ এই ইসরাইলের সাথে প্রকাশ্যে ও গোপনে ব্যবসায় বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে এবং ইসরাইলকে সামরিক সাহায্য সহযোগিতাও প্রদান করছে। তাহলে যে ইসরাইল গাযায় বীর ফিলিস্তিনী যোদ্ধাদের সফল প্রতিরোধ যুদ্ধে এবং লেবাননের হিজবুল্লাহ ও ইয়ামানের হুথি-আনসারুল্লাহর আক্রমণে বিধ্বস্ত ও বেহাল এবং ১২ দিনের যুদ্ধে ইরানের হাতে চরম মার খেয়ে চোখে সর্ষে ফুল দেখছে ও দিগ্বিদিক জ্ঞান হারা এমতাবস্থায় সকল আরব ও মুসলিম দেশের সরকার ও জনগণ কর্তৃক উপযুক্ত সময়োপযোগী কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করার কারণে এই ছাগল-ভেড়া ও দুধেল গাই গরু সদৃশ আরব ও মুসলিম দেশগুলো জবরদখল করে গ্রেটার (বৃহত্তর) ইসরাইল প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজ করছে যায়নবাদী ইসরাইলী নেতৃবর্গ এবং নেতানিয়াহু যা স্বয়ং নেতানিয়াহু নিজেই ইসরাইলী সংবাদ মাধ্যমের সাথে সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে স্পষ্ট বলেছে। এরপরও মিসর,জর্দান,সৌদি,আরব আমিরাত ও কাতার এবং আরও কিছু মুসলিম দেশ কেবল নিন্দা করেছে নেতানিয়াহুর গ্রেটার ইসরাইল প্রতিষ্ঠার এই ঘোষণার।এখনও এরা কার্যকর কিছুই করছে না।এমতাবস্থায় মৃত্যু পথযাত্রী ইসরাইলকে বাঁচিয়ে এ সব আরব ও মুসলিম দেশ নিজেরাই গ্রেটার ইসরাইল গঠনে ইসরাইলী জান্তা ও যুদ্ধাপরাধী নেতানিয়াহু সরকারকে সাহায্য করবে এবং নিজেদের ভূখণ্ড নিজেরাই ইসরাইলের কাছে সোপর্দ করবে!!!! আর সেটা তারা করবেই না কেন?পশ্চিম এশিয়ার (মধ্যপ্রাচ্য) সবকটি আরব দেশেই যেমন:সৌদি আরব,জর্দান,ইরাক, সিরিয়া, কুয়েত, বাহরাইন,আরব আমিরাত,কাতার ও ওমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের অনেক সামরিক ঘাঁটি আছে যার অর্থ হচ্ছে যে এসব আরব দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বলতে কিছুই নেই এবং নামকে ওয়াস্তে স্বাধীন দেশ ও রাষ্ট্র।আসলে এ সব আরব দেশকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের রক্ষিতা ও আশ্রিত রাষ্ট্র ও দেশই বলা উচিত। এ সব দেশ কার্যতঃ বিধর্মী ইহুদী খ্রিষ্টানদের আধিপত্য ও কর্তৃত্ব কবুল করে নিয়েছে যা পুরোপুরি ইসলামী শরিয়ত,পবিত্র কুরআন ও মহানবীর (সাঃ) সুন্নাহর স্পষ্ট বিরোধী ও সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। মহানবী (সা) আরবোপদ্বীপে বিধর্মীদের সামরিক ঘাঁটি স্থাপন ও আধিপত্য বিস্তার তো দূরের কথা সেখান বসবাস করা নিষিদ্ধ করে সেখান থেকে বিধর্মীদের এমনকি ইহুদী খ্রীষ্টানদের বহিস্কার করারও নির্দেশ দিয়েছেন!অথচ নামধারী এ সব মুসলিম শাসক ও রাজন্যবর্গ মহানবীর (সাঃ) এ নির্দেশ বিরোধী পন্থা অবলম্বন করে মুসলিম উম্মাহর কেন্দ্রস্থল ও ইসলামের সূতিকাগার পশ্চিম এশিয়া (মধ্যপ্রাচ্য) বিধর্মী খ্রিষ্টান ও ইহুদীদের হাতে তুলে দিয়েছে। পশ্চিম এশিয়ার এ সব আরব দেশের অনেকগুলোই ( যেমন: জর্দান ,আরব আমিরাত, বাহরাইন ও কাতার) ইসরাইলের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেছে এবং বাদবাকি আরব দেশ (যেমন: সৌদি আরব) কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের পাঁয়তারা ও চেষ্টা করছে।
আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ,ব্রিটেন ও ইসরাইলের মধ্যে কার্যতঃ কোনো ফারাক (পার্থক্য) নেই এবং ইসরাইল হচ্ছে পশ্চিম এশিয়ায় (মধ্যপ্রাচ্য) পাশ্চাত্যের বিশেষ করে মার্কিন ও ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের সম্প্রসারণ বা সম্প্রসারিত অংশ ও রূপ। অতএব ইসরাইল হচ্ছে পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদের অবিচ্ছেদ্য অংশ।তাই মধ্যপ্রাচ্যের এ সব আরব দেশ ও ভূখণ্ড এখনই কার্যতঃ ইসরাইলেরও আধিপত্যাধীন।তবে বর্তমানে এ সব দেশ ও ভূখণ্ডের নাম পাল্টিয়ে সরাসরি গ্রেটার (বৃহত্তর) ইসরাইল নামকরণ ও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দানের পর্ব কেবল বাকি আছে। আর সম্প্রতি সেটা করারই ঘোষণা দিয়েছে নেতানিয়াহু।আবার এটায় নেতানিয়াহুর ব্যক্তিগত লাভ ও স্বার্থও আছে। এতে করে সে (নেতানিয়াহু) দুর্নীতির জন্য আদালতে বিচার ও জেলে যাওয়ার বিষয়টি ভালোভাবে এড়াতে পারবে। আর ইসরাইলের আদালতও হচ্ছে একটা ঠুনকো আদালত। নেতানিয়াহুর মতো দুর্নীতি বাজ ও দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তি কিভাবে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতাসীন হয়ে রাজত্ব ও দেশ শাসন করে?!!! আগেতো দুর্নীতির অভিযোগ থেকে মুক্ত হতে হবে এবং এরপর নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করতে হবে। তাই এ থেকে পাশ্চাত্য তথা ইসরাইলের গণতন্ত্রের প্রকৃত স্বরূপ ও বিচার ব্যবস্থার নিরপেক্ষ ও স্বাধীন হওয়ার আসল রহস্য উদঘাটিত হয়ে যায়।
তাই এখন প্রশ্ন হলো: ফিলিস্তিনীদের সাথে ঠিক যেমনটি করেছিল ইসরাইল ৭৭ বছর আগে ঠিক তেমনি এ সব আরব দেশের ৩০ কোটির অধিক জনগণকে কি হত্যা ও উচ্ছেদ করে নীল থেকে ফুরাত এবং অধিকৃত ফিলিস্তিন থেকে হিজায পর্যন্ত বিস্তীর্ণ ভূভাগ জবরদখল করে গ্রেটার ইসরাইল প্রতিষ্ঠা করতে যাচ্ছে নেতানিয়াহু?!!!! আরব ও মুসলিম দেশগুলোর-যাদের সিংহভাগই হচ্ছে সুন্নী মুসলমান-তাদের কি ন্যুনতম লজ্জা,শরম, কাণ্ডজ্ঞান,
জাত্যাভিমান বোধ,আত্মসম্মান বোধ,ঈমানী শক্তি ও জযবাও নেই কি ? নেতানিয়াহুর এই আস্ফালন ও দম্ভোক্তির সামনে তারা কিভাবে নিশ্চিন্ত ও নির্বিকার বসে রয়েছে ?!!
এই যদি আরব ও মুসলিম বিশ্বের বাস্তব অবস্থা ও চিত্র হয় তাহলে অদূর ভবিষ্যতে পবিত্র মক্কা-মদীনায় হজ্জ ব্রত পালন ও যিয়ারত করতে যাওয়ার জন্য ইসরাইলের অনুমতি ও ভিসা নিতে হবে মুসলমানদের।কারণ তখন পবিত্র মক্কা-মদীনা, বাগদাদ,দামেশক,কারবালা,কুফা ও নাজাফ ইত্যাদি সহ ইসলামের সকল পবিত্র স্থান থাকবে গ্রেটার ইসরাইলের অন্তর্ভুক্ত ও শাসনাধীন!!!!!
মুসলমানরা কি চায় যে এমন ঘোর দুর্দিন দিন তাদের দেখতে হবে অদূর ভবিষ্যতে?ইসরাইলের বিরুদ্ধে এবং ফিলিস্তিনীদের পক্ষে একমাত্র প্রতিরোধ সংগ্রাম ও জিহাদই মুসলমানদেরকে এমন ঘোর চরম দুর্দশা থেকে মুক্তি দিতে পারে?আর জিহাদ করা থেকে যদি মুসলিম উম্মাহ বিরত থাকে ও পালিয়ে বেড়ায় তাহলে গ্রেটার ইসরাইলের পদতলে তাদের নিগৃহীত ও পিষ্ঠ হতেই হবে। ইসলামের সূতিকাগার ইসলামী উম্মাহ ও মুসলিম বিশ্বের প্রাণকেন্দ্র পবিত্র মক্কা-মদীনা,হিজায ও আরবোপদ্বীপ ( জাযীরাতুল আরব) অর্থাৎ পশ্চিম এশিয়া (মধ্যপ্রাচ্য) জুড়ে গ্রেটার ইসরাইল প্রতিষ্ঠিত হলে ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর জন্য তখন অবশ্যই ফাতেহা পাঠ করতে হবে অর্থাৎ তখন কার্যতঃ ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর অস্তিত্বই আর বিদ্যমান থাকবে না। আর এটা অবশ্যই মুসলিম উম্মাহ কখনো চাইবে না। অতএব সচেতনতা, জাগরণ এবং ইসরাইলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ সংগ্রাম ও জিহাদ ব্যতীত আর কোনো গত্যন্তর নেই মুসলিম উম্মাহর।
ইসলামিক চিন্তাবিদ এবং গবেষক হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলেমিন মুহাম্মদ মুনীর হুসাইন খান,