IQNA

তিন দিনে ফ্রান্সে তিনটি মসজিদে হামলা

15:04 - September 05, 2025
সংবাদ: 3478009
ইকনা- ফ্রান্সে মাত্র তিন দিনের মধ্যে তিনটি মসজিদে হামলা দেশটিতে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগজনক ইসলামফোবিয়ার চিত্র তুলে ধরেছে।

ইকনা’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, সাওতুশ শিয়া ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, ফ্রান্সে ইসলামবিরোধী পদক্ষেপ ও ইসলামফোবিয়া আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

২০২৫ সালের ২৩ থেকে ২৫ আগস্টের মধ্যে মাত্র তিন দিনে মুলুজ, তুর ও মিয়ো শহরের তিনটি মসজিদ হামলার শিকার হয়েছে। এটি এমন এক উদ্বেগজনক প্রবণতা, যার বিষয়ে এর আগেই কর্মকর্তারা সতর্ক করেছিলেন।

২৩ আগস্ট, এক ব্যক্তি ছুরি হাতে ভোরের নামাজের সময় মুলুজ (হাউত-রাইন) শহরের একটি মসজিদে প্রবেশ করে কুরআনের কপি ছিঁড়ে ফেলে ও আসবাবপত্র ক্ষতিগ্রস্ত করে, ফলে নামাজরত মুসল্লিদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। যদিও হামলাকারী স্থানীয়ভাবে পরিচিত ছিল, মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যায় ভুগছিল এবং কেউ আহত হয়নি, তবে মুসল্লিদের উপর এর মানসিক প্রভাব গভীর ছিল।

পরদিন, তুরের কেন্দ্রীয় মসজিদ পাথর নিক্ষেপের মাধ্যমে হামলার শিকার হয় এবং এর একটি কাচের জানালা ভেঙে যায়। এই মসজিদ পূর্বেও বহুবার ভাঙচুরের শিকার হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে বেড়া উপড়ে ফেলা, বৈদ্যুতিক প্যানেল নষ্ট করা এবং চারপাশে আবর্জনা ফেলা। মসজিদ কর্তৃপক্ষ বামপন্থী দল ফ্রান্স আনবোদ্ধ (LFI)-এর সমর্থনে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়ের করেছে।

২৫ আগস্ট, আভেয়রন অঞ্চলের মিয়ো শহরের মসজিদের সম্মুখভাগে বর্ণবাদী স্লোগান লিখে ভাঙচুর করা হয়। এর প্রতিবাদে মুসলমানদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশের লক্ষ্যে একটি ধর্মীয় ও সামাজিক সমাবেশ আয়োজন করা হয়।

এই হামলাগুলো এমন সময়ে ঘটছে যখন ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে ইসলামফোবিক কর্মকাণ্ড ২০২৪ সালের একই সময়ের তুলনায় ৭৫ শতাংশ বেড়েছে।

মানবাধিকার সংগঠনগুলো সতর্ক করেছে যে ঘৃণামূলক বক্তব্যের স্বাভাবিকীকরণ হচ্ছে, যা কিছু রাজনৈতিক ও গণমাধ্যম মহল, বিশেষত চরম দক্ষিণপন্থীরা উসকে দিচ্ছে। তারা অভিবাসন ও ইসলামকে নির্বাচনী স্বার্থে অপব্যবহার করছে।

এই হামলাগুলোর গুরুত্ব সত্ত্বেও এগুলো প্রায়ই জাতীয় গণমাধ্যমে সামান্য কভারেজ পায়, রাজনৈতিকভাবে ব্যাপক নিন্দা হয় না এবং কার্যকর শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। এতে মুসলমানদের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতার অনুভূতি বেড়ে যাচ্ছে এবং সামাজিক সংহতি হুমকির মুখে পড়ছে।

যৌথ ইসলামি ও ধর্মীয় সংগঠনগুলো জোর দিয়ে বলেছে যে, এসব অপরাধের মোকাবিলা একই গুরুত্ব নিয়ে করতে হবে যেমনটি অন্য কোনো বর্ণবাদ বা ইহুদিবিদ্বেষের ক্ষেত্রে করা হয়। তারা উল্লেখ করেছে যে বিষয়টি শুধু ভাঙা দেয়াল নয়, বরং ইবাদতের স্বাধীনতা ও সহাবস্থানের মৌলিক নীতি সরাসরি হুমকির মুখে পড়েছে। 4303274#

 

captcha