আল-জাজিরা টেলিভিশনসহ বহু আরব গণমাধ্যম যেমন ঘটনাটিকে প্রচার করে, তেমনি ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ মিডিয়াগুলোও নেতানিয়াহুর বক্তব্য চলাকালে কূটনীতিকদের ওয়াকআউটকে গুরুত্বের সঙ্গে প্রচার করেছে। পার্সটুডের প্রতিবেদনে বলা হয়, এ পদক্ষেপ ছিল গাজায় তিন বছর ধরে চলা যুদ্ধ ও গণহত্যার বিরুদ্ধে একটি স্পষ্ট প্রতীকী প্রতিবাদ।
ইসরায়েলের চ্যানেল ১২ টেলিভিশন মন্তব্য করেছে, নেতানিয়াহুর বক্তব্য শুরু হতেই কূটনীতিকদের হল ত্যাগ করা বিশ্ববাসীর দৃষ্টিভঙ্গির পরিষ্কার প্রতিফলন। চ্যানেলটি বলেছে, "নেতানিয়াহুর ভাষণ শুরুর সময় উপস্থিত কয়েক ডজন কূটনীতিকের কক্ষ ত্যাগ করার অর্থ হল বিশ্বের তরফ থেকে আমাদের মুখের উপর থুতু দেওয়া।"
চ্যানেলটির তথ্যমতে, নেতানিয়াহুর বক্তৃতার সময় সভাকক্ষ প্রায় ফাঁকা হয়ে যায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে ইসরায়েলি প্রতিনিধিদল দাঁড়িয়ে হাততালি দিতে শুরু করে। একাধিক ইসরায়েলি মিডিয়া নেতানিয়াহুর বক্তব্যকে দুর্বল ও অগোছালো বলে সমালোচনা করেছে।
চ্যানেল ১৩-এর প্রতিবেদক পরিস্থিতিকে এভাবে বর্ণনা করেন: “নেতানিয়াহু বক্তব্য শুরু করতেই যখন কূটনীতিকরা বেরিয়ে গেলেন, এটি শুধু নেতানিয়াহুর মুখে নয়, বরং ইসরায়েলের মুখে থুতু ফেলার সমান।”
আল-জাজিরা “প্রায় খালি হলের সামনে নেতানিয়াহুর বক্তৃতা” শিরোনামে জানায়, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে অভিযুক্ত নেতানিয়াহুর এ বক্তব্য ইসরায়েলি মিডিয়ায় সমালোচিত হয়েছে। একই সময়ে জাতিসংঘ সদরদপ্তরের বাইরে কিছু ইসরায়েলি বন্দির পরিবার বিক্ষোভ করে।
অন্যদিকে একই স্থানে ফিলিস্তিনপন্থি সমাবেশও হয়, যেখানে বিক্ষোভকারীরা ফিলিস্তিনের পতাকা হাতে নিয়ে গাজায় যুদ্ধ ও গণহত্যার বিরোধিতা জানায় এবং যুদ্ধের অবসান দাবি করে।
আল-কুদস আল-আরাবি পত্রিকা লিখেছে, ইসরায়েল বিরোধীরা জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে নেতানিয়াহুর বক্তৃতাকে ‘পুরোনো প্রতারণা’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে, যা ইসরায়েলের পরিস্থিতিকে আরও জটিল করেছে। তাদের মতে, বক্তৃতাটি ছিল কেবল একজন দলের প্রধানের বক্তব্য, কোনো দায়িত্বশীল প্রধানমন্ত্রীর নয়।
হিব্রু ভাষার দৈনিক ইদিয়োত আহারনোত স্বীকার করেছে, নেতানিয়াহুর বক্তৃতা শুরুর সময় বিশ্বনেতাদের হল ত্যাগ করা স্পষ্টত প্রমাণ করেছে যে, আজকের দিনে ইসরায়েল কতটা বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন।
শুক্রবার রাতে নেতানিয়াহুর বক্তব্য শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বহু দেশের নেতা ও প্রতিনিধি তাকে বিদ্রূপ করেন এবং শোরগোলের মধ্যেই তার বক্তৃতা শুরু হয়। সভাকক্ষে একে একে নেতারা বেরিয়ে যেতে থাকেন।
ইসরায়েলি সাংবাদিক বারাক রাভিদ (অ্যাক্সিওস ওয়েবসাইট) নেতানিয়াহুর বক্তব্য চলাকালে নেতাদের বেরিয়ে যাওয়ার ছবি প্রকাশ করে লেখেন: “জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের হল এখন প্রায় খালি।”#
পার্সটুডে